গর্বিত বাঙালি – অলোকা

গর্বিত বাঙালি – অলোকা

বাড়িতে ফিরেই একটা দ্বন্দ্ব যুদ্ধ বেঁধে গেল। পরমা এমনিতে খুব একটা কথা বলে না। শান্তিতে থাকতেই ভালোবাসে। কিন্তু, অহেতুক অশান্তি একদম ভালো লাগে না। রান্নার লোককে ঝাল ছাড়া তরকারীটা করতে বলা হয়েছিল। ছেলেটা খেতেই পারছে না। আর শাশুড়ি মা, যত বয়স হচ্ছে কথাবার্তা খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে যাচ্ছে। সারাজীবন ঝাল ঝোল খেয়ে এখন উনি নিজে…

সার্কাস – সৌগত দত্ত

সার্কাস – সৌগত দত্ত

১ম দৃশ্য- (স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এল ছেলে, বাবা চেয়ারে বসে পত্রিকায় মনোনিবেশ করে আছেন। ছেলে ব্যাগ কাঁধ থেকে নামিয়ে ছুঁড়ে ফেলে) ছেলে- ড্যাড, ইউ নো কাল কি? বাবা – তোকে বলেছি আমায় ওই বিলাতী কায়দায় ড্যাড বলবি না। ছেলে- হোয়াটএভার, কাল ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ ডে, স্কুলে সেলিব্রেশন হবে। বাবা- তা বেশ, কিছু করবি কাল?…

চাবি – মহেশ্বর মাজি

শিল্পীকে ডেকে একদিন তার শাশুড়ী বললেন। —-তুমি এ বাড়ির বড় বউ।এই চাবির গোছাটা আজ থেকে তুমিই সামলাও। শিল্পী প্রথমটাই একটু ঘাবড়ে গিয়েছিল।চোখ,মুখ দেখে সেটা তার শাশুড়ী খুব ভালো করেই টের পেলেন।তাই তিনি ধীর পায়ে শিল্পীর কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন।তারপর নরম হাতটা শিল্পীর মাথার উপর একটুখানি বুলিয়ে বলে উঠলেন। —-এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই মা।আমি তো আছি।আমার…

পারমিতা ও একটি চিঠি – প্রতিমা সেনগুপ্ত

কল্যাণীয়াসু পারমিতা,   আজ প্রায় তের বছর পর তোমাকে দেখলাম। অনেক দিন বাদে একটা কাজে কৃষ্ণনগর যেতে হল। তোমার বিয়ের খবরটা পেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার শ্বশুরবাড়ি কৃষ্ণনগর – তা জানা ছিলনা। স্টেশনে টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্মে আসতেই, তোমাকে চোখে পড়ল। লেডিজ কম্পার্টমেন্ট যেখানে পড়ে, সেখানে সিটে বসে ছিলে। দূর থেকে দেখে মনে হল, আগের থেকে খানিক মোটা…

মা – সৈকতা দাস

মা, এবার কি আপনার খাবার নিয়ে আসব? চমকে উঠলেন বাসন্তী দেবী। একমনে চশমার কাঁচটা মুছছিলেন তিনি। আজকাল বড্ড ঝাপসা লাগে সবকিছু। যাও, আমি যাচ্ছি। বলেই উঠে পড়লেন তিনি। আশ্রমের সবাই হয়ত অপেক্ষা করছে তার জন্য। এই মৌ মেয়েটি খুব ভালো। সবসময় তাঁর খেয়াল রাখে। না! আজ আর দেরী করা যাবেনা। কাল সকালে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক…

দেবমহিমা – দেবাশিস মুখার্জী
|

দেবমহিমা – দেবাশিস মুখার্জী

বিকেল গড়িয়ে সন্ধে হতে চললো, গাছের ছায়াগুলো কেমন লম্বা লম্বা হয়ে মন্দিরের গায়ে দুলছে…আকাশে মেঘ জমছে, দূরে হয়তো কোথাও বৃষ্টিও নেমেছে…হাওয়ায় কেমন একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভিজে ভাব। দিনের এই সময়টা এই বুড়ো শিবের মন্দির খালিই থাকে, গ্রামের এক প্রান্তে এই মন্দির, পাশের রাস্তা সোজা গেছে নদীর ঘাটে, ঘাটে নৌকো ভিড়লে কিছু লোক চলাচল করে এই…

শূণ্য সময়ের প্রফেট – পিয়াল রায়
|

শূণ্য সময়ের প্রফেট – পিয়াল রায়

দিবান যদি বলতেন পশ্চিমে যাও, তাহলে হয়তো পশ্চিমেই যেতাম। যদি পূর্ব, দক্ষিণ বা উত্তরের কথা বলতেন যেকোনো দিকেই বসতি হতে পারতো আমার৷ কোনো সূর্যোদয়ের দিনে জন্ম হয়নি দিবানের৷ কোনো মধ্য সূর্যের দিনে তাকে দেখা যায়নি শিশুদের নিয়ে হাঁটতে। দিবান তো আসলে একা একটা মানুষ। ঠিক পরিত্যক্ত প্রাচীন শহরের মতো। যার কোনো দেশ নেই; মাটি নেই;…

কৃষ্ণকলি – সন্দীপা সরকার
|

কৃষ্ণকলি – সন্দীপা সরকার

সময়টা ১৯৫৭ আমি  তখন সদ্য ইংল্যান্ড থেকে গ্রামে ফিরেছি৷পেশায় ডাক্তার৷ ডাক্তারি ডিগ্রি আনতে পারি দেওয়া ইংল্যান্ড৷দাদুর আদেশ মতন অনিচ্ছা সত্বেও ফিরে আসতে হলোদেশের বাড়ি কাটোয়া…… কাটোয়ার জমিদার বংশ আমাদের৷দাদুর বলাই ছিল পাশ করেই গ্রামের লোকের সেবার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে হবে৷দাদুর বানানো দাতব্যচিকিৎসালয় তে গিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করে দিলাম৷৷   সেই সঙ্গে শুরু হলো…

অপরাজিত অপু – নূর নাজমুল

গ্রামের নাম গৌরীপুর। গৌরী কন্যার মতই তার রূপ। প্রকৃতি তার রূপের সমস্ত উপচার দিয়ে রূপসী করে তুলেছে গৌরীপুরকে। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ,ছুটে চলা নদী,সবুজের ছায়াবীথি তার রূপে যোগ করেছে অনন্য মাত্রা। জেলা শহরের অদূরের মেঠোপথ ধরে নদী পেরুলেই দু চার  গাঁ পরে গৌরীপুর। গৌরীপুরে একসময় হিন্দু মুসলমান সুখে শান্তিতে বাস করত। কিন্তু দেশ বিভাগের সময়এগাঁয়ের অনেকেই…

মিছিল – অমৃতা রায়

-“সবাই রেডি? গুছিয়ে নিয়েছিস সব? প্ল্যাকার্ড রেডি?” -“সব গোছানো আচ্ছে শুভদা! কালকেই গুছিয়ে রেখেছি তো!” -“তবু আরেকবার দেখে নে ভাই! একবার বেরিয়ে পড়লে তখন কিন্তু আর ফিরে আসার সুযোগ নেই! তখন এটা নেই, ওটা পাওয়া যাচ্ছে না, করলে চলবে না!” -“কোনো চাপ নেই দাদা! সবকিছু গোছানো আছে!” -“ওকে! স্নিগ্ধাদি! তোমরা সবাই রেডি তো?” -“একদম!” -“একটা…