তুমি আছো বলেই – অর্ণব চট্টোপাধ্যায়

তুমি আছো বলেই ফেরা হয়ে ওঠে… ছায়ার আদর পায় ক্ষুধাতুর গাঁয়ের পাখিরা সমূহ ঘোরের শেষে আঁকাবাঁকা নদীপথ চিনে চিনে,জীবনের পাঠ.. ঢেউয়ে ঢেউয়ে নীল শিখে নেওয়া… যেটুকু নিবিড় দিয়ে জড়িয়েছো খুব, সেটুকুই আমার পৃথিবী হয়ে শ্বাস নেয়.. বেঁচে থাকে প্রবাহের মত.. আমি তো সামান্য বড়.. আমি তো সামান্য…

সম্পর্ক – বিশ্বজিৎ

এত কাছাকাছি তবুও দূরত্ব… প্রতিবার বিরাম ডেকে আনে। এতদিন ধরে যে বিশ্বাস তৈরী করেছ ভ্রমণের একটা ক্ষেত্র… মুহূর্ত শাসন করছে,দুমড়ে যাচ্ছ ক্রমশ নিরাপদ…পেতে গিয়ে আরও ধাক্কা অনুভূতিজুড়ে

ছায়ান্তর – দীপায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়

ঘুমের আগে নিয়ম করে শাস্তি নামে নোনতা বালিশ আর উষ্ণ বুকের নীচে। অলীক সমান্তরাল যে জ্যোৎস্না উঁকি দেয় আমি তার ফেরৎ পথে দরজা খুলে রাখি। শহর, ফ্ল্যাট, ব্যালকনি পেরিয়ে উত্তাপে সাক্ষী হয় আমার সময়ের তফাৎ বিছিন্ন হয়ে ঝুপ করে শব্দের দিন শেষ হয়। তোমার যে গল্পে নির্বিকার সব চরিত্র তার পর্বের মাঝে নিজেকে গুছিয়ে নিই,…

চরিত্র – তাপসকিরণ রায়

আমার ছিঁড়ে যাওয়া পকেটে একদিন তোমার প্রেমপত্র ছিল প্রেমিকা বদলাবার আগে আগুনে জ্বালিয়েছি সব— আমি কথা।  রাত্রি জেগে ছিলাম মনের দ্বন্দ্ব চলছিল জানি বিস্তৃত বলে গেল তার তর্জমা সাধারণ নামের মাঝে ব্যর্থতা তুমি তাকাও নি অথচ সাজানো ছিল পবিত্রতা তোমার নাক নথির কারুকাজে ধরা ছিল আমার চরিত্র।

খিলান – সৌরদীপ গুপ্ত

খিলানে হেলান দিয়ে এলোচুল বসন্তকে বসিয়ে রেখেছি ওকে নিদারূণ শাস্তি দিও, জালের এপার থেকে ওর পৌরুষ ঢেকে দিয়েছে পেলব অমৃতগন্ধ তারুণ্যের অমোঘ প্রকাশ খিলানে হেলান দেওয়া বসন্তবিকেলগুলো, রাতভর জেগে থাকা জেনে নিক, নিয়মের বাইরে থাকা শাস্তিভোগ হয়ে যায় তোর দেশে বসন্তের হাতে থাক নির্বাক অসীম আকাশ।

অভিন্ন – অরিন্দম ভাদুড়ী

মেয়েদের শরীরে আলাদা আলাদা গন্ধ থাকে, মুখের আর বুকের গন্ধ একরকম না। প্রতিটা মেয়ের ঘামের গন্ধ আলাদা, ভিন্ন তাদের আবেদন, ইশারা। প্রতিটা মেয়ের স্বপ্নের একটাই গন্ধ- “মাটির হোক, আমাকে একটা ছাদ দিও”

একজন পৃথিবী বিক্রেতা – শুভ্র সরকার

এরপর, অনধীত সমগ্র বর্ষার পতনধ্বনি— একজন পৃথিবী বিক্রেতার ঘুমসংক্রান্ত দুঃস্বপ্ন বিচ্ছুরিত হ’য়ে পড়ে চতুর্দিক। দ্যাখো মানুষগুলো তলিয়ে যাচ্ছে ঘুমঘুম হিমে। মা’র ঘুম থেকে উঠে আসা হাঁসের পালকাবৃত পথের পাশে—তুমি একটা ‘স্নান’ রেখে গ্যাছো। একজন পৃথিবী বিক্রেতার জন্য রেখে গ্যাছো— শেকড়। দ্যাখো, রৌদ্রপ্রখর এক নির্জন জলাশয়ে শেকড় ছড়িয়ে আছে সূর্যাস্ত। আর তোমার বুকের বাঁ-পাশে সব আলো…

পারমিতা ও একটি চিঠি – প্রতিমা সেনগুপ্ত

কল্যাণীয়াসু পারমিতা,   আজ প্রায় তের বছর পর তোমাকে দেখলাম। অনেক দিন বাদে একটা কাজে কৃষ্ণনগর যেতে হল। তোমার বিয়ের খবরটা পেয়েছিলাম। কিন্তু তোমার শ্বশুরবাড়ি কৃষ্ণনগর – তা জানা ছিলনা। স্টেশনে টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্মে আসতেই, তোমাকে চোখে পড়ল। লেডিজ কম্পার্টমেন্ট যেখানে পড়ে, সেখানে সিটে বসে ছিলে। দূর থেকে দেখে মনে হল, আগের থেকে খানিক মোটা…

মা – সৈকতা দাস

মা, এবার কি আপনার খাবার নিয়ে আসব? চমকে উঠলেন বাসন্তী দেবী। একমনে চশমার কাঁচটা মুছছিলেন তিনি। আজকাল বড্ড ঝাপসা লাগে সবকিছু। যাও, আমি যাচ্ছি। বলেই উঠে পড়লেন তিনি। আশ্রমের সবাই হয়ত অপেক্ষা করছে তার জন্য। এই মৌ মেয়েটি খুব ভালো। সবসময় তাঁর খেয়াল রাখে। না! আজ আর দেরী করা যাবেনা। কাল সকালে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক…

আয়না – শৈলেন রায়
|

আয়না – শৈলেন রায়

দেউতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুমের আয়না। আশ্চর্য, আয়নাটা এখনও আছে! আধ মানুষ সমান সেই আয়নাটা। আমরা বলতাম হেড স্যারের আয়না। হেড স্যারের ঠিক পিছনে একটু উঁচু করে টাঙানো ছিল দেওয়ালে। চার ধার সেগুন কাঠে  বাঁধানো, ম্যাড়মেড়ে পালিশ। ওখানে আয়না কেন, কোথা থেকে এল জানি না। জানার ইচ্ছেও হয়নি কোনও দিন। স্যরের ঘরের চেয়ার-টেবিল-আলমারির মতো আয়নাটাও…