কুণাল বিশ্বাসের পাঁচটি কবিতা
অনুষঙ্গ
ছিন্ন হও প্রেম — আমাকে সুযোগ দাও
এসো গান করি
বাতাবিসকল, পটভূমি জুড়ে ভোরের প্রথম ফুলকপি
আনাজ, বাসনজল, তামা — সকলেই খুঁজে নেয় আলো
তোমাকে এককথায় প্রকাশ সম্ভব নয়
জামরুল তলায়, প্রসূতিসদনের ছাদে মেঘ করে আসে, দ্যাখো
ঘামে ভেজা শরাফত আলির কবর… ফুটে আছে ঘুম
আমরা সকলে আজ ধীবরচরিত পড়ি
এই পথে আসে গাড়ি, পৌরাণিক চাকা, দেবতার ফল
… ঈশপের গল্প থেকে করোজ্জ্বল রোদ
ছাঁচি পেঁয়াজের কথা ভেবে চোখে জল আসে
ছোটোবউ
ঘন মেঘ ছুঁয়ে থাকা পুকুরের বোন যেন তুমি
ওদিকে পাগল ঘোরে, অবিরাম ছোটে, চকিতে লুকায় তার ক্ষত
তোমাকে শোনাব তাই খুঁজেছি নতুন কোনো গান
সেখানে গোলাপ নেই, মালবেরি হৃত, ছোটো ছোটো ঘাসেদের ফুল
ভোরবেলা ব্রতচারী করে
সেখানে দুপুরে খুব ছায়ানীল জলের মুকুর
ধীরে আসো চালাঘরে, খড়ের গাদায় দেখো বিড়ালের ঘুম
বিকেলে তোমাকে নিয়ে ঘুড়ির মতন ঠিক উড়ে যাব দূরে…
আমন্ত্রণ
এসো, কিছুদিন থেকে ফিরে যেও
ফিরে চলে যেও নিজের ভুবনে
তোমার কারণে এই গান
তুমি খাবে তাই কুঁচো মাছ
শেষ পাতে টকশাক, চাটনি ও ঝাল
তোমার ফেরার দিন
গাছের নরম ছায়া বাতাসে ছড়াবে
কমজোরি রোদ, সারাদিন জল…
নিষাদের মীড় ছুঁয়ে যাবে কোমল রেখাবে
প্রত্যক্ষ
শাদা পৃষ্ঠা কখনও বিবর্ণ নয়, আমি জানি
এই বাগানের কথা, প্রসন্ন মালির মুখ
বাছুরের প্রতি খড়ের অভিনিবেশ
স্পর্শ বিঘ্নিত হয় না, এমনভাবে
গাছের ফুলে একটি সতেজ পোকা ঝুলে আছে…
হাওয়ায় — রৌদ্রের ফাঁকে তার নিয়তি লিখেছে জল
ইন্দ্রপ্রস্থ
তোমার বাড়িতে প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে যায়
পোষা কুকুরের গন্ধে ভারী ছিল মেঝে
হামাগুড়ি দিয়ে বারান্দায় চলে গেল বুড়ি
সে-ও এখন স্নাতক ভূবিদ্যায়
শ্রীতমা কেমন আছে
রসুনের ঝাঁজে তার ম-ম সংসার
নতুন কাসুন্দি ভরা তাক…
তখন বিকেল, বেতারে ফুরিয়ে গেছে পুরোনো দিনের গান
ভালো
মারাত্মক সুন্দর
অপূর্ব মায়া জড়ানো প্রতিটা লেখা। অনেক অনেক মুগ্ধতা। বাংলা ভাষাকে আরো ভালবেসে ফেলি এমন লেখা পড়ে।
ভালো থেকো। ভালোবাসা!