আমার মে দিবস – কিন্নর রায়

আমার মে দিবস – কিন্নর রায়

আমার মে দিবস একেবারেই স্বতন্ত্র। কেননা হে-মার্কেটের শ্রমিকদের লড়াই, ফিলাডেলফিয়া জুতোর কারখানায় ধর্মঘট, ৮ ঘণ্টার কাজের দাবিতে শ্রমিকদের লড়াই, এসব কথা ইন্টারনেট ঘাঁটলে খুব সহজেই পাওয়া যায়। আমাদের বাল্যকালে ইন্টারনেট ছিল না। বই ছিল। ‘মে দিবসের ইতিহাস’ নামে বই পাওয়া যেত। সে ইতিহাস পড়ে রোমাঞ্চিত হতে হয়। এত বড়ো মানুষের লড়াই! ১লা মে ভারতবর্ষের সমস্ত…

জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা শ্রমিক-কৃষকের সঙ্গে রাষ্ট্রের অনিবার্য সংঘাত ডেকে আনছে – চয়ন ভট্টাচার্য

জীবন-জীবিকার অনিশ্চয়তা শ্রমিক-কৃষকের সঙ্গে রাষ্ট্রের অনিবার্য সংঘাত ডেকে আনছে – চয়ন ভট্টাচার্য

নয়া উদারবাদের প্রভাবে শ্রমিক ও কৃষকের জীবন-জীবিকার অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে বলেই “মে দিবস” উদযাপন আজ আর কেবল আট ঘণ্টার লড়াইয়ের স্মৃতিচারণে সীমাবদ্ধ নেই। কারণ, উদার অর্থনৈতিক ব‍্যবস্থায় কৃষক, শ্রমিক উভয়েই জানেন, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানোর যোগ‍্যতা প্রমাণ করতে পারলে তবেই টিকে থাকা যাবে। শুধু তাই নয়, দুজনকেই প্রমাণ করতে হয় কর্পোরেট…

যদি আর বাঁশি না বাজে… – সুমন চক্রবর্তী

যদি আর বাঁশি না বাজে… – সুমন চক্রবর্তী

আমার মামাবাড়ি আপার আসাম অর্থাৎ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মৌঝুমরি বলে একটা ছোট্ট, অনামী গ্রামে। ট্রেনে তিনসুকিয়া জংশন। সেখানে থেকে কিছু একটা চেপে মৌঝুমরি। তখনও পর্যন্ত মৌঝুমরি ছিল বুড়ি দিঘঙের ধারে পড়ে থাকা সবুজে ঘেরা এক বিচ্ছিন্ন, অরক্ষিত দ্বীপের মতো। শাল, সেগুন, শিমুল, তমাল, পলাশ, শিরিষের সারিতে ঘেরা ছিল দিঘঙের এক দিকের কূল। অপ্রতিহত সেই আকাশচুম্বী বৃক্ষরাশি…

ভারতীয় মে দিবস – অমিতাভ গুপ্ত

ভারতীয় মে দিবস – অমিতাভ গুপ্ত

হে মার্কেটে  মিলিত প্রাণ    জ্বালিয়ে ধরেছে      দীপ্ত গান। জাগো শ্রমিক  জাগো কিষাণ    এই ভারতের      সব শ্মশান। পূর্ণ হোক  ফসলে আর    ধন্য হোক      শেষ অশোক। আজ কৃষকের  প্রতিবাদ আর    প্রতিজ্ঞা নিয়ে      মে দিবসের রুদ্র দীপকে জাগো ঝংকার, জাগো ঝংকার।

কাঞ্চনজঙ্ঘাতে গুইয়ের গান – প্রবীর মিত্র

কাঞ্চনজঙ্ঘাতে গুইয়ের গান – প্রবীর মিত্র

সিউদো সিউদো মা সিন্দুরলে তিমরো মনপিঞ্জরালে ঢাকেছমন খোলি হাস লা লা– ওপরের লাইনগুলো পড়ে কিছু বুঝলেন? না আমিও প্রথমে কিছু বুঝিনি। এটি ইন্দ্রবাহাদুর থাপা রচিত একটি নেপালি লোকসঙ্গীত, যার কিছুটা বাংলায় তর্জমা করলে দাঁড়ায় “প্রাণ খুলে হেসে নাও, পিঞ্জরে তোমার মনটাকে কেন বন্দী করে রেখেছ।” ১৯৬২ সালের একটি সিনেমায় এই গানের গায়ক একজন নেপালি শিশুশিল্পী,…

শীত ও আগুনের মিথোজীবিতা – দীপাঞ্জনা মণ্ডল

শীত ও আগুনের মিথোজীবিতা – দীপাঞ্জনা মণ্ডল

সিগারেটের শেষটুকু ধোঁয়াশূন্য না করে কখনোই ফেলতে পারি না। পায়ে পিষতে এক চিলতে অস্বস্তি হয়, ফলে আশপাশে ছাইদান না পেলে উচ্চ গলনাঙ্কের কিছু মানে লোহা বা টিনের কিছু অথবা জমে থাকা কাদাজল খুঁজি। বর্ষায় তেমন ঝামেলা নেই, তবে শীতকালে এরকম সমাধান সহজে না পেলে হাতে ধরে রাখি ফিল্টার, অপেক্ষায় কখন নিঃশেষ হবে শেষ ফুলকিটুকু। তখন…

ছটি কবিতা – গৌতম চৌধুরী ও দেবদাস আচার্য

ছটি কবিতা – গৌতম চৌধুরী ও দেবদাস আচার্য

দেবদাস আচার্যর কবিতা প্রাণ-গঙ্গা এত প্রাণচারিদিকে বিন্দু বিন্দু সহস্র প্রাণচিনি বা না চিনিদেখিঝরে পড়ছে যুগ যুগ ধরে ক্রমাগতযেন বৃষ্টি ঝরে অবিরত প্রাণের ভিতরে আমি আত্মহারাপ্রাণ প্রবাহে ডুবেস্নান করি অনন্ত অসংখ্য বিদ্যুৎ কণিকারছুটন্ত ভাসমান ঢেউপ্রণম্য প্রভুমৃত্যুমৃত্যু পরম শক্তিমান ও অমরতোমার পুচ্ছের গতিময় তারকাগুলিরঢেউজীবনকে ধারণ ও বহন করে করেনিত্য ধাবমান। গৌতম চৌধুরীর কবিতা নিঃসঙ্গ কাফেলা ১. অমোঘ…

যুদ্ধক্ষেত্র – দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক

যুদ্ধক্ষেত্র – দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক

“মানুষের চেতনা তার সামাজিক অস্তিত্ব নির্ধারণ করে না, মানুষের সামাজিক অস্তিত্বই তার চেতনার মর্মপ্রদেশ।” আমি দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক। প্রাক্‌-গাল্পিক মুহূর্তের চিন্তাগুলোকে ঝাঁকান দিতে গেলেই খসে পড়ে যত বিপ্রতীপ ঘটনাবিন্যাস। হাঁফিয়ে ফেলি নিজেরই বৃত্তবলয়ে চতুষ্পার্শ্বকে, আবক্ষ ঢেউ নিয়ে এক-এক মুহূর্ত থেকে চলকে নেমে যাই অচেনা শরীর নুয়ে। মুহূর্ত-প্রান্তে দাঁড়াবার সকল ক্ষণিকই বিষাদখিন্ন—“সরে যাও, সরো!” বলতে বলতে শরবন…

হকারের কেরোসিন তেল – নন্দেশ্বর দৈমারী অনুবাদ: তপন মহন্ত
|

হকারের কেরোসিন তেল – নন্দেশ্বর দৈমারী অনুবাদ: তপন মহন্ত

আগে আমি একটি ডালডার কৌটো ছিলাম। সিমাং মাস্টারদের ঘর থেকে সাওখ্লী আমাকে নিয়ে এসেছিল। সাওখ্লীরা অবশ্য ডালডার স্বাদ পায়নি। মাস্টাররা ডালডাটুকু খেয়ে আমাকে লবণ রাখার পাত্র বানিয়েছিল। পরে মাস্টাদের কোনো এক পরিচারিকা আমাকে আগুনের পাশে রাখায় আমি আর লবণ রাখার পাত্র হয়ে থাকলাম না। আমার ঠাঁই হল গুদামঘরের এক কোণে।পিঠের এক দিকে আগুনের তাপ লেগে…

সিয়েগফ্রিড, আমাদের প্রথম সন্তান ( ইতি দিওতিমা পর্ব ৭) – বল্লরী সেন

সিয়েগফ্রিড, আমাদের প্রথম সন্তান ( ইতি দিওতিমা পর্ব ৭) – বল্লরী সেন

।। ষষ্ঠ অধ্যায় ।। জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস২৪ এপ্রিল, ১৯০৫ আমার উচাটন দাবদাহের মতো ফুলকি উড়িয়ে নিয়ে চলল বেগানা পথে। মা নেই, বাপ নেই, আমি একা রাস্তা চলাফেরার মধ্যে দিয়ে জর্মান ভাষায় পটু হচ্ছি আর রুশ বন্ধুদের কাছে আমার বেশ নামডাক হচ্ছে। ওরা ওদের পুরুষ বন্ধুদের প্রেমপত্রের উত্তর দেবার সময়ে আমার শরণাপন্ন হয় আর আমাকে জর্মান…