এসি চালান, প্লিজ – “সি” অনুবাদ: তপন মহন্ত
[লেখক পরিচিতি: পরওয়ানা ফাইয়াজ: কবি, গল্পকার, অনুবাদক। জন্ম আফগানিস্তানের কাবুলে, ১৯৯০ সালে। সাত থেকে ষোল বছর বয়স পর্যন্ত তাঁর পাকিস্তানের কোয়েটায় বসবাস। কাবুলে ফিরতে সক্ষম হলে সেখানেই হাইস্কুল শেষ করেন। বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কলেজ জীবন। ২০১২ সালে, সে স্ট্যানফোর্ডে স্থানান্তরিত হন, যেখানে তিনি বিএ পাশ করেন, তুলনামূলক সাহিত্যে মেজর এবং ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ে মাইনর নিয়ে। ধর্মীয় অধ্যয়নে এমএ। ২০১৬ সালে, তিনি ফার্সি স্টাডিজ-এ পিএইচডি করার জন্য কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে চলে যান। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ ফর্টি নেমস। বর্তমান গল্পটি আফগানিস্তানের “দারি” ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুদিত। আফগান মহিলারা ছদ্মনামে লিখে থাকেন। সত্যি বলতে কী, তাঁরা ঠিক ছদ্মনামও ব্যবহার করেন না। উল্লেখ করেন ইংরেজি বর্ণমালার এ, বি, সি ও ডি। বর্তমান গল্পকারের নাম হিসেবে লেখা আছে “সি”। ]
“স্যার, দয়া করে এয়ার কন্ডিশনার চালু করুন।”
সে যদি উঁচু স্বরে এই কথা বলে, আশেপাশের সবাই তাকে বকাঝকা করবে। অথবা বছরের এই ঠান্ডা সময়ে আবহাওয়া কতটা গরম তা নিয়ে তারা তাকে উপহাস করবে। তারা এতেই খুশি যে গাড়িতে জায়গা কম এবং তাদের একে অপরের সাথে গাদাগাদি হয়ে বসতে হচ্ছে। যানবাহনের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ট্রাফিকের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। সে ঘেমে ওঠে। তার ঘাড়ের পেছনে আর সারা শরীরে প্যাচপ্যাচে উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে। যখন একটি ইঁট ভর্তি বড়ো ট্রাক তাদের গাড়ির পাশে থামে, তখন তার শরীরে চূড়ান্ত অবসাদ নেমে আসে। সেই ট্রাকটি যদি গ্যাস আর পেট্রোলে ভর্তি হত! সে ছাদের হ্যান্ডেলটি শক্ত করে ধরে আর তার পাশে বসা মানুষটির দিকে মুখ ফেরায়, কিন্তু কোনো হাসি ছাড়াই যা অন্তত তার ভয়, রাগ এবং তার কষ্টকে অন্তত কিছুটা লাঘব করতে পারত। তাহলে কেউ ঝগড়া করবে না বা এমনটা ভাববে না বা জিজ্ঞাসা করবে না যে তারা কী অপরাধ করেছে যে তাদের দিকে অমন করে তাকাতে হবে। সে ভান করে যে সে তাদের পাশের দোকান বা রাস্তার যানবাহন দেখছে। উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে, তার কোলনের গন্ধ গাড়ির ভিতরের গাদাগদি স্থানে ছড়িয়ে পড়ে আর ধোঁয়া, পেট্রল আর ধুলোর গন্ধের সাথে মিশে যায়।
এই ভিড়ের হাত থেকে রেহাই নেই। সে জানালার বাইরে তার বাম দিকে তাকায়, সেখানে একটি বোঝাই ট্রেলার রয়েছে। তার ডানদিকে, একজন ব্যক্তি বসে আছেন এবং তার পাশে অন্য একজন। যখন সে তাদের পাশের জানালা দিয়ে তাকায়, সে দেখে মানুষে ভর্তি যানবাহনগুলি ধীরে ধীরে একের পর এক চলছে। চলমান গাড়িগুলোর ওপারে মুদির দোকানের ভিতরে চাল ও তেলের পসরা আর বাইরের দিকে ক্রেটে সাজানো লাল-হলুদ আপেল, ডালিম আর কমলা। সেগুলোর রং লোভনীয় হাতছানি দিচ্ছে। একটি রেস্তোরাঁ থেকে কাবাবের ধোঁয়া আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। উপরের তলায় একটি ক্যাফে রয়েছে। ধোঁয়ায় এর বোর্ড আবছা হয়ে আছে।
ধীরে ধীরে পশুখাদ্যের গুদামটি দৃশ্যের মধ্যে আসে। ভবনটি এত উঁচু যে এটি পাহাড়ের দৃশ্যকেও ঢেকে রাখে।
দুটি জিনিস কেউ লক্ষ করেনি। গুদাম-ঘরটিতে হলুদ আর সাদা ছাড়া অন্য রঙের প্রলেপ আর রুটি প্রস্তুতকারীদের প্রতিদিনের আসা-যাওয়া। যদিও হামেদ গত আঠারো বছর ধরে এই পথ দিয়ে যাতায়াত করছে, কিন্তু সে কখনোই সেখানে কাজ করে এমন মানুষের দেখা পায়নি। বিরক্ত হামেদ গভীরভাবে শ্বাস নেয়। ফুটপাথ মানুষে পরিপূর্ণ। রক্তমাংসের মানুষ। আনন্দিত আর দুঃখিত মানুষ। প্রার্থনারত আর ঈশ্বরভক্ত মানুষ।
দূরের মানুষ, সবুজ শিরা এবং কালোচুলো রক্তমাংসের মানুষ। চোখগুলো সাদকালো, সবুজ-সাদা, কিছু নীল-সাদা। দুঃখ ও হতাশায় ভরা মানুষ। যাদের হৃদয়গুলো কালো করে দিয়েছে পৃথিবী। আর কিছু কাগজের টুকরো নিয়ে আশা আর আনন্দে পূর্ণ হৃদয়গুলো ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানায় যে জীবন এখনও অনেক ভালো আছে।
গাড়ির বাইরে, রাস্তায় স্যুভেনির বিক্রি করা পুরুষ আর ছোটো বাচ্চাদের মুখ থেকে ভাপ বের হয়। ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য ধন্যবাদ, মনে হচ্ছে শহরের সবাই যেন সিগারেট টানছে! এই সেই জনতা যারা এই মুহূর্তে বা কয়েক মুহূর্ত পরে হামেদের সাথে বিস্ফোরণে উড়ে যেতে পারে। রক্তে ভরা তাদের শিরা আর খুলি ভর্তি তাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুগুলো অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। হামিদের মনে পড়ে কাল সকালের জন্য ফ্রিজে রাখা পনিরের টুকরোটির কথা। সেটা কি কাল সকাল পর্যন্ত অথবা চিরকাল সেখানে থাকবে? কাল সকাল আসবে না! আমার মিষ্টি চায়ের সাথে সেই পনিরের টুকরোটি খাওয়ার আগামী সকাল কখনোই আসবে না!
এই আঠাশ দিন সে নিয়মিত অফিসে গেছে আর ফিরে এসেছে। দু’দিনের মধ্যে সে তার বেতন পাবে। আজ থেকে দু’দিন। হামেদ অনুমান করে। বিনা কারণে, একেবারে নির্বুদ্ধিতায় আর অজ্ঞতায়, এই রাস্তায়, এই গাড়ির ভিতরে, রক্তে ভরা তার শিরাগুলো যদি ছিঁড়ে যায়! দু’দিনের মধ্যে, তার বেতন ব্যাঙ্ক খাতায় ঢুকে যাবে।
সে তার একটি পকেট হাতড়ায়, তারপর অন্যটি। কিন্তু রুমাল নেই। সে তার জ্যাকেটের পকেটে হাত ঢুকিয়ে একটি হালকা ফিরোজা রঙের রুমাল বের করে। রুমালের এক কোণে সূচিকর্মে গোলাপি রঙের তোলা একটি নাশপাতি। সে তার কপাল আর ঘাড়ের ঘাম মোছে। রুমাল থেকে কোলনের গন্ধ ছড়ায়, যা সে গুলবাহার কেন্দ্র থেকে তিন হাজার আফগানিতে কিনেছে। শিশিটি আসলেই ছোটো কিন্তু এখনও কোলনে ভরা। ঠিক যেন রক্ত আর আকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ একটি মানুষ। তার একটু বেশি বাড়াবাড়ি! শুধু মৃত্যুচিন্তা আর অপ্রত্যাশিতভাবে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া নয়। কী হবে যদি, এর পরে, তার ছেলে আঠা বিক্রেতা বা নেশাসক্ত হয়ে যায়, অথবা যদি তার মেয়েকে এই দেশে এতিম হয়ে ভিক্ষা করতে হয়, যেখানে…
হে ঈশ্বর, আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই! কিন্তু এইসব এতিম ও ভিক্ষুকরা তো আকাশ থেকে পড়েনি। তাদের পিছনে ফেলে রাখা হয়েছে। সেইসব মানুষেরা তাদের পিছনে ছেড়ে গেছে, যাদের রক্তের অর্ধেক রাস্তার মাটিতে জমে গিয়েছিল এবং বাকি অর্ধেক জলে ধুয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলেছিল! সবচেয়ে জনাকীর্ণ কবরস্থানে শহীদ হিসাবে তাদের গোর দেওয়া হয়েছিল।
আকাশ নীল আর পরিষ্কার। মৃদু বাতাস বইছে। আজ সেই দিনগুলির একটি যেদিন শীতের সূর্য টকটকে আর তুমি মৃত্যুর কথা ভাবতে চাও না। স্কুলের কাছে গলিতে শীতের দিনের জটলা। ছোটো-বড়ো মেয়েরা, তাদের সাদা চাদর আর রঙিন জ্যাকেট যা তাদের শার্টের অর্ধেক কালো রং ঢেকে রাখে, হাওয়া-মেঠাই বিক্রি করা লোকটির চারপাশে ভিড় করেছে। যারা প্রথমে এটি খেয়েছিল তাদের ঠোঁট ও জিহ্বার রং গোলাপি। শৈশবের স্মৃতি মানুষের হৃদয়ে জলে পরিণত হয়, ঠিক যেমন ছাত্রীদের মুখের ভেতরে সেই মিষ্টি গোলাপি পশমের মতো হাওয়া-মেঠাই গলে যায়। মায়েরা তাদের ছোটো বাচ্চাদের হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যায়। গাড়িটি এখন স্কুলের গলিতে থামে। উত্তর দিকের বাতাসে হামেদের শরীরের ঘাম শুকিয়ে যায়। তার ফোন বেজে ওঠে:
“হ্যালো, হামেদ, তুমি ঠিক আছো?”
“হ্যালো, হ্যাঁ, আমি এখানে ভালো আছি!”
“পুল-ই-চরখি রোডে একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। আমি তোমার খবর নেওয়ার জন্য ফোন করলাম। সৌভাগ্যক্রমে, তুমি ভালো মতো সেখানে পৌঁছে গেছ।”
“পুল-ই-চরখি আমার আসার পথে পড়ে না। ধন্যবাদ।”
“বাই।”
“বাই।”
সে বিদায় জানায় আর স্কুলে ঢুকে যায়। তার সচিব কাকা খের মামাদ তার দিকে ছুটে আসে:
“শুভ সকাল, জনাব প্রধান শিক্ষক। আসুন, কেউ আমাকে বিরক্ত করছে। সেই সাতসকাল থেকে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। জনাব, এই মেয়েরা অন্য স্কুলে বদলি নিতে চায়। তাদের বাবা কাগজপত্র নিয়ে এসেছেন।”
হামিদ জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন মনে করে না: “তারা কি তাদের পড়াশোনা বা শিক্ষক নিয়ে সন্তুষ্ট নয়?”
হামেদ জানে যে সরকারি স্কুলে কেউ এই ধরনের প্রশ্ন করে না। সেটা এই পবিত্র স্থানগুলিতে গর্ব এবং সম্মানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এটা শুধুমাত্র বেসরকারি স্কুলে হয়ে থাকে যেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের ছাত্রদের কাছে নতজানু হয়ে থাকে। সে নিজেই বুঝেছে যে তাদের পড়াশুনার গুণমানের কারণে কেউ তাদের স্কুলে বেশিদিন যাতায়াত করে না! এটা হতে পারে যে এই অঞ্চলের অন্যদের মতো তাদের বাবাও অন্য জায়গায় বদলি হয়ে চলে গেছেন।
সে কাগজপত্র দেখে। হ্যাঁ! রাবিয়া বালখী—তারা কারতেহ-ই-সেহ বা কারতেহ-ই-চরে চলে গেছে। তিনি এখন জানতে উদগ্রীব যে তারা বাড়িটা বন্ধকে নিয়েছিল, নাকি ভাড়া নিয়েছিল। সে কল্পনাও করতে পারেন না যে এই মেয়েদের জরাজীর্ণ চেহারার বাবারা একটি বাড়ি কিনতে পারবেন।
কাকা খের মামাদ চা আনে। আগের দিন জনৈক ছাত্রের দেওয়া চকলেট বের করে। ছাত্রটি স্নাতক হওয়ার খুশিতে মিষ্টিমুখ করানোর জন্য চকলেট দিয়েছিল। হামিদের মনে পড়ে যে সেগুলোর মোড়ক ছিল লাল আর ভিতরে ছিল বাদাম মিশ্রিত চকোলেট। এখন দুপুরের খাবারের সময়। ভাজা পেঁয়াজের গন্ধ তার অফিসের দরজা খোলা এবং বন্ধ করার সাথে সাথে ঢুকে যাচ্ছিল। হামেদের মুখে জল এসে যায়। শেষ পর্যন্ত সে তার সচিবকে জিজ্ঞেস করে, “কাকা, আমরা দুপুরে কী খেতে চলেছি?” খের মামাদ উত্তর দেয়: “গরিবেরা দুপুরের খাবারে আর কী করে জনাব, আলুর তরকারি।” প্রধান শিক্ষক হামেদ বদলির কাগজপত্র অনুমোদন করে খের মামাদের হাতে ফেরত দেয়। যখন কাকা চলে যায়, সে একা বসে থাকে। চা পানের বিরতির সময় হঠাৎ করেই সে আবার ভিড়ের মুখে পড়ে অস্থির অনুভব করে। আজ তার হৃদয় ও মন, কোনো কিছুর উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। চা-টাও কেন বিস্বাদ হয়েছে? তাকে যেন ভূতে পেয়েছে! যখন সে তার বোনের ফোনের কথা ভাবে, তার বুকটা ধ্বক করে ওঠে। ভয়ে শরীর কাঁপে। কেন তার বোন তাকে এত অসংলগ্ন ভাবে ফোন করেছিল? আর জিজ্ঞেস করেছিল যে সে কেমন আছে? যদিও সে জানত যে বিস্ফোরণটি তার আসার পথে ঘটেনি? তার জিজ্ঞাসার জন্য হামেদের মনটা খারাপ হয়ে যায়। কী হবে যদি আজ, ফেরার পথে, সে একটি আত্মঘাতী হামলার মুখে পড়ে? শেষবার তার বোনের কণ্ঠস্বর শোনার পর থেকে এটাই ভাবছে হামেদ। সে যে মৃত্যুভয়ে ভীত তা বোনকে বুঝতে দেওয়া চলবে না। সে অসহায় বোধ করে। আর তার সমগ্র সত্ত্বা গিঁটের মতো জড়িয়ে যায়। সে ঢোঁক গিলে গভীর নিশ্বাস নেয়। যদি সে ধূমপায়ী হত, তাহলে সে অবশ্যই সিগারেট খেত।
শক্তির জন্য সে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে। আর টেবিলের পিছন থেকে উঠে এসে উঠোনে পা বাড়ায়। উষ্ণ ও মধুর সূর্য তখন মধ্য গগনে। হামেদ একটা বেঞ্চে বসে। টাটকা বাতাসে শ্বাস নিয়ে ভালো লাগে। সে তার পা দিয়ে চারপাশের নুড়ির টুকরো নিয়ে আনমনে খেলে চলে। হ্যাঁ, তার হৃদয়, তার পুরো মনোযোগ শহরের অন্য দিকে, যারা আজ মারা গেছে তাদের সাথে। তারা তার কে হন আর তারা কী জানত যে তারা আজ মারা যাবে?
যদি কেউ তাদের জানাতেন:
হ্যালো, আজ সকালে আটটা তেইশ মিনিটে আপনারা মারা যাবেন! আপনাদের পাশে একটি বিস্ফোরক ভরা গাড়ি থামবে। আমরা এখনও জানি না কোন্ ধরনের বিস্ফোরক কিন্তু আমরা জানি যে সেটি বিস্ফোরিত হবে। সেটি হঠাৎ ফেটে গিয়ে আগুন লাগবে আর আগুন আপনাদের শরীর গ্রাস করবে। লোকেরা বলতে পারত যদি আগুন লাগে, লাগতে দিন, আমরা যেভাবেই হোক মরব। আপনার তথ্য অতটা কার্যকর নয়। আপনি যদি বলতেন আজকের আবহাওয়া মেঘলা থাকবে অথবা বৃষ্টি হবে কি হবে না আটটা তেইশ মিনিটে, তাহলে ভালো হত। মৃত্যু নিশ্চিত আর আমরা এতে ভয় পাই না, কিন্তু আমরা ভয় পাই যে আমাদের শিশুরা এতিম হবে।
হামেদ মাথা তুলে তার চারপাশে শুকনো, পাতাবিহীন গাছ এবং স্কুলের ফাঁকা উঠোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। এটি এমন একটি স্থান যা সে বহু বছর ধরে বারবার দেখে আসছে, কিন্তু এটি তাকে এতটা বিমর্ষ কখনও দেখেনি। সে উঠে তার ঘড়ির দিকে তাকায়। বেলা দুটো বেজে দশ মিনিট। প্রতিদিন, সে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যায় দুটো বেজে ত্রিশ মিনিটে। তাহলে সে এখনই যেতে চাইছে কেন? কোন্ খেলায় সে ধরা পড়েছে? কে তাকে ফাঁসাতে চায়? নাকি একটি রহস্যময় শুভশক্তি তাকে এই সময়ে চলে যেতে বলছে? তার যাওয়া উচিত হবে কি না? পরে, তারা বলবে:
হামেদ প্রতিদিন দু’টো তিরিশে স্কুল ছেড়ে চলে যায়, যেদিন সে মারা যায় সেই অভিশপ্ত দিনে দু’টো দশে চলে গিয়েছিল, হায় হায়!