একটি জাম গাছ – কৃষণ চন্দর ভাষান্তর : মৃণাল শতপথী

একটি জাম গাছ – কৃষণ চন্দর ভাষান্তর : মৃণাল শতপথী

শেয়ার করুন

[লেখক পরিচিতি: কৃষণ চন্দর উর্দু এবং হিন্দি কথা সাহিত্যে এক সুপরিচিত নাম। বর্তমান গল্পটি ১৯৬০ সালে তাঁর লেখা ‘জামুন কা পেড়’ হিন্দি ছোটোগল্পটির বঙ্গানুবাদ।]

রাতে খুব জোর ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল। সেক্রেটারিয়টের লনে একটি জাম গাছ মাটিতে উপড়ে পড়েছে। সকালে মালি এসে দেখে জামগাছটার তলায় চাপা পড়ে আছে একটি লোক।

মালি ছোটে চাপরাশির কাছে, চাপরাশি ছোটে ক্লার্কের কাছে, ক্লার্ক ছোটে সুপারিন্টেনডেন্টের কাছে, সুপারিন্টেডেন্ট দৌড়ে লনে আসে। দেখতে দেখতে গাছে চাপা পড়া লোকটার আশেপাশে সবাই জমা হয়ে যায়।

‘বেচারা জামগাছ, কেমন ফলন্ত গাছটি ছিল গো!’
একজন ক্লার্ক আফশোস করে।

‘আহা কি রসালো জামগুলি, যে খেয়েছে জানে!’ আরেক ক্লার্কের হুতাশ।

‘ফলের মরশুমে থলে ভরে বাড়ি নিয়ে যেতাম, বাচ্চারা কি খুশিতেই না খেতো!’ তিন নম্বর ক্লার্কের গলা ধরে আসে।

‘কিন্তু এই লোকটা?’ মালি গাছে চাপা পড়া লোকটাকে আঙুল তুলে দেখায়।

‘হ্যাঁ, এই লোকটা…’ সুপারিন্টেনডেন্ট চিন্তায় পড়ে যায়।

এক চাপরাশি বলে ওঠে,
‘লোকটা বেঁচে আছে না মরে গেছে কে জানে।’ দ্বিতীয় চাপরাশি বলে,

‘মরেই গেছে মনে হয়, এত ভারি গুঁড়ি পিঠে পড়লে কেউ বাঁচে!’

‘না, আমি মরিনি গো !’ চাপা পড়া লোকটা কাতরে ওঠে।

‘অ্যাঁ, বেঁচে আছে!’ এক ক্লার্ক ভারি অবাক হয়ে বলে।

‘গাছটা সরিয়ে একে বের করে আনতে হবে।’ মালি পরামর্শ দেয়। মোটা এক চাপরাশি ক্লান্ত মুখে বলে,
‘খুব ঝামেলা, গাছের গুঁড়িটার সাইজ আর ওজন দেখেছো?’

‘কীসের ঝামেলা?’ মালি বলে, ‘সুপারিন্টেনডেন্ট সাহেব একবার হুকুম দিন, আমরা পনেরো-বিশ মালি, চাপরাশি আর ক্লার্করা মিলে জোর লাগিয়ে গাছ তুলে লোকটাকে বের করে আনবো।’

‘মালি ঠিকই বলছে, লাগাও জোর, আমরা তৈরি!’ ক্লার্করা একসঙ্গে বলে ওঠে। সবাই গাছ কাটতে তৎপর হয়ে পড়লে সুপারিন্টেনডেন্ট তাদের আটকায়,

‘আরে দাঁড়াও দাঁড়াও, একবার আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে পরামর্শ করে নিই বরং।’

সুপারিন্টেনডেন্ট আন্ডার সেক্রেটারির কাছে যায়, আন্ডার সেক্রেটারি যায় ডিউটি সেক্রেটারির কাছে, ডিউটি সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারির কাছে, জয়েন্ট সেক্রেটারি, চিফ সেক্রেটারির কাছে। চিফ সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারিকে কিছু বলে, জয়েন্ট সেক্রেটারি বলে ডিউটি সেক্রেটারিকে, ডিউটি সেক্রেটারি, আন্ডার সেক্রেটারিকে। ফাইল ঘুরতে থাকে। এভাবে অর্ধেক দিন পার হয়ে যায়।

দুপুরে খাবার বিরতিতে চাপা পড়া লোকটার আশেপাশে বেশ ভিড় জমে যায়। লোকে নানারকম কথা বলতে থাকে। কয়েকজন অত্যুৎসাহী ক্লার্ক বিষয়টাকে নিজেদের হাতে নিতে চায়। প্রশাসনের নির্দেশের অপেক্ষা না করেই তারা গাছটা সরিয়ে লোকটাকে বের করে আনার প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে এমন সময় সুপারিন্টেনডেন্ট ফাইল হাতে হাঁফাতে হাঁফাতে আসে,
‘আমরা নিজেরা এই গাছ সরাতে পারি না। আমরা বাণিজ্য বিভাগের কর্মচারী, আর কেসটা গাছের, মানে কৃষি বিভাগের আওতায় পড়ে। সে কারণে আমি এই ফাইলটাকে আর্জেন্ট মার্কিং দিয়ে কৃষি দপ্তরে পাঠাচ্ছি। সেখান থেকে জবাব আসা মাত্র গাছটাকে হঠিয়ে দেওয়া হবে।’

পরের দিন কৃষি দপ্তরের জবাব আসে যে গাছ সরানোর দায়িত্ব তাদের নয়, এটা বাণিজ্য বিভাগেরই কাজ।

জবাব পড়ে বাণিজ্য বিভাগের ভারি রাগ হয়। তৎক্ষনাৎ তারা পালটা লিখে পাঠায় যে গাছ হঠানোর দায় একমাত্র কৃষি দপ্তরেরই, বাণিজ্য বিভাগের এসবের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।

পরের দিনও ফাইল ঘুরতে থাকে। সন্ধেবেলা জবাব এসে যায়, কেসটা আমরা হর্টিকালচার বিভাগের কাছে পাঠাচ্ছি। যেহেতু এটি একটি ফলবান গাছের মামলা আর কৃষি দপ্তর কেবলমাত্র আনাজপাতি আর ক্ষেতখামারের বিষয় দেখে তাই জামগাছের কেসটা আমরা হর্টিকালচারের কাছেই পাঠাচ্ছি।

রাতে চাপা পড়া লোকটাকে মালি ডাল-ভাত খাওয়ায়। যদিও লনের চারপাশে কড়া পুলিশি প্রহরা যাতে লোকে আইন হাতে তুলে নিয়ে গাছ সরানোর চেষ্টা না করে, তবুও এক কন্সটেবলের দয়া হয়, সে মালিকে অনুমতি দিয়ে দেয় লোকটাকে খাবার দেবার।

মালি লোকটাকে আশ্বাস দেয়,
‘চিন্তা কোরো না, তোমার ফাইল চলছে, আশা করা যায় কালকের মধ্যে সব ফয়সালা হয়ে যাবে।’

গাছ পিঠে নিয়ে পড়ে থাকা লোকটা কিছু বলে না।

মালি ভালো করে গাছের গুঁড়িটা দেখে।

‘এটা তোমার পিঠের ওপর পড়েছে তবু ভালো, নইলে কোমরে পড়লে শিরদাঁড়ার হাড় ভেঙে আর উঠে দাঁড়াতে হত না।’

লোকটা এবারও কিছু বলে না।

‘তোমার এখানে আত্মীয় কেউ থাকে? আমাকে ঠিকানা দাও, খবর দেবার চেষ্টা করবো।’

‘আমার কেউ নেই, আমি অনাথ।’
বহু কষ্টে লোকটা বলতে পারে।

তৃতীয় দিন হর্টিকালচার বিভাগ থেকে জবাবি চিঠি আসে। বড়ো কড়া সে জবাব। বিস্তারিত আলোচনার সঙ্গে। চিঠির ভাষা থেকে মালুম হয়, হর্টিকালচার বিভাগের সেক্রেটারি বেশ একটা সাহিত্যিক গোছের কেউ। তিনি লিখেছেন,
‘খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে যখন দেশে গাছ লাগাও, প্রাণ বাঁচাও-এর মতো এক মহতী কর্মসূচি চলছে তখন এই দেশেরই এমন কিছু অফিসার আছেন যারা বৃক্ষ ছেদনের পক্ষে মত দিচ্ছেন! তাও আবার এক ফলবান বৃক্ষ! যার সুস্বাদু জাম বড়ো তৃপ্তি নিয়ে দেশের মানুষ খেয়ে থাকে! আমাদের বিভাগ কোনো অবস্থাতেই এই গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারে না।’

‘এখন কী করা যায়?’ কেউ প্রশ্ন করে। সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয় সে, ‘আচ্ছা, যদি গাছটাকে কেটে সরানো না যায়, এই লোকটাকেই না হয় দু-টুকরো করে বের করে ফেলি? এই দেখুন, যদি লোকটাকে এভাবে মাঝখান থেকে মানে ধড় থেকে কেটে আলাদা করে দেওয়া যায় তবে অর্ধেকটা এপাশ থেকে বেরিয়ে আসবে আর বাকিটা ওপাশ থেকে, গাছটাকে কাটার দরকারও পড়বে না।’

‘কিন্তু আমি যে মরে যাবো!’ গাছ-চাপা লোকটি প্রবল আপত্তি জানায়। এক ক্লার্ক মাথা নেড়ে বলে, ‘হুম, এও ঠিক বলছে, মরে যাবে তো?’

লোকটিকে দ্বিখন্ডিত করার সুপরামর্শ দেওয়া ব্যক্তি একটি পোক্ত সমাধান দেয়,
‘দূর, আপনারা কিছুই জানেন না, এখন প্লাস্টিক সার্জারি বলে একটা জিনিস বেরিয়েছে, তাতে লোকটার ধড়ের সঙ্গে বাকি শরীর সম্পূর্ণ জুড়ে দেওয়া যায়, কোন ব্যাপারই না!’

এবার ফাইলটিকে স্বাস্থ্য বিভাগে পাঠানো হয়। মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট দ্রুত অ্যাকশান নেয়। এবং ফাইল পাওয়া মাত্র সেদিনই বিভাগের সবচেয়ে দক্ষ প্লাস্টিক সার্জেনের কাছে সুযোগ বুঝে পাঠিয়ে দেয়। সার্জেন গাছে চাপা হয়ে পড়ে থাকা লোকটাকে ভালো করে নিরীক্ষণ করে যায়। তার হেলথ চেকাপ হয়। ব্লাড প্রেশার, শ্বাসের গতি, হার্ট ও ফুসফুসের পরীক্ষা করে রিপোর্ট পাঠায়, ‘এই লোকটির প্লাস্টিক সার্জারি করা সম্ভব, সফলভাবেই সম্ভব। তবে কিনা লোকটা বাঁচবে না।’

অতএব প্রচেষ্টাটি রদ করে দেওয়া হয়।

রাতে মালি লোকটার মুখে খিচুড়ি তুলে দেয়,
‘তোমার কেসটা এখন ওপরতলায় চলে গেছে। শুনছি সেক্রেটারিয়েটের সমস্ত সেক্রেটারি মিটিংয়ে বসছে, সেখানে তোমার ব্যাপারটা আলোচনা হবে। এবার নির্ঘাত একটা কিছু সমাধান হবে।’

লোকটা মুখে একটু শ্বাস ভরে খুব ধীরে গালিব আওড়ায়, ‘হমনে মানা কি তগাফুল না করোগে লেকিন খাক হো যায়েঙ্গে হম, তুমকো খবর হোতে তক। জানি উপেক্ষা দেবে না আমায়, তবু তোমার কাছে আমার খবর যাবে যেদিন, ছাই হয়ে মিলিয়ে গেছি কবেই।’

মালি বিস্ময়ে বলে ওঠে, ‘তুমি কবি!’

লোকটি ধীরে মাথা নাড়ে।

পরের দিন মালি, চাপরাশিকে গিয়ে বলে, চাপরাশি ক্লার্ককে, ক্লার্ক, হেডক্লার্ককে। অল্পক্ষণেই সেক্রেটারিয়টে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে চাপা পড়া লোকটা একজন কবি। ব্যাস আর কি, জনে জনে গাছ চাপা কবিকে দেখতে আসে। এই খবর সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ে আর সন্ধের আগেই বিভিন্ন মহল্লা থেকে আসা কবিদের জমায়েত শুরু হয়ে যায়। সেক্রেটারিয়টের লন কবিদের ভিড়ে ঠাসা হয়ে যায়। তারা আধমরা লোকটির কানের কাছে গিয়ে উচ্চস্বরে কবিতা পাঠ করতে থকে। কেউ কেউ কবিতা নিয়ে তার সঙ্গে একটু শলাও সেরে নিতে চায়।

চাপা পড়া লোকটা যে কবি সেটা প্রকাশ হয়ে পড়াতে সেক্রেটারিয়টের সমস্ত কমিটি সমাধানে পৌঁছোয়, যেহেতু গাছ চাপা লোকটি একজন কবি তাই কৃষি বা হর্টিকালচার নয়, বিষয়টা আসলে সংস্কৃতি বিভাগের আওতাতেই পড়ে। ফলে তাদের কাছে আবেদন করা হয়, যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার নিষ্পত্তি করে বেচারা কবিকে রেহাই দেওয়া হোক।

ফাইল সংস্কৃতি বিভাগের আলাদা আলাদা সেকশন হয়ে সাহিত্য অকাদেমির সচিবের কাছে পৌঁছোয়। সচিব চটজলদি নিজের গাড়ি নিয়ে সেক্রেটারিয়ট যায় এবং চাপা পড়া লোকটার ইন্টারভিউ নিতে থাকে।

‘তুমি কবি? শায়র?’
‘আজ্ঞে হ্যাঁ’
‘কোন ছদ্মনামে লেখো?’
‘অব্স’
‘অব্স !’ সচিব প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে আর কি।
‘তুমি কি সেই যার মজমুয়া-এ-কলাম-এ-অব্স কে ফুল সদ্য প্রকাশিত হয়েছে?

চাপা পড়া কবি মাথা নাড়ে।

‘তুমি কি আমাদের অকাদেমির সদস্য?’
‘আজ্ঞে না।’
‘অবাক ব্যাপার, অব্স কে ফুল-এর কবি সাহিত্য অকাদেমির মেম্বার নয়! ওফ এ বিরাট ভুল কী করে হল আমার! এত বড়ো কবি, এমন শায়র অজ্ঞাত অন্ধকারে চাপা পড়ে আছে!’

‘আজ্ঞে না, একটা গাছের নীচে চাপা পড়ে আছি আপাতত, ভগবানের দোহাই এখান থেকে আমাকে উদ্ধার করুন!’

‘এক্ষুনি করছি!’ সচিব দ্রুত বলে এবং তড়িঘড়ি গিয়ে বিভাগীয় রিপোর্ট পেশ করে। পরের দিন হন্তদন্ত হয়ে আসে, ‘শুভেচ্ছা ! শুভেচ্ছা ! মিষ্টি খাওয়াও, আমাদের সাহিত্য সমিতি তোমাকে সদস্য নির্বাচন করেছে, এই তার অর্ডার কপি!’

‘সে সব ঠিক আছে কিন্তু আমাকে এখান থেকে বের তো করুন দয়া করে!’ তার শ্বাস ক্রমে স্তিমিত হয়ে আসছে, মুখ দেখে বোঝা যায়, ভয়ংকর কষ্ট হচ্ছে তার।

‘এ তো আমি করতে পারি না ভাই, আমার যতটুকু করার করেছি। এমনকি বলো তো, তোমার মৃত্যুর পর তোমার স্ত্রী যাতে পেনশন পান সেই ব্যবস্থাও করে দিতে পারি, অবশ্য যদি তুমি আবেদন করো।’

‘আরে আমি বেঁচে আছি! আমাকে বাঁচিয়ে রাখো!’

‘সমস্যা হল, আমাদের কেবল সংস্কৃতি বিভাগের সঙ্গে সম্পর্ক, তোমার জন্য বনবিভাগকে লিখে দিচ্ছি, আরজেন্ট লিখে দিচ্ছি!’

সন্ধেবেলা মালি এসে জানায়, ‘কাল বনবিভাগের লোক এসে গাছ কেটে ফেলবে আর তুমি বেঁচে যাবে।’

মালি খুশি ছিল। কিন্তু লোকটির অবস্থা ক্রমে সঙ্গিন হয়ে উঠেছে। তবুও যুঝে যাচ্ছে জীবনের সঙ্গে, কাল পর্যন্ত, সকাল পর্যন্ত কোনো না কোনো ভাবে তাকে বেঁচে থাকতেই হবে।

পরদিন বনবিভাগের লোকেরা করাত, কুড়ুল নিয়ে গাছ কাটতে পৌঁছলে তাদের আটকে দেওয়া হল। কারণ হিসেবে বলা হয়, পিটোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ দেশে এসে নিজের হাতে জামগাছটি এই লনে লাগিয়েছিলেন। এখন এটা কেটে ফেললে পিটোনিয়ার সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক খারাপ হবে।

‘কিন্তু একটা মানুষের জীবনের প্রশ্ন এটা!’ এক ক্লার্ক চিৎকার করে ওঠে রাগে।

‘আবার অন্যদিকে এটি দেশের সরকারের আভ্যন্তরীণ একটা বিষয়, সম্মানের বিষয়। ভাবো, পিটোনিয়া সরকার আমাদের কত সাহায্য করে। সেই বন্ধুত্বের স্বার্থে একটা মানুষের তুচ্ছ জীবনের বলিদান কি দেওয়া যায় না!’ আরেক ক্লার্ক তাকে বোঝায়।

‘কবির কি মরা উচিত তবে?’

‘অবশ্যই!’

আন্ডার সেক্রেটারি, সুপারিন্টেনডেন্টকে বলে, আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ বিদেশযাত্রা থেকে ফিরেছেন। বিকেল চারটেয় বিদেশ মন্ত্রালয় এই গাছটার ফাইল প্রধানমন্ত্রীর টেবিলে পেশ করবে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই চূড়ান্ত।’

বিকেল চারটায় স্বয়ং সুপারিন্টেনডেন্ট ফাইল নিয়ে গাছচাপা পড়া লোকটার কাছে আসে।

‘শুনছো? আজ তোমার ফাইল পাস হয়েছে।’ সুপারিন্টেনডেন্ট, কবির হাতটা নাড়া দিয়ে বলে। কিন্তু কবির হাত তখন ঠান্ডা মেরে গেছে। চোখের মণিতে কোনো প্রাণ ছিল না। পিঁপড়ের দীর্ঘ এক সারি তার মুখের ভেতর ক্রমে প্রবেশ করছিল।

জীবনের ফাইল তার অনেক আগেই পাস হয়ে গিয়েছে।

শেয়ার করুন

ক্যাটেগরি বা ট্যাগে ক্লিক করে অন্যান্য লেখা পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরনো লেখা

ফলো করুন

Recent Posts

Recent Comments

আপনপাঠ গল্পসংখ্যা ২০২২