আমি এক অতি সাধারন মেয়ে,,
শরৎ বাবু, রবি বাবু অথবা হালের সুবোধ বাবু
কেউই আমায় ধর্তব্য়ের মধ্যেই আনেন নাম।
কি বললেন?
কাব্য এ উপেক্ষিতা?
ও উপাধি ও খাটে না আমার জন্য….
মেয়ে জন্মের যাবতীয় উপেক্ষা
আর অবহেলা সত্বেও
প্রাকৃতিক নিয়মেই যৌবন এসেছিল….
দেহে, মনে…
বলে না যৌবনবতি কুক্কুরিও সুন্দরী?
আমি তখন উদ্ভিন্ন যৌবনা
আমি তখন ষোলো….
জানেন পাড়ার স্কোলার ছেলে সন্জয়,
আমায় ভারী পছন্দ করতো,
পূজোর পান্ডালে বা গঙ্গার পাড়ে
আমার দু চোখে এঁকে দিত মোহের অঞ্জন ।।
আমি বাস্তব ভুলে ভেসে যাই
কথার মাধুর্যে
কথার চাতুর্যে!!
তারপর মজার কথা কি জানেন?
বোকা মেয়েটা কে আরো বোকা বানিয়ে
ওর ফুল সাজানো গাড়ি
আমার চোখের সামনে দিয়ে চলে গেল
শুভ বিবাহ সু সম্পন্ন করতে।
ইতিমধ্যে তিন দিনের জ্বরে
কনভালসন হয়ে বাবাও চলে গেল।
মা আর ভাইয়ের সব দায়িত্ব মাথায় নিয়ে
আমি ছাতা হয়ে থাকি,
ছাতার নিচে সুখে বাঁচে
আমার ঘর….
আমার ছাত্র চড়ানো টাকায় চলে সংসার,
আমার বাঁচানো হাত খরচে কেনা হয় ভাইয়ের বই…
তবু জানেন, সময় বইতেই থাকে…
আজ আমার ভাই প্রতিষ্ঠিত,
আর আমিও মধ্য চল্লিশে….
সবাই বলে আমার লড়াই সার্থক ।।
কি বোলবো আপনাদের
বলতেও লজ্জা করে,
আজকাল বড্ড লোভ হয়
নিজের জন্য বাঁচতে…
নিজের নারীত্ব কে পূর্ণতা দিতে।।
মা হবার অনুভূতি টা কেমন কে জানে?
বলেন কি মশাই
নতুন করে ভাববো?
ঢি ঢি পড়ে যাবে না!!!!!
ভাইয়ের শ্বশুড়বাড়িতে মায়ের মুখ ছোট হবে না?
থাকবে অফিসে ক্লাবে ভাইয়ের সম্মান?
কি আশ্চর্য এখনও কিছু আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে দেখলাম!!!!!
তাই তেসরা জুনকেই বাছলাম….
সন্জয়ের বিয়ের দিন ।
গলায় ঢাল লাম
ঢেলেই দিলাম,
চিরাচরিত ফলিডল….
বেশ হাল্কা লাগছে,
মেচেতার দাগ গুলিও যেন মিলিয়ে গেছে….
অপার শান্তি….
নিষ্কৃতি….
মায়ের জন্য খারাপ লাগছে?
ধুসসস!!!!
ও তো আচারে পিঁপড়ে ধরলেও কাঁদে
আজ না হয় নতুন ইসু পাবে।
ইসসসস!!! কেও যদি থাকতো
যাকে বলা যেত,
“হে বন্ধু বিদায়”
চোখে আঁধার নামছে….
জিভ সীসার মতো ভারী…
কলম খসে পড়ছে…
“মরণ রে তুঁহু মম…….