সম্পর্ক – বিশ্বজিৎ

এত কাছাকাছি তবুও দূরত্ব… প্রতিবার বিরাম ডেকে আনে। এতদিন ধরে যে বিশ্বাস তৈরী করেছ ভ্রমণের একটা ক্ষেত্র… মুহূর্ত শাসন করছে,দুমড়ে যাচ্ছ ক্রমশ নিরাপদ…পেতে গিয়ে আরও ধাক্কা অনুভূতিজুড়ে

ছায়ান্তর – দীপায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়

ঘুমের আগে নিয়ম করে শাস্তি নামে নোনতা বালিশ আর উষ্ণ বুকের নীচে। অলীক সমান্তরাল যে জ্যোৎস্না উঁকি দেয় আমি তার ফেরৎ পথে দরজা খুলে রাখি। শহর, ফ্ল্যাট, ব্যালকনি পেরিয়ে উত্তাপে সাক্ষী হয় আমার সময়ের তফাৎ বিছিন্ন হয়ে ঝুপ করে শব্দের দিন শেষ হয়। তোমার যে গল্পে নির্বিকার সব চরিত্র তার পর্বের মাঝে নিজেকে গুছিয়ে নিই,…

চরিত্র – তাপসকিরণ রায়

আমার ছিঁড়ে যাওয়া পকেটে একদিন তোমার প্রেমপত্র ছিল প্রেমিকা বদলাবার আগে আগুনে জ্বালিয়েছি সব— আমি কথা।  রাত্রি জেগে ছিলাম মনের দ্বন্দ্ব চলছিল জানি বিস্তৃত বলে গেল তার তর্জমা সাধারণ নামের মাঝে ব্যর্থতা তুমি তাকাও নি অথচ সাজানো ছিল পবিত্রতা তোমার নাক নথির কারুকাজে ধরা ছিল আমার চরিত্র।

খিলান – সৌরদীপ গুপ্ত

খিলানে হেলান দিয়ে এলোচুল বসন্তকে বসিয়ে রেখেছি ওকে নিদারূণ শাস্তি দিও, জালের এপার থেকে ওর পৌরুষ ঢেকে দিয়েছে পেলব অমৃতগন্ধ তারুণ্যের অমোঘ প্রকাশ খিলানে হেলান দেওয়া বসন্তবিকেলগুলো, রাতভর জেগে থাকা জেনে নিক, নিয়মের বাইরে থাকা শাস্তিভোগ হয়ে যায় তোর দেশে বসন্তের হাতে থাক নির্বাক অসীম আকাশ।

অভিন্ন – অরিন্দম ভাদুড়ী

মেয়েদের শরীরে আলাদা আলাদা গন্ধ থাকে, মুখের আর বুকের গন্ধ একরকম না। প্রতিটা মেয়ের ঘামের গন্ধ আলাদা, ভিন্ন তাদের আবেদন, ইশারা। প্রতিটা মেয়ের স্বপ্নের একটাই গন্ধ- “মাটির হোক, আমাকে একটা ছাদ দিও”

একজন পৃথিবী বিক্রেতা – শুভ্র সরকার

এরপর, অনধীত সমগ্র বর্ষার পতনধ্বনি— একজন পৃথিবী বিক্রেতার ঘুমসংক্রান্ত দুঃস্বপ্ন বিচ্ছুরিত হ’য়ে পড়ে চতুর্দিক। দ্যাখো মানুষগুলো তলিয়ে যাচ্ছে ঘুমঘুম হিমে। মা’র ঘুম থেকে উঠে আসা হাঁসের পালকাবৃত পথের পাশে—তুমি একটা ‘স্নান’ রেখে গ্যাছো। একজন পৃথিবী বিক্রেতার জন্য রেখে গ্যাছো— শেকড়। দ্যাখো, রৌদ্রপ্রখর এক নির্জন জলাশয়ে শেকড় ছড়িয়ে আছে সূর্যাস্ত। আর তোমার বুকের বাঁ-পাশে সব আলো…

তুমি আছো বলেই – অর্ণব চট্টোপাধ্যায়

তুমি আছো বলেই ফেরা হয়ে ওঠে… ছায়ার আদর পায় ক্ষুধাতুর গাঁয়ের পাখিরা সমূহ ঘোরের শেষে আঁকাবাঁকা নদীপথ চিনে চিনে,জীবনের পাঠ.. ঢেউয়ে ঢেউয়ে নীল শিখে নেওয়া… যেটুকু নিবিড় দিয়ে জড়িয়েছো খুব, সেটুকুই আমার পৃথিবী হয়ে শ্বাস নেয়.. বেঁচে থাকে প্রবাহের মত.. আমি তো সামান্য বড়.. আমি তো সামান্য…

রোকেয়া বেগম – অভিজিৎ চৌধুরী

রোকেয়া বেগম -অভিজিৎ চৌধুরী ১ এতো গভীর কালো রং আমি খুব কম দেখেছি। ঠোঁট, চিবুক, হাতের নখগুলি, পায়ের পাতা সবটাই কালো।চুলও কালো, তবে অগভীর ও পাতলা। কোনদিন জবাকুসুম, কেয়োকার্পিনের গন্ধ পাইনি। নাকে নোলক নেই, কানে দুল অনেক দিনের রং ওঠা । হাতেও কখনও কোন কংকন দেখিনি। আমি বললাম, কি নাম যেন তোমার, ভুলেযাচ্ছি । নত…

চাঁদের চোখের জল – অপর্ণা গাঙ্গুলী

চাঁদের চোখের জল দেখলে আমি কষ্টে থাকি | কতবার দিদিমাকে বলতাম – ওই চাঁদের মধ্যে কালো কালো কী সব গো ? দিম্মা বলতেন ও সব নিয়ে ভেবো না | ওসব চাঁদের এলোমেলো মনখারাপি | ইস্কুলে বকুনি ঝকুনি খেলে তোমার যেমন মুখ কালো হয়ে থাকে আর কী ! আহা গো চাঁদ বকা খায়? কার কাছে, আকাশে…

ভজনলাল – জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

না, কোনওরকম অতিচালাকীর নিতিশিক্ষা দেওয়ার দায় নেই তার। সে পড়ে পড়ে ঘুমোয় না যেখানে সেখানে। কোনওদিনই এমন করেনি। সে আসেনি। খরগোশ আসে নি। এখানে শুধু একটা কচ্ছপ আর একটা শামুক আছে। তারা এগোচ্ছে। এগনোর জন্য মরিয়া, অন্য জনকে টেক্কা দেওয়ার জন্য প্রচণ্ড চেষ্টা। এরাও কেউ মাঝপথে ঘুমোবে না। কেউ শর্ট কাট নেবে না। প্রতিযোগিতার কারণ…