অয়ন ঘোষের পাঁচটি কবিতা

অয়ন ঘোষের পাঁচটি কবিতা

শেয়ার করুন

মহাকাব্য

স্বরবর্ণের ভোর পেরিয়ে
মুখ রেখেছে আগুনে
পাঁজরের পাশে চোখ উল্টে পড়ে
বিশ্রাম।

ক্ষতের ওপর বিশল্যকরণী প্রলেপ
মৃত্যুবাণ রাখা আছে গোপন
দেরাজে।
রোজ ডিঙিয়ে যাও এঁটো শরীর
পোড়া আঙরার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে
বাসি মরা।

এক তৃণভূমি তছনছ করে
অন্য ঘাটে সোহাগ খোঁজে
বেদের চুবড়ি। অস্থি বিসর্জন।

মাংসের বল্মীকে মন রাখলে
একটা শ্লোকও
দেবতার চরণ পায় না, রসিক।

মানুষ

সুতোর ভিতর বুনন ছিল যতটা
ততটাই জোরদার ছিল অস্তিত্ব।
পাঁচ বাড়ি ঘুরে এলাম
দুহাতে সরিয়ে মাঘ কুয়াশা
মিহি হিম থিতু হল চোখের পাতায়
রোদ্দুর সারাদিন, রাতভর জ্যোৎস্না
প্রিয় ঘুম ডাকে পায়ে পায়ে
নিভু নিভু আগুন জেগে ওঠে রাতের মজলিশে
ভোরের স্বপ্নে রূপকথা খেলে বেড়ায়
চুরাশি লক্ষ জন্ম ধরে…

সাজ

রাহুকাল ডুবন জলে
চাঁদ পোড়ে জোছনায়
অপ্রতুল শ্বাস
কেবলই ইশারা।
বাম অলিন্দে
দীর্ঘ ছায়ায় পরে
ঘুমায় ত্রিমুখী স্রোত
চুরাশি লক্ষ সিঁড়ি।
কে মনে রাখে ক্ষয়,
মনে রাখে মন্বন্তর?
সে নিজেকে সাজায় প্রতিদিন
ভাঙা আয়নায়।

গৃহস্থের কল্যাণ হোক

যতটা স্পর্শ পেলে ঘুমিয়ে থাকে মন
ঠিক ততটাই গভীর আলাপ জলচিত্রে।
বাতাস ভাসিয়ে দিল মত্ত ছায়া। কিছু রোদ ক্ষণস্থায়ী, ভঙ্গুর। তবু রোদের বিভাব গোপন চেনে
নাভিদেশে মুখ রেখে শোনাই গর্ভকথা।
ডাহুক বয়ে আনে ঠোঁটে ঠোঁটে নদীর ভাঙন
বালির চরে শীত পোহাচ্ছে দামোদর, সোমত্থ শরীর থেকে ঝরে যায় রূপোলি
রেনু
সুয্যি ঠাকুরের আড়ে আড়ে। গৃহস্থের কল্যাণ চেটেপুটে খাচ্ছে রমনীয় ত্রিভুজ।

সামান্য মানুষ

সামান্য কথা
হাত ভর্তি হয়ে উপচে পড়ছে
বাড়তি যেটুকু, যত্নে তুলে রাখি
অবেলার জন্য।
দিন ফুরোয়, একসময় শেষ হয় রাতও
বৃত্তাকার ভ্রমণ।
এক হাত ছেড়ে দেখি
অন্য হাত বাড়িয়ে রেখেছে কেউ না কেউ।
এর বেশি দাবি ঈশ্বরও করেন না
আমি তো সামান্য মানুষ।

শেয়ার করুন

ক্যাটেগরি বা ট্যাগে ক্লিক করে অন্যান্য লেখা পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরনো লেখা

ফলো করুন

Recent Posts

Recent Comments

আপনপাঠ গল্পসংখ্যা ২০২২