আক্ষেপঅনুরাগ – মিথিল ভট্টাচার্য্য

গ্রিলে হাত রেখে এক দৃষ্টিতে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে তানিয়া, দোতলার এই ছোট্ট বারান্দাটাই আজ তার বাইরের জগতের সাথে সংযোগের একমাত্র দোর। দুই বছর আগের সেই কালো দিনটার পর আজ তার গোটা দুনিয়াটাই সীমিত হয়ে থেকে গেছে এই ছোট্ট গণ্ডিটার মধ্যে। আর এই জগতে তার মুক্তির এতটুকু খোলা পথ শুধু এই ছোট্ট বারান্দাটা। একটু একটু করে…

প্রেমিকাদের বলছি না – সেলিম মণ্ডল

১ প্রেমিকা ছাড়া অনস্তিত্বের স্বর্গে কেটে যাচ্ছে ভালোই। তবুও যখন উঁকি মেরে দেখি প্রেমিকার মতো বান্ধবীরা একে একে শীতবস্ত্র জড়িয়ে নিচ্ছে। মনে হয়, এ জীবনে আমার আর ভ্রমণ হবে না।   ২ যে শহরে শীতকাল নেই, সেই শহরে ছড়িয়ে আছে আমার প্রেমিকারা। নকশি-কাঁথার ভিতর উষ্ণতা বাড়াতে বাড়াতে ভুলেই গেছি মায়ের ছুঁচে ফোটা আঙুলের কথা। যে আঙুলে মা প্রেমিকার…

চুপ কথা – অনিন্দিতা সেন

চুপ কথা যত গল্প হয়ে ছড়াক কথার মেঘ, মেঘালয়া কথারা চলে দিনের পিছে পিছে, মোহ জড়ানো আবেশ দ্যাখে নির্ভার সে আবেগ আমার আমিকে হারাই যখন ধূপছায়ারই বাঁকে! মনে রাখা সেই রূপকথারই সম্মোহনের ডাক, সব ফেলে দিয়ে ছূট্টে আসা…… বাঁশিওয়ালার হাঁক, উপেক্ষিত আদর তখন জানালার ফাঁকে ফাঁকে হৃদয় যেভাবে বুক পেতে দেয়….. নিরলস ছবি আঁকে।

ফলসা রঙের বউ – অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

ফলসা রঙের বউ – অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

আমাদের বন্ধু জহরলাল ধাড়া খুব যাত্রা ভালোবাসে। কলেজে পড়ার সময় আমরা বইমেলাতে গিটার নিয়ে গান করেছি। কিন্তু জহর সে সবে কোন মজা খুঁজে পায় না। সে বইমেলাতেই যাত্রাপালা করতে চায়। কলেজ শেষ করে জহর প্রাইমারি ইস্কুলে মাস্টারি পেল। ইস্কুলের গ্রামে সে কিছু যাত্রা অনুগত মানুষ খুঁজে পেয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ইস্কুলের হেডমাস্টার নলিনীবাবু। জহরকে পেয়ে…

প্রবাসী বন্ধুকে লেখা চিঠি – পিনাকী চট্টোপাধ্যায়

সে দেশে কাশ নেই, নেই ছাতিম গন্ধ দিন আছে পরিযায়ী মন, একলা উদাসীন। সে দেশে শরৎ নেই, তবুও শারদীয়া দু’চারটে পুজো সংখ্যা, সাথে নস্টালজিয়া। তোমার মতই আছে আরও এমন কিছু লোক আগমনী সুরে সুরে প্রবাস ও কলকাতা হোক। তোমার অঞ্জলি হোক বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে পুজোয় সন্ধি করি চেনা পলে বাঁধা গতে। উৎসবের গন্ডি নেই, স্কাইপে…

হলুদ গাঁদার ফুল – তুলসীদাস ভট্টাচার্য

সবুজ ছায়ার নীচে হলুদ পৃথিবী দেখিনি তো আগে কোথাও হলুদ বৈভবে চাঁদও সরে গেছে পৃথিবী থেকে অনেক দূরে একাকীত্বের জালে বেঁধে রাখা সময় দীর্ঘায়িত হতে হতে হলুদ গাঁদা ফুলে জমা রাখি বেদনার বীজ ।

প্রেমিক কাকে বলে – সুদীপ্ত সেন

ঠিক কতটা ভাঙলে পরে আমি প্রেমিক হবো তোমার, কতখানি ঠোঁট ছোঁয়ানো খুব জরুরি দরকার? ঠিক কতখানি জানলে তোমায়, আমি প্রেমিক ভাববো নিজেকে আমি কি আদৌ প্রেমিক নাকি সন্দেহটা ফিকে। তোমার ক-খানা লিপস্টিক, ক-টা জুতো, কখন সকাল হয় আমি জানিনা কিছুই তুমিই তো বলেছো, প্রতিদিন ফোন করার দরকার নেই, জানো আমার বান্ধবী অদিতি, ওকেও আমি প্রতিদিন…

শববাহকের দল – আশিস ভৌমিক

শববাহকেরা চিরকাল শব বয়ে বেড়ায় তারা জানে সব লাশ চরিত্রগত ভাবে এক কেবল রং বদলায় বয়স বদলায় জাত বদলায় । তার পর রোদ জল বৃষ্টিতে ফুলে ফেঁপে ঢোল । পাশে পাশে হাঁটে বেতাল ; খোশগল্প করে, মন্ত্রণা দেয়, দিন বদলের স্বপ্ন দেখায় কাঁধ বদলের মাঝে দু-এক ছিলিম গাঁজাও ধরিয়ে দেয় ! লাশের ভার বাড়ে ।…

চেনা শব্দ অচেনা শূন্য – রঞ্জন ভট্টাচার্য

সকাল বেলায় আবার পা-টা মচকালো তবুও আমার ঘুমটা কেন ভাঙছে না একোন ছাত্রী যাকে তুমি প্রবোধ দাও সে-তো তোমার কোনো কথাই শুনছে না তোমার আকাশ ঈশ্বরময় সর্বদা প্রসাদ-টসাদ খাচ্ছো আবার ছড়াচ্ছো মাইক দিয়ে নামগান আর অত্যাচার বন্ধ পড়া পাশের বাড়ির ছোট্টোটার কেইবা তোমার ভক্তিবোধের হিসেব চায় এসব কথা বলতে নাইকো দুম করে প্রশ্ন করো কবিকে…

একটা বাসের টিকিট – রিমি মুৎসুদ্দি

বাসটা এত জোরে চলছে যে বাসে দাঁড়িয়ে থাকা প্যাসেঞ্জাররা টাল সামলাতে পারছে না। কেউ বা হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। কেউ কেউ কোনোমতে হ্যাণ্ডেল চেপে ধরে টাল সামলাচ্ছে। সীটে বসে থাকা মানুষগুলোও খুব স্বস্তিতে নেই। কোনমতে চেপে বসে আছে। খালি মনে হচ্ছে এই বুঝি পড়ে যায়। একই রুটের দুটো বাসের মধ্যে রেষারেষির জেরে বাসের…