অবাক লিমেরিক – শুভ্র দত্ত
দুই প্রতিবেশী দেশে দ্বেষাদ্বেষি, রেষারেষি চলে খোলাখুলি ভূমিসীমান্তে পাহাড়প্রান্তে অবিরত চলে গোলাগুলি; দুই দেশবাসী, সুদূর বিদেশে অবাক কান্ড, তারা হেসে হেসে ভুলে দ্বেষাদ্বেষি করে মেশামেশি, রেষারেষি ছেড়ে কোলাকুলি।
দুই প্রতিবেশী দেশে দ্বেষাদ্বেষি, রেষারেষি চলে খোলাখুলি ভূমিসীমান্তে পাহাড়প্রান্তে অবিরত চলে গোলাগুলি; দুই দেশবাসী, সুদূর বিদেশে অবাক কান্ড, তারা হেসে হেসে ভুলে দ্বেষাদ্বেষি করে মেশামেশি, রেষারেষি ছেড়ে কোলাকুলি।
জঙ্গলের মধ্যে আমার ঘর। রাতে হানা দেয় শ্বাপদেরা, লুন্ঠিত ক্ষুধান্ন, লন্ডভন্ড গৃহস্থালী। প্রতিদিন, একটু আগুন, মুষ্টিবদ্ধ হাতের আস্ফালন আর প্রত্যয়ের আঁচে মুছে যায় অমানিশার অন্ধকার। প্রতিরোধের লড়াইয়ে ক্লান্ত আমি। তবু সারাদিন কাঠঠোকরার ঠুক ঠুক, ক্লান্ত দুপুরে কোকিলের গান, বসন্তে পলাশ শিমুলে রঙের আগুন নিয়ে আসে নতুন উদ্যম। জঙ্গলের মধ্যে আমার ঘর। পলাশ শিমুল কখন যেন…
এ কেমন যুদ্ধ ‘পরিতোষ’? অসম আহবে তুমি কি দেশভক্তি, দেশপ্রেম দেখাতে পারনি- পাণ্ডব কারা ? কারাই বা শত্রু কৌরবে সঙ্গ দিলো , এ কোন যুদ্ধের ছায়া কাহিনী? নক্ষত্রের দেশে , জোৎস্না মিশেল সুগন্ধি চাঁদে উঁকি দিচ্ছে তোমার আমার বপন ক্ষেত্রভূমি নিভন্ত আগুন আবার জ্বললো নিশীথ রাতে ক্ষেত্রভূমি , বধ্যভূমিতে রক্ত মেশালে তুমি । এ যুদ্ধ…
চতুর্দিকে চাপ চাপ রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে মিত্রপক্ষ নাম দিয়েছে “বিপ্লবের রক্ত”! আর শত্রুপক্ষরা নানা নামে অলংকৃত করে চলেছে। বুদ্ধিজীবীরা স্ক্রিপ্ট হাতে তৈরী ক্যামেরার সামনে বসতে। প্রশ্ন করলাম তাকে “আমাকে একটু বুঝিয়ে দেবেন, একটি দুবছরের কোমল শরীরের রক্ত বিপ্লবকে ঠিক কতখানি সাফল্য মন্ডিত করবে??” অথবা ওই রাস্তার মোড়ের চা এর দোকানের দিদিমার রক্ত কতটা এগিয়ে দেবে…
সিন্ধু নদের উপত্যকায় দাঁড়িয়ে হে বসন্তের কবি, তুমি কি শুনতে পাও ? কোনও মিলনোৎসবের সুর ! মরু-দেশ হতে ভেসে আসা বালুকণার শতাব্দী প্রাচীন পলির স্তরে কি খুঁজে পাবে ? কোনও মিষ্টি প্রেমের গীতি কাব্য! উর্বর মাটির গন্ধ নিয়ে তোমার কলম কি লিখবে ? কোনও চাষির ফসল তোলা নবান্নের গান । এখানে আঁধার কাটিয়ে লাল সূর্য…
আমাদের ফ্রিজগুলো ভরে আছে বারুদে বাতাস ভরে আছে তীব্র ঝাঁঝালো সীসাগন্ধে আমাদের সমস্ত পকেট বুলেটে, পিস্তলে আর আমাদের মনের বাক্সগুলি দামি অন্ধকারে প্রতিটি রাতের চাদর ফুটো করে কে ওরা বাইকবাহিনী! ভাতের থালায় ছিটকে পড়ে জমাট জমাট রক্তকাহিনি প্রতিটি বাটিতে মাছের ঝোলের নীচে চাপ হয়ে আছে প্রতিশোধ আগুন প্রতিটি ক্ষতের মুখে কে ওরা ঠেসে দিল মুঠো…
প্রাচীন মানুষটার কাছে জেনেছিলাম যুদ্ধ হাঁটছে অনমনীয় পুঁজি অমঙ্গলের দিকে সিলেবাসে ধোঁয়া-আগুন-পেশাদার রাজনীতি নেশাতুর হাওয়ায় ব্রেকিং নিউজ, খুনীদের বিচরণ অর্জুনের তীর লক্ষ্যভেদে। হাভাতে বিশ্ব, জল জমা উঠোন দুঃখের রাত পোহায় ভাঙা চোরামুখ, আপদ উদ্বাস্তু! ছপছপ পায়ের শব্দ উড়ে আসে টান টান বিবেক-বিশ্বাস-রাজপথ ভাসিয়ে অবিরাম- শব্দ ফেটে ফেটে পৃথিবী জাগায়। একটা সিগনাল – ‘যুদ্ধ নয় শান্তি…
আজকাল ‘রাজনীতি’ কথাটি বললে চট করেই আমাদের মাথায় ‘সংস্কৃতি’র ধারণা তৈরি হয় না। নানামুখী চিন্তা-চেতনায় রাজনীতি বলতে এমন একটি ছবি ফুটে উঠে, যা দেখলে বা ভাবলে আমরা নিজেরাই আঁৎকে উঠি। ফলে সমাজের এক শ্রেণির কাছে রাজনীতি এখন প্রায় অচ্ছুৎ একটি ধারণায় পর্যবসিত হয়েছে। প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের ভাবনার নানা বাঁক উপবাঁক আমাদের সামনে ধরা পড়ে। এই…
সক্রেটিস একদিন আলো হারিয়েছিলেন। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষটি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন বন্দী; আদতে তিনি উপভোগ করতে চাননি- দেশীয় বিদেশীয় প্রহসন। দ্বন্ধময় চলার পথে ছিলনা রাজনৈতিক সংশয়- ছিল শিক্ষালোভী আনন্দ, আগুন মেপে খাওয়া। সময়ের দিকপরিবর্তন জানিয়েছিল তাকে- ” গ্লোবাল ওয়ার্মিং” সুযোগ হারাননি তিনি; বেছে নিয়েছিলেন অন্ধকারময় আলোর পথ।
মুখ ফিরিয়ে নিও না– একবার মুখ ফিরিয়েছিলাম আমি–আর দেশ হারিয়েছি– আর ভাষা হারিয়েছি যা হারিয়েছি তাদের নামও হারিয়েছি, আকার হারিয়েছি রয়ে গেছে কেবল কাগুজে মানচিত্রের উপর ফাঁকা কিছু স্থান– নিঃশব্দ, শুনশান; এখন রুখু হাওয়ায় কেবল ধুলো ওড়ে সেখানে রয়ে গেছে অর্থহীন কয়েকটা শব্দ; গোঙানির মত, সেই ভৌতিকতা–শিহরণ আনে মুখ ফিরিয়েছিলাম, তাই অপেক্ষায় আছি একদিন কেউ…