শিবসাগর দেবনাথের পাঁচটি কবিতা

শেয়ার করুন

পরমাণু

তোমাদেরও হারাবার আগে
জেনে রাখি, অনিশ্চয়তা প্রকৃত সামান্য বিষয়
সংখ্যালঘু বৃষ্টির ভয়ে যেরকম জলাধার হয়

মহাকাশ আমাদের বিনয়-যাজক
অশেষের মাঝে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শেষ হই রোজই

—এই জ্ঞান যুগপৎ ভয় ও ভুলের,
যেভাবে দেহাতি ভোর
দূরোদয় মোরগের ডাক আদায় করেছে

…ও বধির স্কুল

নিজের ফাটলগুলি কখন-ই বা আলোয় ধরেছি?
বোতাম ঘরের তীরে বাড়ন্ত ববিনের সায়
যে আমি তস্য বধির, অচিরেই চেয়ে নিতে পারি:
সান্ধ্য অধরে হই সংকীর্তন

—জলের বিকল্প, কেন আরও আরও জল?
—(নিরুত্তর ছাত্রের চোখ)

তোমার ওই চলে যাওয়া ন্যুব্জ বিকেল,
মন্দাক্রান্তা রোদ…

আ লোটোস ইটর

তালুতে রোদের ছাপ উপমা বনেছে।
হেমন্ত সন্নিকট

কম্পমান হাওয়াদের নীচে কেন্দ্রীয় সড়ক যোজনা
শীর্ণ চার্চঘর, উহার গ্রীবার মতন
আরও শীর্ণ কাঠের মোরগ―
কোনদিকে যাব?

আমি সামান্য মানুষ, ধান ও গমের ’পরে বাঁচি
তবু এ মুহূর্ত দৈব আমার
নিজহাতে রজ্জুর মতো ধরে আছি নিজের নিয়তি
কোনদিকে যাব?
—এ প্রশ্ন গৌণ আপাতত
থেমে থাকা রোমাঞ্চ এখন…

টেন্স

অসংখ্য দৃষ্টান্ত মতে, জীবকুল আশ্চর্য মুখর ও প্রবণ।
তবু প্রকৃত আশ্চর্য আছে ভৌত ও জড়ের নিহিতে
বুঝি, সময়ের বয়ে চলা পরম চমক

নভেম্বর সেভাবে পড়েছে
অতঃপর শুধু উপরে চড়বে—
ইতস্তত রোদ
যেন বাকি সন্ধের পড়া
আর মাস্টার বেতপ্রিয় জেনে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা হোক

অল্প, অল্প সমীর
গাছ হতে ঝরে পড়ে পত্রমিতালী।
ঝরে পড়া কখনোই বড়ো কথা নয়,
বড়ো নয় এখন দহন

দি লাস্ট সাপার

যা কিছু না-ভেবে হল
তা কি শুধুই কপাল?
পা দুটি নয়? হাঁটাপথ মেনে নিল যারা?

ম্যাটিনি শোয়ের শেষে যামিনী হোটেল
রান্নাঘরের সোনাটা পেরিয়ে
কীভাবে যে ঝোল চলে এল!

প্রশ্ন জেগেছে।
কিন্তু ঘুম, খাদ্যোত্তর, অভ্যাসে কবেকার রিফু

আমি সে ঘুমের কাছে, ঘরে ফিরে যাব
আমি কি ঘুমের পর তোমাকেই পাব?

শেয়ার করুন

Similar Posts

4 Comments

  1. খুবই ভালো লাগল।

    Especially the titles of the poems, I would say, are brilliant.

  2. অপূর্ব, প্রথম লেখাটি আমাদের ভবিতব্য। তা জেনেও শেষ লেখায় এসে স্বপ্ন দেখার ইচ্ছে যেন যায় না মানুষের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *