শায়েরী চক্রবর্তীর পাঁচটি কবিতা

শেয়ার করুন

ঈশ্বরী

নক্ষত্র দহনে অনুশোচনা উল্লাস হয়ে ওঠে
যে দেবীর কাছে হাত পাতলে রাত পাওয়া যায়
সে কোনো মানবী
দেহ জুড়ে যার গোলাপি আয়োজন

মিহি সন্ধের গায়ে জং ধরেছে
ধ্বংসের ভেতরেও শোনা যায় শঙ্খের সুর
পেরোনো আলপথে
যদি শুশ্রূষার বিষ ঢেলে যায় কেউ… কোনো দেবী

ক্ষয়িত চেতনার পঙ্‌ক্তি

পথ হারিয়ে জন্মের প্রলাপ যাপনে
এ গলি সে গলি থেকে ভেসে আসছে
ক্ষয়িত চেতনার পঙ্‌ক্তি
একটা নিখুঁত জীবন উপভোগের আশায়
কতবার ভেঙেছি শিকারির ডানা
ভিখিরিকে করেছি নিস্পৃহ
স্তবকে শূন্য মুখ, প্রতিবেশী ডাক

দীর্ঘ চেতনাকাল পারদের ভারে লাল হয়ে আসে
বোধেরও অসুখ হয়
সময়ের অন্তিম মোহ নির্বোধে কাটে
কাটে আশ্চর্যে…

স্বীকারোক্তি

লিখতে পারছি না
সূর্যের পেট চিরে খুঁজে আনছি অক্ষরকণা
সাদা খাতার মধ্যে ঢুকে পড়ে
রান্নাঘর, বাসনপত্র, পোষ্য বেড়াল
এমনকি, বাবা মা’র ভেতো মন

যদিও, আমার চাই একটা শরীর
মাটির বিষাদ মাখা শরীর
লাগামছাড়া কলম চালাব সেখানে
ক্ষতবিক্ষত করব

এসব থামবে তখনই
যখন একটা ব্যর্থতার ধুলোঝড় এসে
আমার চোখজোড়া অন্ধ করে দেবে

দুর্লভ

একা এবং বধির পাড়াটি
অপেক্ষা কোনো প্রাচীন প্রেমিকের
ম্যাজিক খুঁজতে গিয়ে যে হারিয়েছে ফানুসের ভেতর
এখন নদীর দিন
নষ্ট হাওয়ার গায়ে বাসা বাঁধে নিখোঁজ চড়াই

বাঁশিতে বিছোনো জাল
বাসনা জেনেছে তাকে গণিকার মন
শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো ঋতু পালটাচ্ছে
কেউ তো বলল না,
কত মেঘ বয়ে গেলে প্রেমিক প্রাচীন হতে পারে!

আয়োজন

দেখেছি স্নানের পাশে
রাখা আছে মায়া-প্রসাধনী
তাকে গুঁড়ো করে সুশ্রীজন্ম দাও
এই যে জ্বরার দিন
বেঁচে আছে প্রেয়সীস্পর্শে
আহত ব্যাধের মতো

একাটি শালের বন
চাঁদের মাসে উপাসনা আলো এসে পড়ে
প্রিয় পথ, বুকে ধরে রাখো
প্রেয়সীর বিষাদের রং…

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *