পুজোর সিনেমা, আহ্ এবং ধুস্ – সম্রাট মুখোপাধ্যায়

পুজোর সিনেমা, আহ্ এবং ধুস্ – সম্রাট মুখোপাধ্যায়

প্রথম পরকীয়া মেয়েদের গোপন ‘পরকীয়া’ ব্যাপারটা ঠিক কীরকম, তা বুঝে গিয়েছিলাম বেশ শৈশবেই। আর আমার এই ‘অকালপক্কতা’র জন্য যদি কেউ দায়ী থাকেন, তবে তিনি ছিলেন আর কেউ নন।স্বয়ং উত্তমকুমার। তাঁর নামটা বলার সময় মহিলাদের চোখে কেমন ঝিলিক মেরে ওঠে, তা তো দেখতামই, গলার স্বরগুলোই বদলে যেত। কিন্তু তার থেকেও তীব্র দেখেছি, তাদের ছুটে যাওয়া। উত্তমকে…

এনিউমা এলিশের শেষ পৃষ্ঠা – বল্লরী সেন
|

এনিউমা এলিশের শেষ পৃষ্ঠা – বল্লরী সেন

জিয়াভরলি নদী, দেবীসূক্ত॥ দ্বাদশ অধ্যায় ইতালীয় লেখক ও দার্শনিক জর্জো আগাম্বেন যখন সেই স্বর্গীয় উদ্যানের কথা লিখছেন, আমার ইজেলে পুব পাহাড়ের রোদ ফিরোজা হয়ে সৌরমণ্ডলের ফ্রেম ছিঁড়ে টুপ্ টাপ্ নামছে তেরচা হয়ে বৃষ্ণিবংশের চত্বরে, আমি শ্রুতিতে পাচ্ছি শ্রদ্ধা কামায়নীকে—ধারণ করছি রাত্রিসূক্ত। কুন্তীর হাতে কাটা মাংসের মতো সযত্ন টুকরো হয়ে হয়ে আমি বায়ু, অর্থ, শ্লেষ, রোমাঞ্চ,…

অন্ধ তিমির – এণাক্ষী রায়

অন্ধ তিমির – এণাক্ষী রায়

স্পষ্ট একটি মুখ। থুতনির ডানদিকে একটা উঁচু মতো তিল। সাদা মলিন শাড়ি পরে, এলোমেলো রুক্ষ কাঁচা-পাকা চুলে মাথায় আধ-ঘোমটা দিয়ে স্বপ্নে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন করুণা মাসিমা।  করুণা মাসিমা বলছিলেন নিজের কথা। বলতে বলতে ইস্কুলবেলায় খেলাধুলার কথাও বলছিলেন। উদাস স্বরে করুণামাসিমা বলছিলেন – অন্ধ তো সবাই। অন্ধকারের ভেতর আলোর আসা-যাওয়ার একটা পাতলা প্রলেপ লেগে থাকে। লালচে একটা…

বিবর্ণ হ্যাটের নিচে লুকিয়ে ছিল হর্সরাইডারদের ছায়ারং – উদয় শংকর দুর্জয়

বিবর্ণ হ্যাটের নিচে লুকিয়ে ছিল হর্সরাইডারদের ছায়ারং – উদয় শংকর দুর্জয়

প্রিয় দেবীদক্ষিণ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে লিখছি।   এর আগে তোমাকে এমন অবিশ্রান্তভাবে লিখিনি, এমন করে তোমাকে পোড়াইনি আগুনে। আমারও কি পুড়তে ইচ্ছে করে বলো! কিন্তু সেই আক্রান্ত কবিতাগুলো আর কিছুতেই পালিয়ে গেলো না, ঘাপটি মেরে বসে রইল আমার অজানা কোষের ঘরে। তোমাকে বলেছিলাম মনে আছে, চলো অন্ধ হয়ে যাই, অন্ধ হয়ে যাওয়ার আনন্দই আলাদা!…

অমোঘ জ্যোৎস্না – রত্না
|

অমোঘ জ্যোৎস্না – রত্না

বাদাবনের কাছাকাছি আসা এই আমার প্রথম। বাদাবন বলতে এদিকে যোগেশগঞ্জ, উল্টো পিঠে নদী পেরিয়ে ঝিঙেখালি। সুন্দরী, গরাণ, গেওয়া, হেতালের জংগল। নেই, নেই করে তিনটে মাস থাকবো। যোগেশগঞ্জ বাজারে তিনতলা উঁচু সমান community হল তৈরি হচ্ছে। আমাকে হীরেন কাকার সাথে সিমেন্ট, বালির তদারকি আর সেই সাথে পাহারাদারের কাজ। ভোর ছয়টার ভুটভুটিতে ধামখালি থেকে ইট,সিমেন্ট আসে। আমাকে…

|

অদ্ভুত আঁধার এক… – রেহান কৌশিক

পৃথিবীর জনতা তিন শ্রেণির। একদল ক্ষমতালোভী। যারা পৃথিবীর জল-মাটি-হাওয়ায় দখলদারি কায়েমের লক্ষ্যে বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। আরেক দল হল সাধারণ জনতা। গতানুগতিক সময় ও জীবনকে মেনে নিয়ে হেঁটে চলে। শোষিত হয়। কখনো অপেক্ষা করে পরিত্রাণের। কেউ যদি মুক্তির পথ দেখায়, তাকে সঙ্গ দেয়। নিজে থেকে পরিত্রাণের পথ আবিস্কার করতে পারে না। তৃতীয় দল হল বিপ্লবী। সমাজের…

স্মরণ – রুখসানা কাজল

আমি তোমার পায়ের কাছে বসে ছিলাম। স্বচ্ছ মশারি, তার ওপারে হালকা হলুদ দেয়াল । ডিম আলোয় ফ্যাটফ্যাট করছে শিল্পী শাহাবুদ্দীনের আঁকা স্বাধীনতা ছবির ডুপ্লিকেট কপি। বিবর্ণ অসুখী রাতে, দোলচেয়ারে বসে বসে টেবিল ল্যাম্প থেকে ছিটকে পড়া আলোতে ওই কাঁদুনে হলুদ ওয়াল দেখে ভাবতাম শিল্পী ভ্যান গঘ কী খেয়ে এই হলুদ রঙকে প্রিয় রং হিসেবে বেছে…

গল্পকথা – আত্রেয়ী দাস

এটা একসময়ের গল্পকথা। আমাদের চলমান জীবন থেকে সরে যাওয়া অনেক ঘটনাই আজ গল্পকথা হয়েই থেকে যাবে। তবে পক্ষে বিপক্ষের নানান তর্ক মূলত বাঙালির আড্ডায় থাকাটা এক পরম্পরা। গল্পগুলো শুধুই গল্প নয়। এই গল্পকথার হাত ধরেই সময়ের স্রোতে আধুনিকতার চাপে উবে যায় নানা জীবন-সংস্কৃতির গল্পকথা। আমরা যে মফস্বলের জীবনের ছোঁয়ায় নিজেদের বড় করে টিকিয়ে রেখেছি, সেখানে…

অধুনা পণ্যায়িত নাগরিক নিবারণ চক্কোত্তিদেরকে লেখা খোলা চিঠি – সুমন চক্রবর্তী

এমনটাই কি কথা ছিল নিবারণ বাবু? তুমিই না একদিন চেয়ে ছিলে এক-একটা কবিতা যেন ফিরিয়ে আনে সুতানুটি-গোবিন্দপুরের রাত্রিকে … তোমারই না দাবী ছিল কবিতারাশি যেন অকস্মাৎ ঠেলে দেয় ময়দানের সবুজ গালিচাকে গঙ্গাসাগরের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাত্রি-বোঝাই নৌকার দিকে? তোমার কবিতারই না কথা ছিল নিয়তির কণ্ঠস্বর হওয়ার ঝড়ের ভিতরে … তোমার কবিতারই না কথা ছিল বিষাক্ত…

দুষ্টু রাক্ষসের চিঠি – রেহান কৌশিক

দুষ্টু রাক্ষসের চিঠি – রেহান কৌশিক

কাঠগড়া ছিল না। ছিল না মাইনাস পাওয়ারের কাচে ঢাকা জজ সাহেবের চোখ। অথবা চ্যাপলিনের মতো গোঁফ-ওয়ালা উকিলদের রক্তাক্ত-করা-সওয়াল। আমাদের বিচ্ছেদ মুহূর্তে সাক্ষ্মী ছিল সরল সেগুনের বন। পাশে শীতকালের নদী। জলহীন চরে ইতস্তত ছড়িয়ে থাকা নুড়ি ও পাথর। তুমি বলেছিলে, ‘শেষ।’ আমি বলেছিলাম, ‘বেশ তবে তাই হোক।’ তুমি বলেছিলে, ‘দরজা খুলে দাও, যাই…’ আমি বলেছিলাম, ‘ঘরে…