নারীর প্রতি – শাহিন চাষী
তুমি চাইলেই পায়ের শিকল
ছিঁড়তে পারো নির্দ্বিধায়
যেমন ছেঁড়-সেলাই সুতার।
তুমি চাইলেই প্রদীপ জ্বেলে
মুছে নিতে পার অবলীলায়
তোমার যাবতীয় অন্ধকার।
কে দেয় তোমাকে বাঁধা?
কে রোখে তোমার পথ?
তুমি তো আমার জীবন সত্ত্বার
জ্যোতির্ময় অহংকার।
সাহসিনী হও, কেটে যাবে মেঘ,
বাতাসে মিলাবে অনাহুত দীর্ঘশ্বাস,
দিগন্তে আসবে আলোর বাণ।
তুমি জাগলেই তোমার সীমান্ত জুড়ে
বসন্ত বেপরোয়া উচ্ছল-
পাখিরা গাইবে সুরেলা গান।
কে তোমারে দিবে অশ্রুজল?
কে রাখে ও মুখে অগ্নিচোখ?
তুমি তো আমার চেতনার রেখায়
প্রেরণার মহীঢাল।
কেঁচোর খোলস ছুঁড়ে ফেল অসংকোচ,
ভুলে যাও আরশোলার ঘৃণ্য সাজ-
নাড়ি ছেঁড়ার সেই প্রত্যয়ী মনে।
তুমি জেগে ওঠো বিজয়ের অভিযানে,
সাজিয়ে নাও নিজস্ব বাগান-
আপন হাতে, শক্তি ও মননে।
কেন তুমি হবে কাঙালিনী?
কেন চাও করুণা কলঙ্ক দাগ?
তুমি তো মাতা, কন্যা,বোন, প্রণয়িণী
পুরুষের হৃদয় কোনে।
তুমি ভাবলেই তোমার ভূবন স্বপ্নময়,
চির শৈল্পিক নিঃসর্গ জলছবি-
চির কাব্যিক উপমা ভরপুর।
তোমার ইচ্ছের আপোসহীন বিপ্লবে
ভেসে যাবে অনাঙ্খার অপছায়া,
আসবে উদ্ভাসিত আলোর ভোর।
কি মোহে বন্দিনী তুমি?
কি ভয়ে সরীসৃপ,উরগ?
তোমারও আছে স্বাধীন শক্ত পা,
তুমি হেঁটে যাও বহুদূর।