কাদম্বরী – আর্যতীর্থ
সব আগুনের একটা চকমকি লাগে।
সে তুষের ধিকিধিকিই হোক, বা দাবানলের দাউ দাউ।
কে জ্বলে ছাই হবে, আর কে হবে চিরদীপ্যমান,
সেই দহনের বিস্তারের বহু আগে, অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে চকমকিদের গল্প।
ইতিহাস সাক্ষী, চিরভাস্বর রবিরও একজন কাদম্বরীর প্রয়োজন হয়েছিলো।
সব সোনার একটা কষ্টিপাথর লাগে।
যাতে ঘষে দেখতে হয়, আর কত পুড়ে গেলে নিখাদ সোনা পাওয়া যাবে।
নিজেকে সোনা ভাবার লোকের অভাব নেই,
কিন্তু কষ্টিপাথরের পরখ বিনা সেই দাবী অবান্তর।
আবার কত সোনা নিজেকে পিতল ভেবে হাটে বাজারে সস্তা বাসন হয়ে পড়ে আছে,
কোনো কষ্টিপাথর তাদের কানে কানে বলেনি,
‘ একটু ঘষেমেজে নাও , তোমার ঔজ্বল্য আকাশ ছুঁতে পারে।’
আশিরনখর যাঁর সোনা দিয়ে মোড়া, সেই কবির রাজাকে যাচাই করে দিয়েছিলেন এক অন্তঃপুরচারিণী। কাদম্বরী।
সব সূর্যেরই উদয়ের পথে ঊষাকে প্রয়োজন।
যে তার সব দ্বিধাকে কাটিয়ে দিয়ে বলবে, ‘যাও, গোটা আকাশ তোমার অপেক্ষায়’
প্রথম আলোকে যে বলবে, ‘শোনো, একদিন এ আলো সমস্ত আঁধার ঘুচাবে,
বন্ধ জানলার চিলতে ফাটলের ফাঁক দিয়ে আলোকিত করবে সব অন্তঃপুর,
তোমার আলোতে মানুষ নিজেকে চিনবে, তুমি শুধু নিজের তেজে জ্বলে ওঠো, রবি।’
কাদম্বরী।।কবির প্রথম কিরণের সাক্ষী। রবির ঊষা।