জীবনের কথা বলিতে ব্যাকুল (গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের আত্মজীবনী) – অনুবাদ: অরুন্ধতী ভট্টাচার্য ( পর্ব ২৩ )

জীবনের কথা বলিতে ব্যাকুল (গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের আত্মজীবনী) – অনুবাদ: অরুন্ধতী ভট্টাচার্য ( পর্ব ২৩ )

অরুন্ধতী ভট্টাচার্য

শেয়ার করুন

মূল স্প্যানিশ থেকে অনুবাদ: অরুন্ধতী ভট্টাচার্য

পর্ব–তেইশ

হাপি কাফেতে দোন রামোনের টেবিলে কিছু স্বতঃসিদ্ধ আইন ছিল যা কোনো কারণেই লঙ্ঘন করা যেত না। দোন রামোনই সেখানে প্রথমে আসতেন কারণ তাঁর শিক্ষকতার কাজ বিকেল চারটের মধ্যে শেষ হয়ে যেত। টেবিলে মাত্র ছ’জনের বসার জায়গা ছিল। কে কোন্ চেয়ারে বসবে তা নির্ভর করত দোন রামোনের সঙ্গে তার সম্পর্কের উপর। অন্যের চেয়ারে বসাটা সেখানে অভদ্রতা বলে গণ্য হত। প্রথম দিন থেকে হেরমান দোন রামোনের ডানদিকের চেয়ারে বসতেন, কারণ তাঁদের বন্ধুত্ব ছিল খুব গভীর ও বহুদিনের। তিনিই দোন রামোনের বিভিন্ন বৈষয়িক ব্যাপার দেখাশোনা করতেন। হেরমানকে সে-কাজ যে করতে বলা হত এমনটা নয়, তবুও তিনি তা করতেন। কারণ প্রাজ্ঞ মানুষটি স্বভাবগতভাবেই জাগতিক বিষয়গুলো ঠিক বুঝে উঠতে পারতেন না। সেই সময়ে হেরমান যে ব্যাপারটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত ছিলেন তা হল দোন রামোনের বার্সেলোনায় ফিরে যাওয়ার আগে তাঁর বইগুলো রাজ্য-গ্রন্থাগারে বিক্রির ব্যবস্থা করা। তাছাড়াও অন্যান্য অনেক বিষয় গুছিয়ে দেওয়া। সেই কাজগুলো করতেন তাঁর সেক্রেটারির মতো নয়, বরং মনে হত তিনি যেন অনেকটা তাঁর বাধ্য সন্তান।

অন্যদিকে আলফোনসোর সঙ্গে দোন রামোনের সম্পর্কের ভিত্তি ছিল দুরূহ সব সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক বিষয়। আর আলবারোর কথা বললে বলতে হবে দোন রামোনের সঙ্গে যখন একা টেবিলে বসতেন চুপ করে থাকতেন। অপেক্ষা করতেন কখন অন্যরা আসবেন। তারপরে তিনি হাল ধরতেন। আর একমাত্র যে মানুষটির জন্য টেবিলের সমস্ত জায়গা উন্মুক্ত ছিল তিনি হলেন হোসে ফেলিক্স। রাতের বেলা কিন্তু দোন রামোন হাপি কাফেতে আসতেন না। তখন তিনি যেতেন তাঁর নির্বাসিত স্পেনীয় বন্ধুদের কাছে, রোমা কাফেতে।

তাঁর সেই টেবিলে সবার শেষে এসেছিলাম আমি। প্রথম দিন থেকেই স্ব-অধিকার না থাকা সত্ত্বেও বসতাম আলবারো সেপেদার চেয়ারে, কারণ তিনি তখন নিউ ইয়র্কে ছিলেন। দোন রামোন আমাকে তাঁর আরেকজন শিষ্য হিসাবেই গ্রহণ করেছিলেন, কারণ আগেই তিনি ‘এল এস্পেক্তাদোর’ কাগজে প্রকাশিত আমার গল্পগুলো পড়েছিলেন। তবুও একথা কখনও কল্পনাও করিনি যে তাঁর সঙ্গে এতখানি ঘনিষ্ঠতা অর্জন করতে পারব যে মায়ের সঙ্গে আরাকাতাকায় যাওয়ার দিন তাঁর কাছে টাকা ধার চাইব। কিছুদিন পরে এক অকল্পনীয় ঘটনাচক্রে তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম এবং একমাত্র ব্যক্তিগত কথোপকথন হয়েছিল। সেদিন আমি তাড়াতাড়ি হাপি কাফেতে গিয়েছিলাম যাতে অন্যরা এসে পড়ার আগে আলাদাভাবে তাঁর কাছ থেকে নেওয়া সেই ছয় পেসোর ঋণ শোধ করে দিতে পারি।

—‘কী, কেমন আছো?’ বলে অন্যদিনের মতো সেদিনও আমাকে অভ্যর্থনা করলেন। কিন্তু আমার মুখ দেখে তাঁর কিছু একটা সন্দেহ হল, আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘শরীর খারাপ নাকি?’

—‘না, না’, একটু অস্বস্তির সঙ্গে বললাম, ‘কেন বলুন তো?’

—‘তোমাকে খুব বিদ্ধস্ত লাগছে, তাই’, তিনি বললেন, ‘তবে ওসব নিয়ে কিছু ভেবো না, আজকাল যা অবস্থা তাতে আমাদের সবার পেছন মারা গেছে।’

তারপর বেশ অনিচ্ছার সঙ্গে সেই ছয় পেসো ব্যাগে রাখলেন। তাঁর মুখের ভাব দেখে মনে হল টাকাটা যেন তিনি অসদুপায়ে রোজগার করেছেন।

—‘ঠিক আছে,’ আরক্তিম হয়ে তিনি বললেন, ‘না চাইতেই একজন খুব গরিব ছেলের ধার শোধ দেওয়ার উদাহরণ হিসাবে আমি এটা নিলাম।’

জানি না কী বলব তখন। তাই উচ্চকিত ধ্বনিময় সেই ঘরের মধ্যে সীসাপূর্ণ গভীর ইঁদারার মতো নিস্তব্ধতায় ডুবে রইলাম আমি। সেই সাক্ষাতের যে সৌভাগ্য আমার হয়েছিল তা স্বপ্নেও কখনও ভাবিনি। আমার মনে হয় যে এই দলে আড্ডার মধ্যে প্রত্যেকে তাঁর নিজস্ব ভাবনার কণা মেলে ধরতেন আর তার গুণাগুণ সব মিশে যেত অন্যের মতামতের বালুকণার সঙ্গে। কিন্তু কোনোদিন ভাবিনি যে সেই মানুষটার সঙ্গে শিল্পকলা সম্পর্কে আমি একা একা কথা বলতে পারব। যে মানুষটা কিনা বছরের পর বছর বাস করেছেন বিশ্বকোষের মধ্যে! অনেক দিন, শেষরাতে, যখন ঘরে বসে একা একা পড়তাম, আমার সাহিত্যিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নিয়ে ওই মানুষটার সঙ্গে উত্তপ্ত আলোচনা করেছি। কিন্তু সে সব করতাম কল্পনায়। ভোরের আলো ফুটলেই সেই কল্পনার রেশটুকু পর্যন্তও মিলিয়ে যেত। লাজুক আমি আরও বেশি গুটিয়ে যেতাম যখন আলফোনসো তাঁর একটা অসাধারণ ভাবনার কথা বলতেন অথবা হেরমান দোন রামোনের কোনো একটি চটজলদি মন্তব্যের সমালোচনা করতেন বা আলবারো এমন একটা কাজের পরিকল্পনার কথা সবাইকে উচ্চৈস্বরে শোনাতেন যে আমরা প্রবল উত্তেজিত হয়ে উঠতাম।

সৌভাগ্যক্রমে সেদিন হাপি কাফেতে দোন রামোন নিজে থেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার পড়াশুনো কেমন চলছে। তখনও পর্যন্ত আমি স্প্যানিশ ভাষায় সেই উদভ্রান্ত প্রজন্মের যা কিছু পেয়েছি সব পড়ে ফেলেছিলাম। বিশেষ করে ফকনার, যাঁকে আমি রক্তপিপাসুর মতো ছুরি দিয়ে কাঁটাছেঁড়া করেছি। কেন-না তখন আমার একটা অদ্ভুত ভয় হত যে ভবিষ্যতে তিনি বোধহয় শুধুমাত্র একজন কৌশলী আলঙ্কারিক হিসাবেই বেঁচে থাকবেন। এই কথাগুলো দোন রামোনকে বলার পর যখন বুঝতে পারলাম আমার কথায় তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠেছেন, আমার অন্তরাত্মা পর্যন্ত কেঁপে উঠল। আমার বলা কথাগুলোকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে যাব, কিন্তু তার কোনো সময়ই তিনি দিলেন না।

—‘চিন্তা কোরো না, গাবিতো,’ নির্বিকারভাবে বললেন, ‘ফকনার বাররানকিয়ায় থাকলে এই টেবিলে বসে থাকতেন।’

আবার এও তিনি খেয়াল করেছিলেন যে ঔপন্যাসিক রামোন গোমেস দে লা সেরনা আমার এত ভালো লাগত যে ‘জিরাফ’ কলামে তাঁর লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিতাম। আর সেটা করতাম অন্যান্য সেইসব লেখকদের সঙ্গে যাঁদের ঔপন্যাসিক সত্তা প্রশ্নাতীতভাবে প্রতিষ্ঠিত। দোন রামোনকে বুঝিয়ে বললাম যে রামোন গোমেসের উপন্যাসের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য তা করতাম না। একথা ঠিক যে তাঁর ‘গোলাপ কুটির’ উপন্যাসটি আমার খুবই ভালো লেগেছিল, কিন্তু সবথেকে বেশি যেটা আমায় আকৃষ্ট করত তা হল তাঁর চিন্তার ঔদ্ধত্য ও ভাষার প্রতিভা। তবে সেটাও ছিল এক ধরনের ছন্দোবদ্ধ কৌশল, যা শুধুমাত্র লিখতে শেখার জন্য কাজে লাগতে পারে। এই বিচারে তাঁর বিখ্যাত ‘গ্রেগেরিয়া’[১]-র থেকে অধিক বুদ্ধিদীপ্ত আর কোনো রীতির কথা আমার মনে পড়ে না। দোন রামোন আমাকে থামিয়ে দিয়ে তাঁর বিদ্রুপাত্মক হাসিটি হেসে বললেন:

—‘আপনার জন্য বিপজ্জনক সম্ভাবনাটা হল এই যে নিজের অজান্তেই আপনি খারাপভাবে লিখতে শিখতে পারেন।’

যাই হোক, প্রসঙ্গ পালটানোর আগে তিনি স্বীকার করলেন যে গোমেস দে লা সেরনার লেখনীর অতি-দৃশ্যমান বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও কবিতাটা তিনি ভালোই লেখেন। দোন রামোন এমনভাবেই মন্তব্য করতেন – তাৎক্ষণিক ও জ্ঞানগর্ভ। কিন্তু আমার সমানে ভয় হচ্ছিল যে কেউ না কেউ এসে হাজির হয়ে আমাদের কথোপকথনের বিরল সৌভাগ্যে বাধা দেবে আর সেই ভয়ে আমি তাঁর কথা ঠিক অনুধাবন করতে পারছিলাম না। কিন্তু তিনি জানতেন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। তাঁর পরিচিত বেয়ারা তখন তাঁকে এনে দিল সাড়ে-এগারোটার কোকা-কোলা। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি ওই কোকা-কোলার অস্তিত্ব সম্বন্ধে সচেতন নন। সেই অবস্থাতেই তিনি তা নিলেন, কাগজের স্ট্র দিয়ে খেতেও লাগলেন এবং যা বলছিলেন তা একবারও থামালেন না। কাফেতে যত খরিদ্দার আসছিল তারা সকলেই দরজা থেকে তাঁকে অভিবাদন করছিল: ‘কেমন আছেন, দোন রামোন?’ এবং তিনি তাদের দিকে না তাকিয়েই হাতের একটি শৈল্পিক ভঙ্গিমা দিয়ে প্রত্যুত্তর দিচ্ছিলেন।

তিনি কথা বলছিলেন আর তির্যক দৃষ্টি দিয়ে দেখছিলেন যে আমি একটা চামড়ার ব্রিফকেস দু’হাতের মধ্যে চেপে ধরে তাঁর কথা শুনছি। প্রথম কোকা-কোলা শেষ করার পর স্ট্রটাকে স্ক্রুড্রাইভারের মতো দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে দ্বিতীয় বোতল আনার হুকুম দিলেন। আমিও আমার জন্য একটা আনতে বললাম, যদিও খুব ভালো করেই জানা ছিল যে ওই টেবিলে যে যার নিজের খাবারের দাম নিজে দেয়। সব শেষে আমায় প্রশ্ন করলেন, খড়-কুটো আঁকড়ে ধরার মতো করে যে ব্রিফকেসটা আমি চেপে ধরে বসে আছি তার মধ্যে কী আছে?

তাঁকে সত্যি কথাই বললাম। ব্রিফকেসের মধ্যে ছিল আমার উপন্যাসের প্রথম অধ্যায়ের খসড়া যা কাতাকা থেকে মায়ের সঙ্গে ঘুরে আসার পর লিখতে শুরু করেছিলাম। প্রায় জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে সেদিন যে সাহসের পরিচয় দিয়েছিলাম তা বোধহয় জীবনে আর কখনও পারতাম না। টেবিলের উপরে তাঁর সামনে ব্রিফকেস খুলে ধরলাম, নির্দোষ প্ররোচনার মতো। তাঁর সেই বিপজ্জনক নীল রঙের স্বচ্ছ চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকালেন ও কিছুটা বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশ্ন করলেন:

—‘দেখতে পারি?’

নিউজ প্রিন্টের টানা পাতায় টাইপ করে লেখা, তাতে অসংখ্য সংশোধন এবং সেটা গোটানো রয়েছে অ্যাকর্ডিয়ানের বেলোর মতো। দোন রামোন ধীরে সুস্থে পড়ার চশমা চোখে দিলেন, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেই পাতাগুলোর ভাঁজ খুললেন ও টেবিলের উপর সাজিয়ে রাখলেন। তিনি পাঠ করছেন, কিন্তু মুখে কোনো রকম কোনো ভাবান্তর নেই। ত্বকের রঙের কোনো পরিবর্তন ঘটছে না। শ্বাস-প্রশ্বাসেরও কোনো বদল নেই। তাঁর ভাবনার ছন্দে একবারও নড়ে উঠল না কপালের উপর পড়ে থাকা কাকাতুয়ার মতো এক গুচ্ছ চুল। সেই টানা পাতার দুটো পাতা শেষ করলেন নিঃশব্দে, মধ্যযুগীয় ভঙ্গিতে এবং ব্রিফকেস বন্ধ করলেন। তারপর চোখ থেকে চশমা খুলে খাপে ভরে বুক পকেটে রেখে দিলেন।

—‘এটা পরিষ্কার যে লেখাটা এখনও ঘষা-মাজা করা বাকি, এটা খুবই স্বাভাবিক’, সহজভাবে আমাকে বললেন, ‘তবে বেশ ভালো হচ্ছে।’

সময়ের ব্যবহার নিয়ে দু-একটা হালকা মন্তব্য করলেন। এই ব্যাপারটাই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে দুরূহ, প্রায় জীবন-মরণ সমস্যা। তারপর বললেন:

—‘আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে ঘটনাগুলো সব আগে ঘটে গেছে আর চরিত্ররা সেখানে রয়েছে শুধু সেগুলোকে উত্থাপনের জন্য। সুতরাং এই দুই সময়ের সঙ্গে আপনাকে মোকাবিলা করতে হবে।’

তারপর আঙ্গিক নিয়ে আরও কিছু সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করলেন, যার যথার্থ মূল্যায়ন আমি তখন করতে পারিনি অভিজ্ঞতার অভাবে। শেষে পরামর্শ দিলেন শহরের নাম বাররানকিয়া না রাখতে, যেমনটা আমার খসড়ায় ছিল, কারণ এই নামটি একটি নির্দিষ্ট বাস্তবের সঙ্গে এমনভাবে জড়িত যে পাঠকের কল্পনা আকাশে উড়াল দেওয়ার জায়গা পাবে না। তারপর তিনি শেষ করলেন তাঁর নিজস্ব রসিকতার ভঙ্গিতে:

—‘অথবা চুপচাপ বসে থাকুন ও অপেক্ষা করুন কখন আকাশ থেকে নামটা ঝরে পড়বে। সোফোক্লেসের এথেন্স আর আন্তিগোনের স্থান কখনোই এক শহর নয়।’

কিন্তু যে বাক্যটি বলে সেদিন বিকেলে তিনি আমার কাছ থেকে বিদায় নিলেন তা আমি সারা জীবন অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি:

—‘লেখাটা আমাকে দেখানোর জন্য ধন্যবাদ, কিন্তু আপনাকে একটা ছোট্ট উপদেশ দেব – কোনো লেখা যখন লিখছেন তার অসংশোধিত খসড়া কখনও কাউকে দেখাবেন না।’

সেটাই ছিল তাঁর সঙ্গে আমার একমাত্র ব্যক্তিগত কথোপকথন। কিন্তু তা আমাদের সবার জন্যই খুব মূল্যবান ছিল। কেন-না তিনি তারপর বার্সেলোনায় চলে গেলেন, ১৯৫০ সালের ১৫ এপ্রিল। এমনটাই ঠিক ছিল এক বছর আগে থেকে। তিনি চলে গেলেন এক গম্ভীর আবহের মধ্যে উলের কালো স্যুট আর বিচারপতিরা যে টুপি পরে সেই টুপি পরে। যেন একটা স্কুলের বালককে বিদায় জানানো হল। আটষট্টি বছর বয়সেও তাঁর স্বাস্থ্য অটুট ছিল, মস্তিষ্ক ছিল সমান জাগ্রত। কিন্তু আমাদের মধ্যে যাঁরা সেদিন তাঁর সঙ্গে বিমানবন্দর পর্যন্ত গিয়েছিলেন, তাঁরা তাঁকে বিদায় জানালেন এমনভাবে যেন মনে হল মানুষটি তাঁর মাতৃভূমিতে ফিরে যাচ্ছেন নিজের শেষযাত্রায় সামিল হতে।

টীকা:

গ্রেগেরিয়া— স্পেনের ঔপন্যাসিক রামোন গোমেস দে লা সেরনার উদ্ভুত এক ধরনের অতি সংক্ষিপ্ত গদ্যভঙ্গি, সাধারণত একটি বাক্য, যেখানে কৌতুক ও উপমার মধ্যে দিয়ে বাস্তবের কিছু দিক চমকপ্রদভাবে উপস্থাপিত করা হয়। যেমন, “La luna es el ojo de buey del barco de la noche” অর্থাৎ চাঁদ হল রাত্রির নৌকার ষাঁড়ের একটি চোখ অথবা “El polvo está lleno de viejos y olvidados estornudos” অর্থাৎ ধুলো ভরে আছে পুরোনো ও বিস্মৃত হাঁচিতে।

শেয়ার করুন

ক্যাটেগরি বা ট্যাগে ক্লিক করে অন্যান্য লেখা পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরনো লেখা

ফলো করুন

Recent Posts

Recent Comments

আপনপাঠ গল্পসংখ্যা ২০২২