ডেরেক ওয়ালকট-এর তিনটি কবিতা অনুবাদ: অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়
|

ডেরেক ওয়ালকট-এর তিনটি কবিতা অনুবাদ: অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়

[লেখক পরিচিতি: স্যার ডেরেক এলটন ওয়ালকট ১৯৩০ সালের ২৩শে জানুয়ারিতে সেন্ট লুসিয়ার ক্যাস্ট্রিজ-এ জন্মগ্রহণ করেন। মূলত কবি এবং নাট্যকার হিসেবে পরিচিত ডেরেক ওয়ালকট ১৯৯২ সালে নোবেল পুরস্কার পান। তাঁর কবিতায় ঔপনিবেশিক শাসনের ভারে ভারাক্রান্ত মানুষের জীবন, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের মানুষজনের খণ্ড-বিখণ্ড আত্মপরিচিতি বার বার উঠে আসে। ২০১৭ সালের ১৭ই মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়।] মুষ্টি একটি মুষ্টি…

ক্ষত ঝরা স্বপ্ন – দেবনাথ সুকান্তের গুচ্ছ কবিতা

ক্ষত ঝরা স্বপ্ন – দেবনাথ সুকান্তের গুচ্ছ কবিতা

১। আর কারো প্রয়োজন নেই শুধু এই নীরবতা এবং বিচ্ছেদবিপন্ন প্রদীপ হয়ে বসে আছে আত্মার সাক্ষী দেবে শব্দ থেকে ঝরে পড়ছে ব্রহ্ম শিরা উপশিরায় তার পুনর্বিন্যাসছেঁড়া খাম থেকে বেরিয়ে বলবে সেপ্রতিটি সিঁড়ির নীচে একটি অন্ধকার কোন বসে থাকেতুমি এক অনাদি বয়স ২। এখানে স্রোত ছিল অন্তরমুখিআমি পাশাপাশি হেঁটে যাওয়া চর থেকে হারানো কিছু অঙ্গীকার পেয়েছিযে…

বঙ্কিমকুমার বর্মন-এর পাঁচটি কবিতা

বঙ্কিমকুমার বর্মন-এর পাঁচটি কবিতা

আত্মীয় রক্তের হাড় তেড়ে আসে যুবতীর ঘুমেগলানো পিচের মতো রাত, এলোমেলো পায়েবিঁধে ফেলে আমাকে শস্যদানায়এত তীক্ষ্ণ খিদের নখ, এই বুঝি ছিঁড়ে ফেলে সম্ভ্রান্ত দাঁতের ফাঁকে আটকে পড়ে ভূখণ্ড পড়শিকেউ নেই যে—হৃদয় বিকোবে স্বপ্নসাজেমেঘলা মন তবু মেঘ হাঁকে জলদরেঅখণ্ড হৃদয় দুলে ওঠে আমলকীর বনে ভস্মতাপে মুখ লুকিয়ে রশ্মির ভেতর—ঢুকে পড়ে বুনে রাখা শুনশান কবিতাঘরনেচে ফেরে ঘরে…

সমর রায়চৌধুরীর পাঁচটি কবিতা

সমর রায়চৌধুরীর পাঁচটি কবিতা

ধ্বংস-ধ্বনি রাগ ‘হংস-ধ্বনি’ আমি আর শুনতে চাই নাআমি শুনি নিজের ধ্বংস-ধ্বনি কে কঁকিয়ে উঠলকে আর্তনাদ করলদুঃখে গুমরে উঠল কেকার হাহাকার শোনা গেলকার দীর্ঘশ্বাসকার অশ্রুকেবলই আমার গলার ভেতর দিয়ে নেমে যায়,নেমে যায়, নেমে যায়, শিশ্নের দিকে, পায়ের দিকেমিশে যেতে থাকে রক্তে আরভারী হয়ে ওঠে মাথা নিজের ধ্বংস-ধ্বনিই কেবল শুনি, শুনতে পাই—রাগ ‘হংস-ধ্বনি’র ভেতরেও তৃতীয় নয়ন আমার…

অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা

অভিনন্দন মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা

লাল চাঁদ অথবা লাল পৃথিবীর কবিতা ১.কোনো এক ভোরেআমাকে গাছের নীচে পুঁতে ফেলো, হে সমাজ।তার উপর ছড়িয়ে দাও তারকাখচিত কিছু গান যে গান মুখে নিয়ে কুলি বস্তি নেমে আসবে পথেযুবকেরা পৌঁছে যাবে অলাতচক্রে ঘেরা রাজসভায়খিদের মুখে দাঁড়িয়েও কাস্তে হেসে উঠবে শনশন করে সেই গান, হে সমাজ, সেই গানতোমাকে উপহার দেব বলে জন্ম থেকে এতদূর এলাম।আমার…

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা – জাদুচৈতন্য

তমোঘ্ন মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা – জাদুচৈতন্য

১জাদুচৈতন্যের তলায় জিভ জৈবশলাকার মতো কাঁপে—এই তির্যক বিদ্যা আয়ত্ত হল। স্থাণু পথ এমন কঙ্কাল হয়েশুয়ে আছে সহজ ভঙ্গিমায়, আমাদের গমন আজওসহজ মনে হয়। মনে হয় দুই ন্যুব্জ ছুরি পরস্পর কাটাকাটিপেরিয়ে আমাদের প্রসব করে থেমে গেছে, এবার আমরাপরবর্তী ছেদক হিসাবে পথ কাটতে কাটতে এগোব।জাদুচৈতন্যের তলায় কিছুই রৈখিক নয়, যেন বৃত্তের কন্দরেভক্তিযোগ জিভ জৈবশলাকার মতো দিক থেকে…

তৌফিক জায়েদ ও সামি আল-কাসেমের কবিতা তর্জমা: সোহেল ইসলাম
|

তৌফিক জায়েদ ও সামি আল-কাসেমের কবিতা তর্জমা: সোহেল ইসলাম

[তৌফিক জায়েদ: প্যালেস্তানীয় নেতা, কবি, সক্রিয় বামপন্থী কর্মী, নাজারেথের মেয়র এবং সমাজ আন্দোলের সঙ্গে যুক্ত তৌফিক জায়েদের জন্ম ১৯২৯ সালের ৭ মে প্যালেস্তাইনের নাজারেথে। চার ভাইবোনের সঙ্গে বেড়ে ওঠা জায়েদের পড়াশোনা শুরু হয় নাজারেথ সরকারি বিদ্যালয় থেকে। মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই জায়েদ রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে পড়েন। ব্রিটিশদের ইহুদিপ্রেম এবং প্যালেস্তাইন দখল জায়েদের শৈশবকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে।…

মৃগশিরা আর কালপুরুষ – গৌতম চৌধুরী

মৃগশিরা আর কালপুরুষ – গৌতম চৌধুরী

১.যে-সর্বনামকে বিদায় দেওয়া হইয়াছিল ঘোর কোনও তমসাতীরে, ঘুড়িটি ভাসিতেছে, এতই উঁচুতে, যে কাটিয়া যাওয়া টের পাওয়া যায় না। মেঘ জমিলে চিলেরাও সেইখানে। তাহাদের চোখে নদী সামান্যই দূরে। জলই সম্পর্করেখা। বন্দর বলিলেই কেন বৃষ্টির কথা মনে হয়। তাহার কত লিপ্ততা, ঘাম ও মুদ্রা বিনিময়, তবু পথে পথে ভিজিবার আমন্ত্রণ। রংবেরঙের কাপড় কাচিয়া মেলিয়া দেওয়া হইয়াছে প্রান্তরে।…

শিবসাগর দেবনাথের পাঁচটি কবিতা

শিবসাগর দেবনাথের পাঁচটি কবিতা

পরমাণু তোমাদেরও হারাবার আগেজেনে রাখি, অনিশ্চয়তা প্রকৃত সামান্য বিষয়সংখ্যালঘু বৃষ্টির ভয়ে যেরকম জলাধার হয় মহাকাশ আমাদের বিনয়-যাজকঅশেষের মাঝে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শেষ হই রোজই —এই জ্ঞান যুগপৎ ভয় ও ভুলের,যেভাবে দেহাতি ভোরদূরোদয় মোরগের ডাক আদায় করেছে …ও বধির স্কুল নিজের ফাটলগুলি কখন-ই বা আলোয় ধরেছি?বোতাম ঘরের তীরে বাড়ন্ত ববিনের সায়যে আমি তস্য বধির, অচিরেই চেয়ে নিতে…

অরূপরতন হালদারের পাঁচটি কবিতা

অরূপরতন হালদারের পাঁচটি কবিতা

১ অবদমন বেড়ালের থাবার নীচে উদ্ভূত গানেরপ্রতিটা নিঃশব্দ এঁকেছে আমার দেওয়ালে,আয়নাটি স্বপ্নের শ্বাস মুছে নেয় প্রহরে প্রহরে,তার মকররেখায় ক্লান্ত সূর্য, তবু ভেঙে যাওয়াথেমে আছে লক্ষ্মণরেখায়। পর্দার বিভঙ্গ দেখেতুমি উন্মত্ত হয়েছিলে, ক্ষিপ্ত পতঙ্গের মতো শিসউড়ে গিয়েছিল তোমার গলাবন্ধ থেকে—সেসবদিন আজ ক্লিশিত পানপাত্রে পড়ে আছে, তুমিওনখের রং পাল্টে ফেলেছ কবেই। কমলা ঝরিয়ারসন্ধ্যা ফিরে গেল, এবার শনির থানে…