মিলনের মহামেলায় – অম্লান চক্রবর্ত্তী
|

মিলনের মহামেলায় – অম্লান চক্রবর্ত্তী

“জগতের আনন্দযজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ”, ফেসবুক মেসেন্জারে যখন স্টকহলম হ্যালোউইন ক্লাবের তরফ থেকে মিস রেডভিল সরিতে আমাকে স্টকহলম প্রাইড প্যারেডে যোগদানের আমন্ত্রণ জানালেন তখন আমার মনে এসেছিল রবীন্দ্রনাথের ওই গানটিই। আমন্ত্রণ শব্দটির ব্যাখ্যা পরে করছি আগে প্রাইড প্যারেডের বিষয়টি বলি। সমকামী ও রূপান্তরকামীদের সমানাধিকারের দাবিতে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই (রাশিয়া, চীন, আরব দুনিয়া ও আফ্রিকার কিছু…

|

ইরিনা – পৌষালী সেনগুপ্ত

সময়টা নরম, মেদুর এক ঋতু। ঠিক শীতের শুরু আর হালকা – মাঝারি গ্রীষ্ম পেরোনো, মধ্য আমেরিকা। চারদিক কর্মব্যস্ত যথেষ্ট — তা সে কর্পোরেট অফিস জগৎ হোক কি অন্যান্য তিন, চার শিফটের কাজের দুনিয়া। বা, বাচ্চা কাচ্চাদের নিয়ে আরও ব্যস্ততম কোন মা এর পৃথিবী! এইসবের মধ্যে, একদমই রোমাঞ্চকর এক হলিউড মুভির মতোই —- হাহাহা!!, এইটুকু ভেবেই,…

|

আমার দুর্গা – সুমন চক্রবর্তী

আমার দুর্গা তন্বী তরুণী স্বরলিপিহীন গান আমার দুর্গা দৃপ্ত কৃষাণি কাস্তেতে বাধা তান।। আমার দুর্গা কবিতার লাইন অমিত্রাক্ষর বটে আমার দুর্গা ক্ষুধাতুর মুখ ময়নাপাড়র মাঠে।। আমার দুর্গা দৃষ্টিপ্রদীপ স্নিগ্ধ শিশিরকণা আমার দুর্গা দুর্বার ঝড় বহ্নি বীরাঙ্গনা।। আমার দুর্গা ক্রেমলিন গ্রাদ বাঁশি সঙ্গীত হারা আমার দুর্গা কারবালা মাঠ অমাবস্যার তারা।। আমার দুর্গা তৃষিত নদীর অধরা, স্খলিত…

|

অদ্ভুত আঁধার এক… – রেহান কৌশিক

পৃথিবীর জনতা তিন শ্রেণির। একদল ক্ষমতালোভী। যারা পৃথিবীর জল-মাটি-হাওয়ায় দখলদারি কায়েমের লক্ষ্যে বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। আরেক দল হল সাধারণ জনতা। গতানুগতিক সময় ও জীবনকে মেনে নিয়ে হেঁটে চলে। শোষিত হয়। কখনো অপেক্ষা করে পরিত্রাণের। কেউ যদি মুক্তির পথ দেখায়, তাকে সঙ্গ দেয়। নিজে থেকে পরিত্রাণের পথ আবিস্কার করতে পারে না। তৃতীয় দল হল বিপ্লবী। সমাজের…

স্মরণ – রুখসানা কাজল

আমি তোমার পায়ের কাছে বসে ছিলাম। স্বচ্ছ মশারি, তার ওপারে হালকা হলুদ দেয়াল । ডিম আলোয় ফ্যাটফ্যাট করছে শিল্পী শাহাবুদ্দীনের আঁকা স্বাধীনতা ছবির ডুপ্লিকেট কপি। বিবর্ণ অসুখী রাতে, দোলচেয়ারে বসে বসে টেবিল ল্যাম্প থেকে ছিটকে পড়া আলোতে ওই কাঁদুনে হলুদ ওয়াল দেখে ভাবতাম শিল্পী ভ্যান গঘ কী খেয়ে এই হলুদ রঙকে প্রিয় রং হিসেবে বেছে…

স্থাবর ও জঙ্গম – সারা বসু
|

স্থাবর ও জঙ্গম – সারা বসু

শুধু পিছলে যাওয়াটাই স্থির। শব্দ তুমি শব্দ তুমি চক্রবৎ। নোঙরমাত্রই যোজনা। বিপদে মোরে রক্ষা করো এ প্রার্থনা ছিলওনা দুর্বলের। কারণ বিপদের ঘাস জন্মায় না হাতের তালুতে। হাতে জব্দ, বাকিরা ভবিতব্য। দীপ্তিমান লুব্ধক দেখে পথ চলে। আমাকে তুমি নিয়ে চলো সখা,আমি পিচ্ছিল চিনিনা।

আয়না – শৈলেন রায়
|

আয়না – শৈলেন রায়

দেউতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রুমের আয়না। আশ্চর্য, আয়নাটা এখনও আছে! আধ মানুষ সমান সেই আয়নাটা। আমরা বলতাম হেড স্যারের আয়না। হেড স্যারের ঠিক পিছনে একটু উঁচু করে টাঙানো ছিল দেওয়ালে। চার ধার সেগুন কাঠে  বাঁধানো, ম্যাড়মেড়ে পালিশ। ওখানে আয়না কেন, কোথা থেকে এল জানি না। জানার ইচ্ছেও হয়নি কোনও দিন। স্যরের ঘরের চেয়ার-টেবিল-আলমারির মতো আয়নাটাও…

দেবমহিমা – দেবাশিস মুখার্জী
|

দেবমহিমা – দেবাশিস মুখার্জী

বিকেল গড়িয়ে সন্ধে হতে চললো, গাছের ছায়াগুলো কেমন লম্বা লম্বা হয়ে মন্দিরের গায়ে দুলছে…আকাশে মেঘ জমছে, দূরে হয়তো কোথাও বৃষ্টিও নেমেছে…হাওয়ায় কেমন একটা ঠান্ডা ঠান্ডা ভিজে ভাব। দিনের এই সময়টা এই বুড়ো শিবের মন্দির খালিই থাকে, গ্রামের এক প্রান্তে এই মন্দির, পাশের রাস্তা সোজা গেছে নদীর ঘাটে, ঘাটে নৌকো ভিড়লে কিছু লোক চলাচল করে এই…

ছদ্ম বৈপ্লবিক – অহিন্দ্রিলা মুখার্জ্জী

ছদ্ম বৈপ্লবিক – অহিন্দ্রিলা মুখার্জ্জী

চতুর্দিকে চাপ চাপ রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে মিত্রপক্ষ নাম দিয়েছে “বিপ্লবের রক্ত”! আর শত্রুপক্ষরা নানা নামে অলংকৃত করে চলেছে। বুদ্ধিজীবীরা স্ক্রিপ্ট হাতে তৈরী ক্যামেরার সামনে বসতে। প্রশ্ন করলাম তাকে “আমাকে একটু বুঝিয়ে দেবেন, একটি দুবছরের কোমল শরীরের রক্ত বিপ্লবকে ঠিক কতখানি সাফল্য মন্ডিত করবে??” অথবা ওই রাস্তার মোড়ের চা এর দোকানের দিদিমার রক্ত কতটা এগিয়ে দেবে…

ছায়ার বিস্তৃতি – সৈয়দ কওসর জামাল

ছায়ার বিস্তৃতি – সৈয়দ কওসর জামাল

মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে ঘৃণা, নেত্ররোষ অপলক, স্থির আর্ত দিন, ক্লিষ্ট রাত, আমাকে দণ্ডিত ভেবে করেছিল ভিড় টলোমলো এই ভূমে, আসলে তো সাক্ষী আমি – উন্মত্ত দম্ভের এই হত্যা-হত্যা খেলা, কষ্ট পাই, যেন গান – ব্যাহত সুরের, গুমরে গুমরে ঘোরে বিক্ষুব্ধ বাতাসে, তবুও যুদ্ধের কথা কান পেতে শোনে কেউ, রোমাঞ্চ খুঁজেছে কেউ, জানেনা – ব্যর্থতা প্রতিটি…