সুপুরিবনের সারিতে – অমিতাভ গুপ্ত

সুপুরিবনের সারিতে – অমিতাভ গুপ্ত

অন্যান্য অনেক বিশিষ্ট মানুষের মতো শঙ্খ ঘোষের সঙ্গেও প্রথম দেখা হয়েছিল মিছিলে। দেখা হয়েছিল, এইমাত্র। কোনো কথা হয়নি। বর্তমান প্রতিবেদক তখন নিতান্তই কলেজের অর্বাচীন ছাত্র আর তিনি ইতিমধ্যেই সুখ্যাত, সুপরিচিত। ১৯৬৬ সন। খাদ্য আন্দোলনে উত্তাল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ছাত্র বিক্ষোভে, শ্রমিক-কৃষকের বিক্ষোভে মিলিত ধ্বনি উঠেছে “গ্ৰামনগরে ডাক পাঠাই/জোট বাঁধো তৈরি হও”। সেই ক্ষুব্ধ মিছিলে সমবেত হয়েছিলেন…

শঙ্খ ঘোষ: আমাদের প্রত্যয়ে – কিন্নর রায়

শঙ্খ ঘোষ: আমাদের প্রত্যয়ে – কিন্নর রায়

শঙ্খ ঘোষ প্রয়াত হয়েছেন তাঁর বাড়িতে, নব্বই বছর বয়সে। এই সূত্র সবই সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া, এখন কথা হল যে, কবি হিসেবে, গদ্যকার হিসেবে, চিন্তক হিসাবে, ছোটোদের লেখক হিসেবে তাঁর কথা নানাভাবে বলা যায়। আমার সঙ্গে তাঁর যে খুব হৃদ্যতা ছিল তেমন নয়, কোনো সভায় বা সমাবেশে দেখা হলে উনি যতটা ঘাড় হেলাতেন আমিও ঠিক ততটাই…

তোমার অনেক দেওয়া হলো – সন্দীপন চক্রবর্তী

তোমার অনেক দেওয়া হলো – সন্দীপন চক্রবর্তী

অনেকেরই ধারণা, রীতিমতো এক গুরুগম্ভীর মানুষ ছিলেন তিনি। খুব একটা ঠাট্টা ইয়ার্কি করতেন না নিজে। হয়তো তাঁর পোশাক, গভীর কণ্ঠস্বর, মিতকথন, প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য—সব মিলিয়ে অনেকের মনে তৈরি হয়ে আছে এরকম একটা ধারণা। কিন্তু আদতে তার উলটো। মানুষটি ছিলেন আদ্যন্ত রসিক। অথচ সেই রসিকতা কখনোই শালীনতার সীমা ছাড়াত না। কথা কম, কিন্তু যেটুকু বলতেন, সেটুকু অব্যর্থ।…

ঘুমিয়ে পড়া অ্যালবাম – পিয়াস মজিদ

ঘুমিয়ে পড়া অ্যালবাম – পিয়াস মজিদ

আমেরিকার আয়ওয়া শহরে কবি-লেখকদের এক বিশ্ব-সমাবেশে আট মাস অবস্থানের অভিজ্ঞতা নিয়ে শঙ্খ ঘোষ ডায়েরিধর্মী বই লিখেছিলেন, “ঘুমিয়ে পড়া অ্যালবাম” নামে। ঊননব্বই বছর পেরিয়ে তিন মাস পূর্ণ হওয়ার কিছু আগে ২১শে এপ্রিল, ২০২১ তাঁর প্রয়াণের খবরটা শুনে এই শিরোনামটা মনে আসছে শুধু। বিস্তৃত এক মহান জীবনে যে সৃষ্টি তিনি রেখে গেছেন, তা আমাদের পাঠস্মৃতিতে ছবির মতো…

করোনাকালে চরম দুরবস্থা গৃহশিক্ষকদের – দীপক সাহা

করোনাকালে চরম দুরবস্থা গৃহশিক্ষকদের – দীপক সাহা

পড়ন্ত বিকেল। লকডাউনে নিভৃতবাস যাপনে খোলা ছাদে পায়চারি করছি। বাড়ির সামনের প্রায় ফাঁকা রাস্তা দিয়ে ছিমছাম প্যান্টজামা পরিহিত এক দোহারা সুঠাম যুবক সাইকেলের পেছনের ক্যারিয়ারে একটা ছোটো ভারী বস্তা চাপিয়ে কী যেন হাঁক পাড়তে পাড়তে চলেছেন। ঠিক ঠাহর করা যাচ্ছে না। মুখের মাস্কটি হালকা ঝুলে। আমাকে দেখেই সাইকেলের গতি কমিয়ে এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে…

জয়ীতা ব্যানার্জির পাঁচটি কবিতা

জয়ীতা ব্যানার্জির পাঁচটি কবিতা

সমস্ত সূর্যাস্ত গেল প্রার্থনাবিহীন ১ তুমি সে অভাববোধ। আত্মরতি অথবা সঙ্গমকালেচোখের অবাক দৃষ্টি–সজলতার বিবিধ কারণঅধিক সচেতনতা, ততোধিক নিরুদ্বেগে ফিরে যাওয়াপোশাকের কাছে। অনুশোচনার মতো দ্বিধাগ্রস্ত এইপ্রায়ান্ধ আলোর নীচে স্বচ্ছ পর্দা টানা আনন্দ মুকুরমেয়াদোত্তীর্ণ ফুলের কাছে আমরা তবু স্মৃতিচারণশিখি। অনাবিষ্কৃতের মোহে শিখি ব্যয়, ভ্রম ও ভণিতাতোমার করুণা আজও সমান অসহনীয় মনে হয়তবু যে কোনো ক্ষতেই আমাদের প্রথাসিদ্ধ…

খাইরুল ও খোদা – আলিউজ্জামান

খাইরুল ও খোদা – আলিউজ্জামান

এই গাঁয়ের নাম দুর্গাপুর। দশ পা পিছনে ফেললে মরিয়মদের বাড়ি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঢালাই রাস্তার প্রকল্প যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকেই এই ঘাটের শুরু, বাম দিকে চক্রবর্তীদের বাড়ি আর ডানে নবকৃষ্ণ হালদারের গান…. পালাইয়া পালাইয়া মরিও মন বিরাগ জানো নাচাঁদের গায়ে সিঁধকেটেতোর কলঙ্ক ঘুচল না। গানের রেশ বাতাসের সঙ্গে মিলিয়ে যাওয়ার আগেই যখন গুম হয়ে যায়…

অ্যালজাইমার – সুব্রত নাগ

অ্যালজাইমার – সুব্রত নাগ

‘‘এক এ চন্দ্র, দুই এ পক্ষ, তিনে?” ‘‘বে… বেদ…” ‘‘সে তো চারে। তিনে নেত্র মনে থাকে না কেন? পাঁচে পঞ্চবাণ, ছ’য়ে…?” ‘‘ঋ–… ঋতু–” ‘‘বাঃ, সাতে?” ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে অসহায় চোখ দুটো। স্মৃতির অতলে ডুব দিয়ে প্রাণপণে উত্তর ছেঁচে আনতে চেষ্টা করে। পারে না। জিজ্ঞেস করি, ‘‘ক’টা ভাওয়েল আছে?” এক সময়ের ইংরেজির দুঁদে মাস্টার জবাব…