সে এক একাগ্র শীতের কথা – অতনু বন্দোপাধ্যায়
‘ঠিক বেড়িয়ে যাবার মুখে জ্যামিতি ভাঙল
বড় একটা বায়ুরেখা’
বারীনবাদের কোন শিষ্টাংশ নেই। কারণ এটা কোনো বাদই নয়৷ এটা একটা প্ৰকরণ৷ টুলস। যা কেউ ব্যবহার করতেই পারে নাও করতে পারে৷ এই প্রক্রিয়া কোনো ইজম এর ধার ধারেনি কোনোদিন তা বারীনের কবিতা পড়লেই স্পষ্ট বোঝা যায়৷ চেতনার ইঙ্গিত থাকে বলেই তার বহতা থাকে৷ বারীন সেটাই বলতে চেয়েছিলেন। কেউ এই বহতায় এলে সে চেতনকে অতিক্রম করে আরো বহুমাত্রিক চেতনের দিকে যাবেই৷ আর সেটাই হবে কবির নিজেকে খুঁজে পাবার পথ৷ না পাওয়ার উন্মেষ৷ তার একান্ত যাত্রাপথ৷ যে পথে কোনো বাধা থাকবে না৷ কোনো নিযেধ থাকবে না৷ আসলে বারীন নিজের কবিতাকেই ভালবাসতে বলেছিলেন বারবার৷ বলেছিলেন কবি শুধু অন্ধকারে পা ফেলুক আর তার নিজের তৈরী আলোতেই আবিষ্কার করুক বিষ্ময়৷ আনন্দ৷ কবি আরো নিমজ্জিত হোক৷ তার যেন কোনো পিছুটানই না থাকে৷ সে নিজের কথাটাই যেন বলতে পারে শেষ পর্যন্ত চেতনের উর্ধ্বে গিয়ে৷ নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়ে একদিন লিখে ফেলতে পারে সেই কবিতা যার জন্য এতটা পথ চলা৷ অ’পলক চেয়ে চেয়ে থাকা৷
এভাবেই বারীন অন্তত আমার আপাদমস্তক৷ এভাবেই আমি যখন মানুষটাকে দেখেছি, পড়েছি আর জানার চেষ্টা করেছি তখন শুধু নিরাময় আর শান্তি৷ মরতে মরতে বেঁচে ওঠার আকুতি নিয়ে কাছে গেলেই টের পাই একটা তাকানো মানুষ। কোন মুখের দিকে কি ভীষণ ভালবাসার ভরিযে দিতে পারেন না জানা পেন্সিল পর্যন্ত ৷
যার শিরায় শিরায় লেগে আছে কোনো না কোনো ছবি আর শব্দ রঙের বন্যতা নিয়ে৷ গোপন নিয়ে৷ আমাদের অচেনা বৈশাখ নিয়ে যা কিছু কল্পনার চাইতেই অনেক অনেক বেড়ে ওঠা পাহাড়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ানো একজন মানুষের ভঙ্গুর আমি কে তুচ্ছ করে কখন আরেকজন মানুষ ঠিক গেয়ে উঠেছেন শৃঙ্গার৷ গেয়ে উঠেছেন সমস্ত যন্ত্রণা৷
বারীন আসলে একটা মানুষ৷ সেই অসামান্য মানুষ যার ভাবনায় সারাক্ষণ জ্বলছে হাজার একটা পিয়ানো মাখানো মুসাফিরনামা৷ বারীন আসলে সেই মানুষ যার কবিতাকে উস্কে দিতে গেলে আর নিতে গেলে নিজেকে বুনতে হবে ফুলের তাঁবুতে৷ রাখতে হবে শীতের শহরে ঢোকা প্রথম হুইসেলে৷
‘আরো আরো কথা বিরল হচ্ছে শান্তির জন্য
ক্ষুদা নামের শব্দটি পিছলে যাচ্ছে’
সরানো হাতের কথায় উদাসীন হয়ে উঠলেও বারীন বলতেন যা মিলিয়ে যাI কুয়াশায় গন্ধ যখন নাকে আসবে তখন বুঝবি তুই আবার কবিতা পাচ্ছিস। তোর কবিতার তৃষ্ণা পেয়েছে।
যখন তুমি আমার ছিলে
যাকে ধরে আছি সে আমার ঈশ্বর নয়। রেওয়াজ না প্রতিদিন মশারীর ভেতর
বেরিয়া আসা পা আর পায়ের আদব থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া ঘুমের সকাল।
বাসিঘর এযাবত যারা তারা দেখতে গিয়েছিলো বালিশের তলায়
যাকে দরজা খুলে ভেবে নেওয়া আরেকটা পুরোনো মানুষ ভাবছি
সেকি আদোও এই ঘরে এসেছিল কাল
ছিলনা র খাতার কথা জানাতে আমাকে
অ্যানিমেশন ছেড়ে যাচ্ছে কনভয়
বাথরুম যার পড়ার টেবিল থেকে লেখা হতে পারে আপেল ম্যানিফেস্টো
লেখা হতে পারে আপাদমস্তক তুমি অজন্তা ইলোরা আঁকা জঙ্গল
ছেড়ে বেরিয়ে আসা ছুটির আপসোস
মেটানোর কারসাজি বুঝে ওঠার আগেই
চুলের দানা হাতে কেউ কেউ চলে যাচ্ছে যখন
কেমন ছবির দোলায় কিশোরের গান
কিশোরীর মুচকি বসানো
এইতো নেমে এলাম সামান্য হেরে যাওয়া ম্যাচের পর
যেমন হয় কিছুতেই হাসি আসছে না টেবিল বরাবর
কিছুতেই ভাবতে পারছি না আমার প্রেমিকা সেই
শুধু এক দেদার মানুষ থেকে এখনো লিখে রাখে তারিখ আর বাইবেল যখন
তুমি বলে গেলে এতটাই পুড়িয়ে দে যাকিছু হাতের কাছে
লোপাট করে দে চুপের হারানোগুলি
শুধু মনে রাখ একটা জলপাই শহর ছিলো বলে কবি হতে আসিনি তখন
তোদেরই একফোঁটা বারীন হয়ে গেছি ।