পার্থপ্রতিম মজুমদারের পাঁচটি কবিতা
লাহিড়িপুর
উৎসর্গঃ ৺প্রশান্ত রায়চৌধুরী
কতখানি দূর?
সে লাহিড়িপুর?
আজও কি সেখানে
ভয় এসে নামে?
জোছনার আলো
পড়ে নদীতীরে?
লঞ্চ ছুটে যায়
আঁধারকে চিরে?
এইসব কথা
আগে অন্তত
কেউ একজন
সঠিক জানত
আজ সে-ও নেই
পড়ে আছে হাওয়া
ফুরিয়েছে আজ
সব চাওয়া-পাওয়া
তবু আজও আছে
সে লাহিড়িপুর
কত কাছাকাছি
তবু কত দূর !
পরিপার্শ্ব
যা তোমার চারপাশে তুমি যেন তারই ঘটনা
জলের গভীর ভেঙে সীমাহীন উঠে আসা জল
ছুঁয়েছি সেখানে তবু জানি তার নেই কোন সীমা
সারাটা জীবন ধরে যত কথা নীরব, বিফল
তবু সাগরের ঢেউ সারাদিন ওঠে আর পড়ে
অবাধ বাতাস শুধু কথা বলে যায় তার সাথে
জীবনেও কত বাঁক, ছবি দেখি যায় শুধু সরে
আকাশ-আঁধারে তবু দু’একটি তারা জেগে থাকে
এভাবে জীবন যায়, তরঙ্গ ওঠে আর পড়ে
দূর থেকে দূরে শুধু সরে যায় বন্ধুজন হাওয়া
তোমার কথাই শুধু ভেসে ওঠে মনের এ-ঘরে
এত যে তোমাকে চাই তবু জানি হবে না তো পাওয়া
যে তুমি তোমার নও, যেন শুধু তারই উপমা
যা তোমাকে ঘিরে আছে, তুমি যেন তারই ঘটনা … …
দংশন
তাহার দুই চক্ষু পিঙ্গল, সবুজ। চেরা-জিভ… হিস-হিস শব্দে বুঝি তিনি আছেন। জড়িয়ে-মড়িয়ে, আমার সকল অস্তিত্বে।
যাহা অন্যে অনায়াসে পাইয়া থাকে তাহা কেন আমার অধিগত হইবে না এই প্রশ্ন আমাকে নিরন্তর দগ্ধ করিতে থাকে… পুঞ্জীভূত অসন্তোষ ধূ্মায়িত হইয়া উঠে…
আমি টের পাই তাহাকে… তাহার বিষাক্ত ছোবল আমাকে উপর্যুপরি দংশিতে থাকে… ঈর্ষা আমাকে খায়… আমিও তাহাকে… …
বন্ধুকে… যে আর বন্ধু নেই
সেসব দিনের কথা আজ
সহসাই পড়ে গেল মনে
স্বপ্নরঙিন সেই দিন
ভুলব কি করে কে বা জানে!
দুইজনে কত কথা আর
অনায়াস হাসি আলোময়
সব আজ ভীড় করে আসে
বরষাপীড়িত সন্ধ্যায়
যদিও ছাড়লে আজ হাত
ভালো থেকো হে প্রিয় স্যাঙাৎ… …
বিনয় মজুমদার
ক্রমশ রোদ্দুর আসে, হাওয়া
টানে তাকে বুকের গভীরে
যে আলোয় শুধু আলো আছে
যার কাছে সব যায় চাওয়া
কবি কাকে বলে জানি না তো!
তুমি কবি, কভু নও ক্লীব
আমাদের এ মর-জীবনে
তুমি ছিলে, এ কি কম-পাওয়া!
সবাই আগলে রাখে ঘর
তুমি তার সপাট থাপ্পড়!