কৃষ্ণচন্দ্র দে, সঙ্গীত মহীরুহ – সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় (৩য় অংশ)
১৯২২ সালে নাট্যাচার্য শিশিরকুমার ভাদুড়ীর সনির্বন্ধ অনুরোধে কৃষ্ণচন্দ্র সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, অভিনেতা হিসেবে পেশাদার রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ করেন।প্রবেশ তো নয়, যেন আবির্ভাব!নাটকে যোগদানের ব্যাপারে তাঁর বরাবর আপত্তি ছিল,কিন্তু শিশিরবাবু তাঁকে বোঝান যে নাটক হল জনশিক্ষার প্রচার মাধ্যম। তাকে সেই ভাবে ব্যবহার করতে হবে, যাতে মানুষের চেতনায় শিক্ষার উত্তরণ ঘটে, আর এই কাজে নিঃসন্দেহে কৃষ্ণচন্দ্র অন্যতম সেরা শক্তি। এরপর সব আপত্তি সরিয়ে রেখে ১৯২৪ সালে অ্যালফ্রেড থিয়েটারে ‘বসন্তলীলা’ নাটকে কৃষ্ণচন্দ্র প্রথমবার মঞ্চে হাজির হন। শিশিরবাবুর পরিচালনায় এই নাটকে তিনি বসন্তদূতের ভূমিকায় যেভাবে অভিনয় করেছিলেন তাতে দর্শক শ্রোতা উভয়েই হতবাক্ হয়ে যান! এই সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে শিশিরবাবু আর এক ‘বসন্তলীলা’ মঞ্চস্থ করেন রঙমহলে, যা ছিল অপেরা ভিত্তিক এক পরীক্ষামূলক নাটক। এই নাটকে কোনও মানুষের ভূমিকা ছিল না। সব কথাই ছিল গানের মাধ্যমে এবং চরিত্ররা ছিল গাছ, ফুল, পাখি,বাতাস– একদম অ্যাবসট্রাক্ট ধরনের প্রথম একটা কাজ। কি আশ্চর্য, সে নাটক দর্শকদের এমন আপ্লুত করেছিল গানের কথায়, সুরে ও অভিনয়ে যে রাতের পর রাত হাউস ফুল হতে থাকে। এক নতুন রোমাণ্টিসজম্ এ দর্শক ভেসে যায়। এত চাহিদা সেই যুগে আর কোনো নাটক তৈরি করতে পারেনি। শিশির ভাদুরীর মতে সব কৃতিত্ব ছিল কে.সি. দের!
এরপর মনোমোহন নাট্যমন্দিরে শিশিরবাবুর পরিচালনায় ‘সীতা’র অভিনয় প্রদর্শিত হয় এবং সে নাটকে বৈতালিকের অংশে গান গেয়ে কৃষ্ণচন্দ্র দর্শকদের পাগল করে তোলেন। এই সাফল্য আগের বসন্তলীলাকেও ছাপিয়ে যায় এবং সীতা সর্বাঙ্গীন মঞ্চসফল নাটক হিসেবে সমাদৃত হয় এবং এর পর থেকে সার্থক গায়ক, অভিনেতা ও সংগীত পরিচালক হিসেবে অভিনয়ের জগতে কৃষ্ণচন্দ্র ধরাছোঁয়ার বাইরে এক জায়গা করে নেন! যদিও সীতা নাটকের অন্যতম সুরকার ছিলেন বিস্মৃত গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়। এই নাটকে শিশিরবাবুর অনুরোধেই গুরুদাস বাবু ‘অন্ধকারের অন্তরেতে অশ্রুবাদল ঝরে’ গানটিতে হুবহু রবীন্দ্রনাথের গান ‘যখন তুমি বাঁধছিলে তার’-এর সুর ব্যবহার করেছিলেন। জেনে রাখা ভালো এই নাটকের মূল সংগীত পরিচালক ছিলেন স্বয়ং দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর,এবং গুরুদাসবাবু ছিলেন তাঁর অনুগত শিষ্য। আর নাটকটির গানের কথা লিখেছিলেন হেমেন্দ্রকুমার রায়। এরপর এমন পরিস্থিতি হয়েছে, যেখানে তাঁকে বাদ দিয়ে কোনও নাটকের সুর,আবহ সংগীত তৈরি হত না কলকাতায়। সমস্ত পরিচালক অপেক্ষা করে থাকতেন তাঁর জন্য। কতকগুলি সংগীতপ্রধান নাটকের নাম বলি যা তাঁর অভিনয় ও গায়কির গুনে আপামর জনসাধারনকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল– চন্দ্রগুপ্ত, সত্যের সন্ধান, রাঙারাখী, অসবর্ণা, সিন্ধুগৌরব, শ্রী শ্রী বিষ্ণুপ্রিয়া, জয়দেব, রাজশ্রী, প্রতাপাদিত্য, শ্রী প্রলয়, আগামীকাল, ঝাঁসির রাণী, রাণী ভবানী এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। নাটকের গান বা তার সুরকরণ সম্পর্কে তিনি বলতেন যে সুর অনুযায়ী কথা হবে না নাটকে। নাটকে আগে কথা, সেই কথার মানেকে সামনে রেখে তার ভাব ফোটাতে হবে সৃষ্ট সুরের মাধ্যমে। যেমন ফোটা ফুল যেন নাটকের গানের কথা। আর সুররূপী ভ্রমর সেই ফুলে এসে গুনগুন করে সেই কথাগুলোই বলবে, সুর হতে হবে এমনি! তাঁর পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত নাটকে একটা বিশেষ ধারা বজায় রেখে সুর হত, কৃষ্ণচন্দ্র সে ধারা আমূল বদলে দিয়েছিলেন। শাস্ত্রীয় সুর তো বটেই, কীর্তন, ঠুমরি, চৈতী, টপ্পা, গজল, কাজরী,লোকসংগীত ইত্যাদি সমস্ত ধরনের গানের সার্থক প্রয়োগ তিনি নাট্যমঞ্চে করে দেখালেন। সবথেকে বড়ো কথা, তাঁর সুরে কোথাও কালোয়াতির মারপ্যাঁচ থাকত না, সহজ কথা এমন সহজ ভাবে বলতেন যে লোকে শুনে হায় হায় করে উঠত।
সত্যের সন্ধান নাটকের সুর ছিল তাঁরএবং তাতে অভিনয় করতেন কৃষ্ণচন্দ্র, সঙ্গে ছিলেন তাঁরই ছাত্রীসম আঙুরবালা। এই নাটকের সব গানগুলিই অমর হয়ে রয়েছে, যেমন ‘স্বপন যদি মধুর এমন’, ‘আমার আঁধার ঘরের আলো’, কিংবা ‘ওরে ও তরুলতা’। তা শেষের এই গানটি দু’জনে মিলে দ্বৈতকণ্ঠে গাইতেন। প্রসঙ্গক্রমে আঙুরবালা পরবর্তীকালে বলেছিলেন যে গাইতে গিয়ে স্টেজে কে বেশি এনকোর পাবেন এই নিয়ে দুজনের মধ্যে একটা লড়াই হত। “যেদিন আমি বেশি এনকোর পেতুন, সেদিন কেষ্টবাবুর হিংসে হত”– দু’জনের মধ্যে কত সুন্দর বোঝাপড়ার সম্পর্ক ছিল এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়।
আর একটা কথা বলি। রঙমহল থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র দে। তিনি, অভিনেতা রবি রায়, আর নিজের খুব ঘনিষ্ঠ কার্তিকচন্দ্র দে এই তিনজনে মিলে ১৯৩১ সালের ৮ই আগস্ট যোগেশ চৌধুরীর লেখা শ্রীশ্রী বিষ্ণুপ্রিয়া নাটকের অভিনয় দিয়ে রঙমহলের যাত্রা শুরু করেন। নাটকটির পরিচালক ছিলেন স্বয়ং শিশিরকুমার এবং আলোর দায়িত্বে ছিলেন বিখ্যাত সতু সেন। এই মঞ্চ চালাতে গিয়ে পরবর্তীকালে ওনাকে প্রচুর আর্থিক ক্ষতিও সামলাতে হয়েছে। কি আশ্চর্য নিয়তি, নানান ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে সত্তর বছর পেরিয়ে ২০০১ সালের আর এক আগস্ট মাসের ২৮ তারিখ আগুনের লেলিহান শিখায় শেষ হয়ে যায় এই রঙ্গমঞ্চ!
শিশিরবাবুর পরিচালনায় একবার বিসর্জন নাটক মঞ্চস্থ হয়। এতে কৃষ্ণচন্দ্র দুটি রবীন্দ্রসংগীতগেয়েছিলেন, ‘আঁধার রাতে একলা পাগল’ আর ‘আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে’। নাটকের মহলা শুনতে এলেন রবীন্দ্রনাথ। দর্শকাসনে বসে কৃষ্ণচন্দ্রের কণ্ঠে এই গান দুটি শুনে কবি মুগ্ধ হয়ে গেলেন। পুরোটা দেখার পর বললেন ‘কেষ্টকে ডাক্ কথা আছে’। কৃষ্ণচন্দ্র এলেন। কবি বললেন, ‘এ গান কি আমার গান? এই গানের এই রূপ হয়? আমার ধারণা ছিল না যে এত রূপ এই গানে। আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি’। সে কথা শুনে কৃষ্ণচন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে প্রণাম করলে কবি তাঁকে আশির্বাদ করেন ‘তুমি শতায়ু হও, লোককে শোনাও’ বলে।
১৯৩২ সালে চিত্র পরিচালক ফণী মজুমদারের ডাকে সাড়া দিয়ে কৃষ্ণচন্দ্র দুই ভাইপো, মান্না দে ও প্রভাস দে-কে নিয়ে বোম্বে যান। প্রথম ছবি যাতে তিনি সুরপরিচালক হিসেবে কাজ করেন তা ছিল লক্ষ্মী পিকচার্সের ‘তমন্না’ এবং পরেরটি ‘মেরা গাঁও’। এই ফণী বাবুর পরিচালনায় তিনি নিজেই একটি ছবির প্রযোজনা করেন কে.সি.দে প্রোডাকশন নামে, ছবির নাম ‘দূর চলে’। সাফল্যের নিরিখে ইতিমধ্যে তিনি স্থির করেন আরও কিছুদিন বম্বেতে থেকে যাবার এবং ছবি প্রযোজনা করার ব্যাপারে। প্রভাস দে ফিরে আসেন কলকাতায়, কিন্তু সঙ্গে থেকে যান মান্না দে। গান ও প্রযোজনার পাশাপাশি তিনি ফিল্মের অভিনয়েও নেমে পড়েন। তাঁর অভিনিত প্রথম প্লেব্যাক ছবি ‘রামরাজ্য’। এছাড়াও সাবিত্রী, পুরাণ ভগত, নারী, মীনাক্ষী প্রভৃতি ছবিতেও তিনি প্লেব্যাক অভিনয় করেন। ওদিকে কলকাতা থেকেও নানান কাজের ডাক আসায় তিনি ফিরে আসেন ও প্রথম সুর পরিচালক হিসেবে ‘পূরবী’ ছবিতে কাজ করেন। এরপর তাঁর অভিনীত ও সুরারোপিত বেশ কিছু ছবি সিনেমার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য স্থান গ্রহণ করে, এর মধ্যে বিদ্যাপতি, চণ্ডিদাস, সোনার সংসার, আলোছায়, গৃহদাহ, শকুন্তলা, সাপুড়ে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। এখানে চণ্ডিদাস ছবিটি নিয়ে কিছু না বললেই নয়। ১৯৩২ সালে নিউ থিয়েটার্সের প্রযোজনা ও দেবকী বসুর পরিচালনায় তৈরি ছবিটি কলকাতার চিত্রা সিনেমা হলে এক নাগাড়ে পঞ্চাশ সপ্তাহ ধরে চলে এবং তা সেই যুগের এক সর্বকালীন রেকর্ড! এই ছবির ‘শতেক বরষ পরে’ ও ‘ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না বঁধু’ গান দুটি দু’পিঠে নিয়ে বারো ইঞ্চির রেকর্ড বের হয়। সেই সময় বাজারে শুধু ৭৮ আর.পি.এম এর দশ ইঞ্চির রেকর্ড বেরোত। খুব সম্মানিত,প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হত, যেমন রবীন্দ্রনাথ, বা লালচাঁদ বড়াল। কেবলমাত্র এনাদের ১২ ইঞ্চির রেকর্ড ছিল তখন বাজারে এবং এরপরই কৃষ্ণচন্দ্রের ১২ ইঞ্চির রেকর্ড বাজারে আসে চণ্ডীদাস ছবির গানের সৌজন্যে। এই ছবির আর একটি গান ‘ফিরে চল আপন ঘরে’ আপামর বাঙালিকে একেবারে তোলপাড় করে তুলেছিল, এবং এই গানটি শোনার জন্যই লোকে বার বার চণ্ডীদাস ছবিটি দেখতে যেত। জেনে রাখা ভালো একমাত্র এই গানটির (ফিরে চল) সুরকার পঙ্কজ মল্লিক। ১৯৩০ সালে স্টার থিয়েটারে অপরেশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় সৌরীন্দ্র মোহন মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘স্বয়ংবরা’ নাটকে এই গানটি প্রথম ব্যবহৃত হয়, গাইতেন প্রখ্যাতা অভিনেত্রী রাজলক্ষ্মী। দেবকী বসু গানটি শুনে এত মুগ্ধ হয়েছিলেন যে সৌরিনবাবুর কাছে গিয়ে একান্ত অনুরোধে তাঁর অনুমতি যোগাড় করেছিলেন ওনার নতুন ছবি চণ্ডীদাসে গানটি ব্যবহার করার জন্য। এবং সেই সূত্রেই কৃষ্ণচন্দ্র গানটি গেয়েছিলেন যা আজ ইতিহাস। যদিও সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে নাম ছিল রাইচাঁদ বড়াল মশাইয়ের, কিন্তু কোথাও পঙ্কজবাবু তাঁর সুরের স্বীকৃতি পাননি!
১৯৩৫ সালে ‘ভাগ্যচক্র’ ছবিতে অভিনয় ও গান করেন কৃষ্ণচন্দ্র। এই ছবিটি একটি বিশেষ কারণে উল্লেখযোগ্য। ছবিতে নায়ক যদিও পাহাড়ি সান্যাল,কিন্তু সমগুরুত্বপূর্ণ একটি রোলে কৃষ্ণচন্দ্র। এই ছবিতে তাঁর গাওয়া ‘ওরে পথিক তাকা পিছন পানে’ বা ‘মনরে আমায় খুলে দে তোর দ্বার’ গানদুটি ভীষণভাবে মাতিয়ে দিয়েছিল। আরও একটি বিশেষ কারণে এই সিনেমা মনে রাখার মতন। পঙ্কজ মল্লিক, মুকুল বসু ও নীতিন বসু মিলে পরীক্ষা নিরীক্ষার কৌশলে সফলভাবে এই প্রথম বাংলা তথা ভারতীয় ছবিতে সফল ভাবে প্লে-ব্যাক পদ্ধতি চালু করলেন! সেদিক দিয়ে ছবিটি একটি ঐতিহাসিক সাফল্যের দাবীদার অবশ্যই। ভাগ্যের পরিহাসে পঙ্কজ মল্লিক আবার বঞ্চিত হন তাঁর প্রাপ্য স্বীকৃতি থেকে,সংগীত পরিচালক হিসেবে নাম থাকে রাইচাঁদ বড়ালের – পঙ্কজবাবু থাকেন কেবলমাত্র সহকারী হিসেবেই।
নিউ থিয়েটার্সের ‘দেশের মাটি’ ছবির একটি গানে সেই সময় এক আশ্চর্যরকম প্রতিভার সমাবেশ ঘটে। অজয় ভট্টাচার্যের লেখা ‘আবার ফেরে রঙ’ গানটিতে একসাথে কণ্ঠ দিয়েছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র, সায়গল, পঙ্কজ মল্লিক ও শ্রীমতি উমাশশী! সুরকার ছিলেন পঙ্কজ মল্লিক।
আবার ‘আলোছায়া’ ছবিতে কৃষ্ণচন্দ্রের সুরে নায়কের ভুমিকায় গান গেয়ে মাত করে দিয়েছিলেন পঙ্কজ মল্লিক। এর মধ্যে ‘এই তো মিলন শুরু’, ‘বাঁশী তুই বাজা রাখাল’ বা ‘কিবা বঙ্কিম ঠাম’ গানগুলি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য।
নিউ টকিজের ব্যানারে ‘নারী’ বলে একটি সিনেমা হয়, তাতে অভিনয় করেন কৃষ্ণচন্দ্র। এই সিনেমাটির শো দিয়ে কলকাতার ‘মিনার’ সিনেমা হলের উদ্বোধন হয়েছিল ১৯৪২ সালে। সেই সময় বড়ো বড়ো সমস্ত পরিচালক, সুরকার সকলেই যুক্ত ছিলেন নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গে। কিন্তু তার বাইরে এসে নিউ টকিজের সাথে এই প্রথম কাজ করলেন রাইচাঁদ বড়াল। যদিও সমস্ত সুর তাঁর ছিল এবং সেই সময় সিনেমায় তাঁর কথাই শেষ কথা, তবুও সেই ছবিতে কৃষ্ণচন্দ্র নিজের সুরে একটি গান গাইলেন ‘ও হে বিশ্বনাথ, জ্বালো জ্বালো তব নয়ন বহ্নি জ্বালো’। দারুণ সুর,দারুণগান এবং স্ক্রিপ্টের বাইরে গিয়ে কৃষ্ণচন্দ্রের নিজস্ব এই সংযোজন কিন্তু সকলেই মেনে নিয়েছিলেন, এমনকি রাইচাঁদ বাবুও! গানের জগতে এতটাই গুরুত্ব ছিল তাঁর।
১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি সিনেমায় অভিনয় ও গানের কাজে যুক্ত ছিলেন। শেষ ছবি ছিল ‘আশাবরী’। একদম চলেনি সে ছবি,সংগীত পরিচালক ছিলেন কমল দাশগুপ্ত। এই ছবিতে তিনি একজন হিন্দুস্থানী ওস্তাদের অভিনয় করেছিলেন, আবার একটি দৃশ্যে তবলাও বাজিয়েছিলেন নিজে। তারপর একদম স্বেচ্ছা নির্বাসনে সরে আসেন। কেন আর সিনেমায় তাঁকে দেখা যায় না জানতে চাইলে সোজাসুজি বলতেন, ‘আমি অনুপযুক্ত বলে’।
[ক্রমশঃ]