ভারতীয় গজদন্ত শিল্প : ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে – অমৃতা চক্রবর্ত্তী 

শেয়ার করুন

মানব সভ্যতার সূচনাপর্ব থেকেই ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে শিল্পকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কখনও নিছকই বিনোদনের জন্য বা কখনও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যকে চিত্তাকর্ষক করে তোলার জন্য শিল্পের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আবার শিল্পী, তার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি থেকেও শিল্পচর্চা করে থাকে। অভিজাত ব্যক্তিরাও অনেক সময় শিল্পের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন এবং সেক্ষেত্রে অনেক সময়েই অভিজাত সম্প্রদায়ের রুচিবোধ শিল্পের ধারাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এই শিল্পবস্তুর উপস্থাপনার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গজদন্ত এমনই একটি মাধ্যম। প্রস্তর, ধাতু, মৃত্তিকা বা কাঠের মতো এই মাধ্যম বহুল প্রচলিত না হলেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। প্রাপ্ত গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের নিদর্শনের পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে—প্রাচীন যুগ, আদি-মধ্যযুগ, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের চরিত্রেও পরিবর্তন এসেছিল। তবে এবিষয়ে আলোচনার পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশের কোন্ কোন্ অঞ্চল থেকে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের নিদর্শন পাওয়া গেছে সে সম্বন্ধে জেনে রাখা প্রয়োজন।

গজদন্ত শিল্পের নিদর্শন পাওয়া গেছে হরপ্পা সভ্যতার (খ্রি: পূ: ২৩০০-১৭৫০) ধ্বংশাবশেষ থেকেই [১]। গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের নিদর্শন পাওয়া গেছে মহেঞ্জোদরো, হরপ্পা, লোথাল, চানহুদরোতে। তবে হরপ্পা সভ্যতার প্রতিটি কেন্দ্রে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্য পাওয়া গেছিল, এমনটা নয়। খ্রি: পূ: ৬ষ্ঠ-৪র্থ শতাব্দীতে কৌশাম্বী, এরাণ, রূপার, প্রভাস, তক্ষশিলার ভির-মাউন্ড, নগদে, খ্রি: পূ: ৪র্থ-২য় শতাব্দীতে (মৌর্য যুগে) উজ্জয়িনী, বিহার, পাটনা, তক্ষশিলার ভির-মাউন্ডে, খ্রি: পূ: ২য়-খ্রি: ১ম শতাব্দীতে পাটনা, মহারাষ্ট্র, হস্তিনাপুর, নেভাসা, ব্রোচ, নালন্দা, তক্ষশিলার ভির-মাউন্ড, চন্দ্রকেতুগড়ে; খ্রি: ১ম-২য় শতাব্দীতে সিরকাপ, কোল্ডমটুতে এবং খ্রি ৪র্থ-৬ষ্ঠ শতাব্দীতে খোটান, টের ইত্যাদি স্থানে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের নিদর্শন পাওয়া গেছে। খ্রি: ৬ষ্ঠ শতাব্দী পর্যন্ত সময়কাল প্রাচীনযুগ হিসাবে পরিচিত। এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, হরপ্পা পরবর্তীকাল থেকে প্রাক্-খ্রি: পূ: ৬ষ্ঠ শতাব্দী পর্যন্ত গজদন্ত শিল্পের তেমন নিদর্শন পাওয়া যায়নি। খ্রি: পূ: ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে পুনরায় নগরের পত্তন হলে গজদন্ত শিল্প জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আদি-মধ্যযুগে (খ্রি: ৭ম-১৩শ শতাব্দী) কাশ্মীর ও ওড়িশায়, মধ্যযুগে (খ্রি: ১৪শ- ১৮শশতাব্দী) ওড়িশা, বিজয়নগর, কর্ণাটক, গুজরাট ও গোয়ায় এবং আধুনিক যুগে (খ্রি ১৯শ-২০শ শতাব্দী) মাইসোর, লক্ষ্ণৌ, জয়পুর ও বাংলায় গজদন্ত শিল্পের প্রসার ঘটেছিল। কাজেই গজদন্ত শিল্পের সর্বভারতীয় স্তরে প্রসার ঘটেছিল [২]।

প্রাচীন যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত কালপর্যায়ে গজদন্ত নির্মিত যে দ্রব্যগুলির নিদর্শন পাওয়া গেছে সেগুলিকে
চার ভাগে ভাগ করা যায়—

১) গৃহসজ্জা ও অঙ্গসজ্জার দ্রব্যাদি
২) পশু ও মানব মূর্তি
৩) দেব-দেবীদের মূর্তি
৪) সীল ও পাশা

তবে ভারতীয় উপমহাদেশে অতীতে গজদন্ত শিল্পের স্বরূপ কেমন ছিল তা অনুধাবন করতে গেলে প্রাপ্ত দ্রব্যগুলির নিরীক্ষণ করলেই চলবে না, লিখিত উপাদানের বর্ণনার প্রতিও দৃকপাত করা প্রয়োজন।

হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে যে লিখিত উপাদান পাওয়া গেছে, তাদের পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাই সেক্ষেত্রে কেবল প্রাপ্ত উপাদানগুলির উপরেই দৃকপাত করা প্রয়োজন। এই ধ্বংসাবশেষ থেকে যে নিদর্শনগুলি পাওয়া গেছে তা হল—একটি ফলকে তক্ষণ করা দণ্ডায়মান মানব মূর্তি, হরিণ, চিরুনি, চুলের কাঁটা, সূর্মাদণ্ড, পিন, মৎস্য, পাশা, হাতল, ফুলদানি, হাতা, স্কেল, সীল ইত্যাদি [৩]। কাজেই বলাই যায় যে, এই সময়ে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্য প্রধাণত বিনোদনের উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হত। লোথালে উৎখননের ফলে গজদন্ত শিল্পীর গৃহের নমুনা পাওয়া গেছে [৪]। হরপ্পায় প্রাপ্ত এই নিদর্শনগুলি নান্দনিকতার সাক্ষ্য বহন করে। তবে পূর্ণরূপে তক্ষিত মানবমূর্তির নিদর্শন এখানে পাওয়া যায়নি।

নব্যপ্রস্তর ও তাম্রপ্রস্তর যুগের প্রত্নক্ষেত্র থেকে গজদন্তের নিদর্শন তেমন পাওয়া যায়নি। আবার খ্রি: পূ: ৬ষ্ঠ শতাব্দী থেকে নগরের উত্থান হলে বহুল পরিমাণে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের নিদর্শন পাওয়া গেছে। খ্রি: পূ: ৪র্থ-২য় শতাব্দীতে মৌর্য শাসকদের শাসনকালে রাষ্ট্রীয় নির্দেশে হাতি হত্যা নিষিদ্ধ হওয়ায় গজদন্ত শিল্প তেমন উন্নতি করতে পারেনি। অর্থশাস্ত্রে হাতি হত্যার জন্য প্রাণদণ্ডের নির্দেশ রয়েছে [৫]। পুনরায় খ্রি: পূ: ২য়-খ্রি: ২য় শতাব্দীতে গজদন্ত শিল্পের প্রসার ঘটেছিল। উৎখননের ফলে প্রাপ্ত নিদর্শনের পাশাপাশি লিখিত উপাদান থেকেও এই সত্য অনুধাবন করা যায়। লিখিত উপাদানের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল—সাঁচীর স্তূপের দক্ষিণ প্রবেশ পথের তোরণদ্বারে উৎকীর্ণ লেখটি। এই লেখটি থেকে জানা যায়, বিদিশায় গজদন্ত শিল্পীদের একটি গিল্ড ছিল এবং তারাই এই তোরণদ্বারের মূর্তি তক্ষণ করেছিল [৬]। কাজেই এই সময় বিদিশায় গজদন্ত শিল্প যে খুবই উন্নতি করেছিল, এমনটা বলাই যায়। এই কালপর্বে চিরুনি, হাতল, সূর্মাদণ্ড, বালা, পাশা, চুলের কাঁটা ইত্যাদির মতো রূপসজ্জার ও গৃহসজ্জার দ্রব্যাদির সাথে সাথে পূর্ণরূপে তক্ষিত মূর্তির নিদর্শনও পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে পাটনা থেকে প্রাপ্ত মস্তকহীন সৈন্যমূর্তি, ভোকরদনে থেকে প্রাপ্ত ভগ্ন নারীমূর্তি, টের থেকে প্রাপ্ত নারী মূর্তি উল্লেখযোগ্য [৭]। এই মানব মূর্তিগুলির মধ্যে অধিকাংশই নারী মূর্তি। এই সময় প্রচুর পরিমাণে উচ্চমানের চিরুনির নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই চিরুনিগুলির মধ্যভাগের দাঁড়ের ঊর্ধ্বভাগে বিভিন্ন ধরনের অলংকরণ লক্ষ করা যায়। অত্যন্ত সুদক্ষভাবে এই অংশ তক্ষণ করা থাকত এবং এর নান্দনিকতা আজও নজর আকর্ষণ করে। হরপ্পায় প্রাপ্ত চিরুনিতে যে গোলাকৃতি নক্সা [৮] লক্ষ করা গেছিল তার স্থানে এই সময় নিচবচে তক্ষিত মানব মূর্তি বা পশু মূর্তি বা নক্সা [৯] জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এই কালপর্বে আফগানিস্তানের বেগ্রামে গজদন্ত শিল্পের প্রসার ঘটেছিল। বেগ্রাম থেকে একাধিক ফলক পাওয়া গেছে। এই ফলকগুলিতে রূপসজ্জার দৃশ্য, নৃত্য-গীতের দৃশ্য, পশু-পাখি, পৌরাণিক জন্তুদের চিত্র লক্ষ করা যায় [১০]। এছাড়াও একটি ফলকে একটি অলংকৃত তোরণদ্বারের নীচে দুজন রমণীকে লক্ষ করা যায় [১১]। এই দুই রমণী স্বালঙ্কারা এবং অত্যন্ত সুনিপুণভাবে এই দুই মূর্তি তক্ষণ করা হয়েছিল। মূর্তি তক্ষণের উৎকর্ষতা এই অঞ্চলে প্রাপ্ত দুটি পূর্ণরূপে তক্ষিত মকরের উপরে দণ্ডায়মান নারীমূর্তিতেও ধরা পড়ে। আবার এই কালপর্বে ভারতীয় গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের যে আন্তর্জাতিক বাজারও গড়ে উঠেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় পেরিপ্লাস অফ দ্য এরিথ্রিয়ান সি নামক গ্রন্থ থেকে। এর বর্ণনা অনুসারে বারিগাজা বা বর্তমান ব্রোচ থেকে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি হত। মালব ও টের থেকে এখানে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের রপ্তানি হত। মালাবার উপকূল ও ওড়িশার গজদন্ত খুবই প্রসিদ্ধ ছিল। ওড়িশার গজদন্ত দশার্থে নামে পরিচিত ছিল। রোমে ভারতীয় গজদন্ত বাজার গড়ে উঠেছিল [১২]। ভারতীয় গজদন্তের যে একটা আন্তর্জাতিক বাজার গড়ে উঠেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় ইটালির পম্পেই-র নিদর্শন থেকে। পম্পেই-র ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত একটি আলমারী থেকে একটি গজদন্ত নির্মিত দণ্ডায়মান নারী মূর্তি পাওয়া গেছে। মূর্তিটি স্বালঙ্কারা এবং এর কেশসজ্জা নজর কাড়ে। তবে মূর্তিটির নির্মাণস্থল সম্বন্ধে বিতর্ক রয়েছে। গোদাবরী নদী তীরস্থ ভোগবর্ধন নাকি বিদিশায় এই মূর্তিটি নির্মাণ হয়েছিল সেবিষয়ে বিতর্ক রয়েছে [১৩]। আবার খ্রি: ৪র্থ-৬ষ্ঠ শতাব্দীতে গজদন্ত শিল্পের তেমন প্রসার লক্ষ করা যায় না। উত্তর ভারতে এসময়ে গুপ্তরাজাদের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়েছিল। যে স্বল্প পরিমাণ গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের নিদর্শন এই কালপর্বে পাওয়া গেছে তার মধ্যে টেরে নির্মিত নারীমূর্তি ও মধ্যভারতে নির্মিত হনুমান মূর্তিটির উল্লেখ করতেই হয় [১৪]। মৌর্যযুগের মত গুপ্তযুগেও গজদন্তের প্রাচুর্য হ্রাস পাওয়ার কারণ কেন্দ্রীয় শক্তির হস্তি সংরক্ষণের উপর অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ ছিল কিনা—সে বিষয়ে প্রশ্ন এসেই যায়। 

আদি-মধ্যযুগে গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের চরিত্রে বড়ো ধরনের পরিবর্তন এসেছিল। প্রাচীন যুগে গৃহ ও অঙ্গ সজ্জার দ্রব্যাদি, পশু ও মানবমূর্তি এবং সীল ও পাশার প্রাধান্য লক্ষ করা গেছিল। কিন্তু এই সময়কালে ধর্মীয় দিকটিও এর সাথে যুক্ত হয়। কাশ্মীর অঞ্চলে ৮ম শতাব্দীতে নির্মিত একাধিক বৌদ্ধমূর্তি পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে রয়েছে আর্চের নীচে ধ্যানমুদ্রায় উপবিষ্ট বুদ্ধমূর্তি, অবলোকিতেশ্বর লোকনাথ মূর্তি, বুদ্ধমূর্তি, বোধিসত্ত্ব, মঞ্জুশ্রী, বুদ্ধকে আক্রমণে উদ্যত মার-এর মূর্তি ইত্যাদি [১৫]। সম্ভবত বৌদ্ধ পৃষ্ঠপোষকতাতেই এই অঞ্চলে এহেন গজদন্ত শিল্পের প্রসার হতে পেরেছিল। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, বৌদ্ধ দেবদেবীদের মূর্তি এই কালপর্বে নির্মিত হলেও ব্রাহ্মণ্য, দেবতাদের মূর্তি এই কালপর্বে নির্মিত হয়নি। ব্রাহ্মণ্য দেবতাদের মূর্তির নিদর্শন পাওয়া গেছে মধ্যযুগ থেকে। এদের মধ্যে ওড়িশায় প্রাপ্ত রাধা, কৃষ্ণ, গণেশের মূর্তি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। পূর্ণরূপে তক্ষিত এই মূর্তিগুলি গজদন্ত শিল্পের উৎকর্ষ দৃষ্টান্ত [১৬]।  

মুঘলযুগের শেষ লগ্ন থেকে গজদন্ত শিল্প আঞ্চলিক রাজন্যবর্গের আনুকূল্য লাভ করেছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সুবে বাংলার রাজধানী স্থাপিত হলে এই অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গজদন্ত শিল্পের প্রসার ঘটেছিল। প্রাথমিক পর্বে স্থানীয় বৃটিশ সৈন্যরা গজদন্ত শিল্পের ক্রেতা ছিলেন। ১৯শ শতাব্দীতে এই অঞ্চলে গজদন্ত শিল্প সমৃদ্ধি লাভ করেছিল। বাহক বাহিত পালকি, পান্সি নৌকা, নবাব বাদশা, বেগম-বাঁদী, পাইক বরকন্দাজ, আম্বোরী হাতি, দেবদেবীদের মূর্তি প্রভৃতি এই অঞ্চলের গজদন্ত শিল্পের উৎকৃষ্টতম নিদর্শন। কিন্তু ক্রমে ব্রিটিশ সৈন্যবাস হিসাবে বহরমপুরের গুরুত্ব কমে যাওয়ায় [১৭], ম্যালেরিয়ার প্রকোপে [১৮], ১৯৭৫-৭৬ খ্রি:-র বন্যদণ্ড আইন বলবৎ হওয়ায় [১৯] এবং আমেরিকায় এর রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় [২০], এই শিল্প ক্রমশ অবক্ষয়ের পথে চলে যায়। শিল্পীরা গজদন্তের বিকল্প মাধ্যমের ব্যবহার করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। আবার উচ্চমূল্যের জন্য ক্রেতার অপ্রতুলতাও এই শিল্পের ক্রম অবনতির একটা বড়ো কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

গজদন্ত নির্মিত দ্রব্য কখনোই সর্বসাধারণের ব্যবহার্য ছিল না। আবার হস্তি সংরক্ষণের জন্য বারবার এই শিল্প বাধাপ্রাপ্তও হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই শিল্পের যে নিদর্শন পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে অতীতের ভারতীয় সমাজের একটা চিত্র পাওয়া যায়। অতীতে বিনোদনের ধারা বা নারী-পুরুষের রূপসজ্জাবোধ কেমন ছিল, পৃষ্ঠপোষকগোষ্ঠী কারা ছিল, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কোন্ অঞ্চলের মধ্যে গড়ে উঠেছিল ইত্যাদি সম্বন্ধে বহু মূল্যবান তথ্য গজদন্ত নির্মিত দ্রব্য নিরীক্ষণ করে অনুধাবন করলে জানা যায়। আবার গজদন্ত নির্মিত দ্রব্যের ব্যবহার সমাজের উচ্চকোটার অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাই প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে এই সামগ্রীর উপস্থিতি একটি সমাজের আর্থিক অবস্থার স্বরূপ অনুধাবনেও যে সহায়তা করে, এমনটা বলাই যায়।


(১) ভি. পি. দ্বিবেদী, ইন্ডিয়ান আইভরিস, পৃ: ২৮।
(২) তদেব, পৃ: ৫০- ১৩৪।
(৩) তদেব, পৃ: ৩১-৩৯।
(৪) তদেব, পৃ: ৩০।
(৫) তদেব, পৃ: ২০।
(৬) তদেব, পৃ: ১৬-১৭।
(4) তদেব, পৃ: ৫৩-৬৯।
(৮) তদেব, পৃ: ৩২।
(৯) তদেব, পৃ: ৭৪-৭৬।
(১০) তদেব, পৃ: ৮৭-৯৪।
(১১) তদেব, পৃ: ৯০-১১
(১২)তদেব, পৃ: ২৭।
(১৩)তদেব, পৃ: ৬৬।
(১৪) তদেব, পৃ: ১৯
(১৫) তদেব, পৃ: ১০১-১০৫।
(১৬) তদেব, পৃ: ১১৯-১২০।
(১৭) বরুন চক্রবর্ত্তী, লোকজ শিল্প, পৃ: ৩৫০।
(১৮) তদেব, পৃ: ৩৫০।
(১৯) তদেব, পৃ: ৩৫।
(২০) তদেব, পৃ: ৩৫৩।

-:গ্রন্থপঞ্জি :-

দ্বিবেদী, ভি. পি., ইন্ডিয়ান আইভরিস, দিল্লী, ১৯৩৬।

পুলকেন্দু সিংহ, ‘ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে গজদন্ত শিল্প : মুর্শিদাবাদ ঘরানার উদ্ভব-বিকাশ-অবলুপ্তি’, বরুন চক্রবর্ত্তী (সম্পাদিত), লোকজ শিল্প, কলকাতা, ২০১১।

বানু, জিনাত মাহ্‌রুখ, ‘হাতীর দাঁতের শিল্পকর্ম’, সি.এল.আই.ও, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃ: ৪৭-৭১, জাহাঙ্গিরনগর ইউনিভার্সিটি, ঢাকা, বাংলাদেশ, জুন ১৯৮৮।

শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *