ভালো খারাপ – রিয়া মিত্র

শেয়ার করুন
স্কুলের বাইরে ছাত্রীদের মায়ের একটি জটলা রোজই বসে। নিজের মেয়েদের স্কুলে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ গল্প করে তারপরে বাড়ি ফেরে সকলে। অনেকে বাড়ি না ফিরে সারাদিনও অপেক্ষা করে।

“তনিমার মেয়ে তানিয়াটা সত্যিই খুব ভালো, শান্ত, নম্র, ভদ্র স্বভাবের”। আজকের আলোচনায় নিজের মেয়ের প্রশংসা শুনে বেশ গর্বই হয় তনিমার। শেলী পাশ থেকে টোন কেটে বলে, “কিন্তু ও যে মেয়েটার সাথে সবসময় মেশে, রাখীর মেয়ে পম্পা, ও কিন্তু ভীষণ চঞ্চল, ছেলে-ছেলে হাবভাব, ক্যারাটে শেখে আর স্কুল থেকে মাঝে মাঝেই অভিযোগ আসে যে, কাউকে পম্পা ক্যারাটের প্যাঁচ্ মেরেছে।” দূর থেকে রাখীকে আসতে দেখে চুপ করে যায় ওরা। রাখীকে দেখে তনিমার বেশ রাগই হয়। ঠিক করে ফেলে, মেয়েকে আর পম্পার সাথে মিশতে দেওয়া চলবে না।
স্কুল ছুটি হলে মেয়েকে আনতে গিয়ে দেখে, হৈ হৈ কাণ্ড। সকলে প্রিন্সিপাল ম্যামের রুম ঘেরাও করেছে। ওনার রুমেই তানিয়া আর পম্পাও রয়েছে। তনিমা ভয় পায়, “হে ভগবান, নিশ্চয়ই রাখীর মেয়েটাই কিছু করেছে।”
মাকে দেখে ছুটে এসে কাঁদতে কাঁদতে তানিয়া বলে, “মা, টিফিনের সময় যখন সবাই মাঠে খেলতে গিয়েছিল, আমি ক্লাসে একা ছিলাম, ঐ কাকুটা তখন আমার গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে”, বলে দূরে মুখ নীচু করে দাঁড়ানো স্কুলের এক কর্মচারীকে দেখায়। ভয়ে তনিমার মুখ শুকিয়ে যায়। পাশ থেকে পম্পা বলে, “আর কাকিমা, তখনি আমি জল খেতে ক্লাসে আসি। এই ঘটনা দেখে, দিয়েছি কাকুকে ক্যারাটের দু’ প্যাঁচ্।” লজ্জিত, অনুতপ্ত তনিমা পম্পাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে…
শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *