সোনালী ঘোষের গুচ্ছ কবিতা : এসো চরণ ধুয়ে দিই

শেয়ার করুন

এসো চরণ ধুয়ে দিই

১.
অনিবার্য। আড়মোড় ভাঙছে প্রিয় শব্দগুচ্ছ… এখন উত্তরায়ণ। হরিতকীর বন থেকে উঠে আসা হাওয়া ফুঁ দিয়ে নিভিয়েছে বোধ। উপচে পড়া ঘুম খুঁটে খাচ্ছে চোখহীন একটি ঝুঁটিওয়ালা মোরগ… দ্বিতীয়বার তথাগত, জ‍্যোৎস্নার প্রপাতের কাছে নিয়ে চলো। যেখানের দুরন্ত স্রোতে পাঠ করেছি বহু অধীত বিদ‍্যা আর তোমার পায়ের কাছে ফোটা সেই সেই পদ্মখানির আকর্ণ হাসি…

২.

যাবতীয় বিশ্বাস ভেঙে গেলে সমুদ্র গর্জন। অথচ অপরিমেয় আলোরধারাও ছিল একদিন। কতদিন ভুলে থাকা যায় সেসব? অকালেও পাখি ডাকে। কে তাকে করবে বারণ। ঘাতক চিনি না বলে প্রায়ান্ধ উন্মাদের মতো ব‍্যথার তোলপাড়, আর আশ্চর্য হলুদ ফুল ওড়ে মনে। সেই তো নিকষিত প্রেম অথবা অভিশাপ। চরাচরে অলীক মায়া, নূপুরহীন পায়ে জলের ছমছম…

৩.

এ শরীর ভাঙো। ভাবো শূন‍্যতা ছাড়া নিভৃতে পুড়িছে কে? এ রন্ধ্র পথে শুধু বেনোজল। “স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ‍্যামা…” শস‍্য সাধনা বৃথাই, আমায় চৈতন‍্য দাও হে। না পারো নিয়ে চলো বহুদূর বিন্দুর গর্ভে। যেখানে তীব্র রূপ আর পুঞ্জ পুঞ্জ আলো…. তুমি নির্বেদ, এসো চরণ ধুয়ে দিই।

৪.

যে জলে জন্মদাঁড় বেয়ে ঈশ্বরী আসেন তিনিই তো মাতৃরূপেণ সংস্থিতা। ঘূর্ণির ভিতর অভেদ‍্য মায়া। আয়ুভুক স্নেহ ওঠে ভেসে। দেখ আশ্চর্য পাখি ঠোঁটে করে নিয়ে তাকে বহুদূর… নেশা লাগিল রে… ওগো ভেসে যাওয়া সাদা পালক, তুমি শুভ সংবাদ এনে দিও।

৫.
আঁধার। দয়াল রাখিলে আলো
রমণে দেখি পদছাপ।
কী নিঃশব্দ কী অসীম ব‍্যথা
ধুলোর বুকে…
এ যেন অসম সাধনা কাহার।

মন তুই বল ফেলে যাই কাকে ব‍্যবধানে?

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *