বন্যায় সব ভেসে গেছে ক’টা জামাপ্যান্ট ছাড়া কিছুই আনতে পারিনি… ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে কথাটা বলেছিল সে। হঠাৎ করে ঘরে আগুন লেগে গেলেকিংবা আচমকা ভূমিকম্প হলেমানুষ কী নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে! কী নিয়ে! ও রকম কোনও দিন যদি আমার জীবনে আসেতা হলে কী কী নেব? কী কী?তার একটা তালিকা তৈরি করে রেখেছিলাম আমি। সেই তালিকার…
“যুদ্ধ” শব্দটা যেখানে যখনই উচ্চারিত হয় তখনই বিভীষিকাময় কিছু চিত্রকল্প এবং তার সাথে সম্পর্কিত কিছু শব্দের অনুষঙ্গ আমাদের প্রাত্যহিকতা সর্বস্ব বেঁচে থাকাকে যেন শিহরিত করে। তখন যুদ্ধ আর সেই চিত্রকল্প বা তার সাথে সম্পর্কিত শব্দের অনুষঙ্গগুলির মধ্যে কোন প্রভেদ থাকে না, তারা হয়ে ওঠে একই সমান্তরাল রেখায় অবস্থানকারী দুটি বিন্দুর মত অভিন্ন, হয়ে ওঠে একে…
আমাদের প্রজন্মের অনেকেই ছোটোবেলায় গরমের ছুটি বা পুজোর ছুটিতে টিভির পর্দায় গুপী গাইন বাঘা বাইন দেখেছি। যুদ্ধের ময়দানে আগুয়ান দুই বাহিনীর সেনাদের জন্য ভূতের রাজার বরে মিষ্টির হাঁড়ি নেমে এল আকাশ থেকে এবং… যুদ্ধ থেমে গেল। পেটের খিদে মেটানোর লড়াইয়ের কাছে পৃথিবীর বাকি সব লড়াই তুচ্ছ, সত্যজিৎ রায় কত সহজে বুঝিয়েছিলেন। খিদে কি খালি আমাদেরই…
সীমান্ত সেজে ওঠে অস্ত্রে ও শস্ত্রেযখন পড়েছে টান খাদ্যে ও বস্ত্রেসেসব সমস্যা কি? আমি-মানি-জানিনাশ্রমিক কৃষক মরে? অতসব মানি না আমি এক ভারতীয়, চাই শুধু যুদ্ধবাকি সব ভুলে গেছি আগামুড়োসুদ্ধদু’টো বোম ফেলে এলে ওপাশের দেশটায়দু’মুঠো জুটবে কিছু? খিদেতে ও তেষ্টায়? গোলি মারো প্রশ্নতে গোল্লায় যাও রেদুশমন মেরে ফুসমন্তর গাও রেএদেশের কোণে কোণে সীমাহীন দৈন্যসীমান্তে মরে যায়…
২০১৭ সালের ভারতবর্ষে উগ্র জাতীয়তাবাদী আস্ফালন আর যুদ্ধ জিগির জনগনের এক উল্লেখযোগ্য অংশের মনের দখল নিয়েছে। ট্রেনে বাসে আলোচনার মাঝে, ফেসবুক-হোয়াট্সঅ্যাপ-ট্যুইটারে এই উন্মাদনার প্রকাশ ঘটছে প্রায়ই। উত্তেজনার পারদ চড়ানোর কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে একাংশের মিডিয়া। টিভি চ্যানেল ও মুদ্রন মাধ্যমে সংঘাতের মনোভাবকে সুকৌশলে উৎসাহিত করা হচ্ছে। উগ্রজাতীয়তাবাদী হুঙ্কারে অনেক সময়েই চাপা পড়ে যাচ্ছে যুক্তির…
যুদ্ধ চলতেই থাকে, ছোটো হোক বা বড়ো আমরা ভাবি কবিতা লিখে যুদ্ধ থামিয়ে দেবো কবিদের কেউই পাত্তা দেয় না পাত্তা দেয় বিজ্ঞানীদের, যাঁরা নতুন নতুন অস্ত্র আবিষ্কার করে চলেছেন তা প্রয়োগ হয়ে চলেছে ছোটো যুদ্ধগুলোয় বাড়ি ঘর শহর মনে হয় পাঁপড়ের তৈরি যুদ্ধ কখনও ফুরোবে না, আমরা ফুরোবো দেশে-দেশে সৈন্যদল থাকবে, আমরা হাত কামড়াবো একদল…
ভিড়ের মধ্যে আছি বেঁচে বেশ। আমার বারান্দায় মাতাল রোদ এক উন্মত্ততায় ক্রমাগত মানুষ আর দানবের ভিড় আমি আঙুলের কড় গুনে যাই দিনের ওপর দিন। দেওয়াল জুড়ে দেওয়াল ভাঙার ডাক কাজে আর কথায় অনেক ফাঁক লেগে আছে কত আঁচড় এলোমেলো আমি দিন গুনে যাই। আমার বারান্দায় ভাঙা বেড়া দেখে যাই – লাশের ওপর লাশ চলে গুনীজনের…
“যুদ্ধ” শব্দটা যেখানে যখনই উচ্চারিত হয় তখনই বিভীষিকাময় কিছু চিত্রকল্প এবং তার সাথে সম্পর্কিত কিছু শব্দের অনুষঙ্গ আমাদের প্রাত্যহিকতা সর্বস্ব বেঁচে থাকাকে যেন শিহরিত করে। তখন যুদ্ধ আর সেই চিত্রকল্প বা তার সাথে সম্পর্কিত শব্দের অনুষঙ্গগুলির মধ্যে কোন প্রভেদ থাকে না, তারা হয়ে ওঠে একই সমান্তরাল রেখায় অবস্থানকারী দুটি বিন্দুর মত অভিন্ন, হয়ে ওঠে একে…
পেশিবলে গির্জা নিল লিখিয়ে গৃহবন্দী গালিলিওকে দিয়ে “পৃথিবী ঘুরছে না!” কিন্তু কি আর আসে যায় তাতে, পৃথিবী ঘুরত, পৃথিবী ঘুরছে, পৃথিবী ঘুরবেও! সৌর ঔরস জারিত পৃথিবী, প্রত্যক্ষ করবে সৃষ্টি স্থিতি লয় ঘুরতে ঘুরতে, নিজের কক্ষ পথে।
আমি কখনও যুদ্ধের বা যুদ্ধবাজ মানুষদের চোখে চোখ রাখিনি, তবু দু হাতে মুখ ঢাকার ছলে দশ আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে দেখে নিয়েছি ধ্বংসের সাথে সর্বনাশের সহবাস, চোখের জলের সাথে আপাত বৈরিতার অভিনব গমণদৃশ্য, লোভ আর আর হিংসার সর্বগ্রাসী ব্যভিচার, আর আগ্রাসী ক্ষমতার সাথে রাজনৈতিক আগুনের অবাধ কামলীলা। যুদ্ধের আগুন নিভে গেলে স্তিমিত ভস্মের কাছে আঁজলা পেতেছি,…
