রামকৃষ্ণ মহাপাত্রর পাঁচটি কবিতা
নিরুদ্দেশ
দেখো এই পথের শেষ নেই কোনও,
পায়ে পায়ে চঞ্চলতা
ফিরে যাবে গোধূলির দিকে,
আমিও তোমার দিগন্ত-ছোঁয়া
কান্নার ভেতর
নিরুদ্দেশ হব একদিন…
মাটিজন্ম
বিকেলবেলায় বাড়ি ফিরছেন
আমাদের বাবা,
সাইকেলের চাকায় তখনও
লাল ধুলোর ক্লান্তি।
আমাদের বাবা সূর্য পেরিয়ে আসেন!
তারপর মা আসন পেতে
বাবাকে খেতে দেন
ফুটিয়ে রাখা দু’মুঠো আনন্দছায়া,
আর আমরা ছয় ভাইবোন
টানাটানির সংসারে
বাবার ক্লান্তি, মায়ের আনন্দছায়ার মাঝে
বেঁচে থাকি
মাটিজন্ম নিয়ে।
দিনশেষে
দিনশেষে ফুরিয়ে আসে শালগন্ধ, নদীজল
নুড়ি-পাথরের আলো,
ফুরিয়ে আসে ঢেউয়ে ঢেউয়ে জেগে ওঠা
ব্যর্থতার হাসি;
দিনশেষে আমাকেও
একা করে চলে যায় নিরুদ্দেশ হাওয়া,
পথহারানো পথিকের বাঁশি…
ঋণ
কেউ তো বলেনি কিছু, নিঃস্ব হাত পেতে
আছি গোধূলির দিকে
দূরের অনন্তে,
আমার স্বভাব তুমি জানো,
নিজের ভেতর কেবলই শূন্য হয়ে থাকি
কিছুটা ফুলের কাছে,
পাখির কাছে ঋণী এ-জীবন
বিষণ্ণ, একাকী
ধ্বংস
বালি খুঁড়ছি, অন্ধকার
মরুভূমির!
ধ্বংস নিশ্চিত জেনেও
এ ওর মুখের দিকে চেয়ে
বসে আছি, একটু
আলোর আশায়
জেগে আছে যেটুকু ধূসর, সে শুধু তুমি