পবিত্র – রিনি গঙ্গোপাধ্যায়
ছেলেমেয়ে দুটোকে অনেক আগেই গ্রামে পাঠিয়ে দেবে ঠিক করেছিল রহমত উল্লাহ। সুযোগ পায়নি। হনুমান জন্মজয়ন্তী কেটে গিয়ে দুমাস বোধহয় হয়েছে! পাড়ায় পাড়ায় ম্যারাপ বেঁধে হঠাৎই তাণ্ডব শুরু হয়ে গেল। কোন্ দেবতার পুজো বোঝার আগেই গেরুয়ায় ছয়লাপ হয়ে গেল গোটা অঞ্চল। বেশ কিছু মুসলিম পরিবার থাকে এ তল্লাটে। তবে হিন্দুদের সংখ্যাই বেশি। হনুমান জন্মজয়ন্তীতে ওরা মিছিল করেছিল গোটা এলাকা জুড়ে। সামনে যাকে পেয়েছে মাথায় সাদা ফেজ তাকেই রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। ভয়ে সেদিন রহমতরা দরজায় খিল এঁটে, লাইট বন্ধ করে অন্ধকারে বসেছিল। নামাজ পড়তেও যায়নি। ঠিক মসজিদের সামনেই বেশ কয়েকটা মাইক লাগিয়ে ওরা জয় শ্রীরাম, হনুমানজীকি জয় বলে চেঁচাচ্ছিল। বাল-বাচ্চা নিয়ে সেদিনটা কোনোরকমে পার করেছিল রহমত উল্লাহ। আল্লা মেহেরবান।
আজ কী করে রক্ষা পাবে ভেবে পাচ্ছিল না রহমত। ওরা বাড়ি বাড়ি ঢুকছে। জিনিসপত্র তছনছ করছে।
মেয়ে, বিবিদের টানাটানি করছে। তার ঘরে জওয়ান লড়কি আছে।
রহমত একমুহূর্ত দেরি না করে পিছনের দরজা দিয়ে সরু গলিটা পার হয়ে ভ্যাটের গা ঘেঁষে লুকিয়ে গিয়ে পৌঁছল সাহাবাবুদের বাড়ি। রহমতের বিবি এই বাড়িতে তোলা কাজ করে।
রাত কত হয়েছে খেয়াল নেই রহমতের। সাহাবাবুদের বাড়ির দরজায় বার কয়েক আওয়াজ করেই পাশের অন্ধকারে ওরা চারজন গা ঢাকা দেয়।
হরিদা দরজা খুলেছে। ভিতরে কৌশিক বাবুর গলার স্বরও শোনা যাচ্ছে।
রহমত সন্তর্পণে বিবি বাচ্চাদের নিয়ে সামনে হাজির হয়।
কৌশিকবাবুর ব্যাপার বুঝতে একটুও সময় লাগে না। তাড়াতাড়ি ওদের ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে দরজা এঁটে দিতে বলে হরিদাকে।
পরদিন সকালে কৌশিকবাবু আর অনুভবদাদার মধ্যে কথা হচ্ছিল। রহমত মাটিতে উঁচু হয়ে বসে শুনছিল।
—এরা দেশটাকে গোল্লায় পাঠাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদ হিন্দুত্ববাদ করে মানুষকে খেপিয়ে তুলে… ছিঃ ছিঃ ছিঃ।
—আগামী নির্বাচনে মানুষ ঠিক বুঝিয়ে দেবে, দেখো বাবা!
—ভুল করছিস! এদেশের অধিকাংশ জনসংখ্যা এখনও হিন্দু। তাদের কাজ-কারবার নেই। চাকরি নেই। পড়াশোনা লাটে উঠে গেছে। কিছু একটা নিয়ে তো তারা থাকবে, বল! এই উন্মাদনা ছাড়া আর কী আছে!
—কিন্তু বাবা, শিক্ষিত মানুষও তো রয়েছে। তারা তো জানে আমাদের দেশের ইতিহাস! তারা যদি জনমত গড়ে তোলে…
—শিক্ষিত লাগে না রে, শিক্ষিত লাগে না। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ হলেই এই হানাহানিকে সমর্থন করবে না। আর শিক্ষিত বলছিস… সেদিনও রোমিলা থাপার বক্তৃতা করেছেন ভারতের ইতিহাসের বাদ পড়া অংশ নিয়ে! কী লাভ! কটা লোকের কাছে পৌঁছেছে সেই বক্তব্য!
—জানো বাবা, সেদিন অশোক মুখোপাধ্যায় সামনের প্রাইমারি স্কুলের অনুষ্ঠানটায় ডারউইনের বিবর্তনবাদ কেন বাদ পড়ল সে কথা বলছিলেন।
—হ্যাঁ, সেই তো, কথা হচ্ছে, একেবারেই যে হচ্ছে না তাই নয়। কিন্তু সেসব কজনের কানে যাচ্ছে বল তো!
—আচ্ছা বাবা, তোমার কী মনে হয় আগামী নির্বাচনে বিজেপি আর ফিরে আসতে পারবে?
—পারবে মানে, ওদের এই মুহূর্তে সরিয়ে ফেলা অতো সহজ হবে না। মহারাষ্ট্র, গুজরাট, বিহার, উত্তরপ্রদেশে ওদের সমর্থকই বেশি। ওরা শুধু আগামী নির্বাচন নয়, বেশ কয়েকটা নির্বাচনেই বারবার আসবে।
রহমত ওদের বাপ ছেলের কথা শুনছিল। কিছুই বুঝতে পারছিল না। তার মাথায় এখন একটাই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। কী করে সে দেশের বাড়ি গিয়ে উঠবে! দেশের বাড়িতে তার অনেক লোকজন আছে। আশেপাশে পাড়া, অঞ্চল, গোটা গ্রামের পর গ্রাম জুড়েই তাদের লোক। সেখানে একবার পৌঁছুতে পারলে আর ভয় নেই। কিন্তু কী করে যে সেটা সম্ভব!
গোটা শহরটায় তো গেরুয়া বাহিনী টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে। তার প্রতিবেশী ওসমান ভাই কেমন আছে কে জানে! উলটোদিকে বরকত মিঞার বাড়িতেও জওয়ান বেটি আছে। নাজনিনের দোস্ত আছে। সেই-বা কেমন আছে কে জানে! রহমত অজান্তেই মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকে। কপালে তার চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
—অতো ভেবো না রহমত, অতো ভেবো না। আমি থাকতে এ বাড়িতে তোমার গায়ে হাত দেবে, এতো সাহস কারো হবে না।
—বাবু, গ্রামে চলে যাবার কথা ভাবছিলাম। এখানে এভাবে কী করে থাকব!
—হুম, সেটা যে আমি একবারও ভাবিনি তা নয়। কিন্তু দেখছ তো পরিস্থিতি। হাওড়া স্টেশনেও তো হামলা হয়েছে শুনলাম। যাবে কী করে!
—অন্য কোনো ভাবে যদি… রহমত কথা শেষ করতে পারে না।
কৌশিক বাবু বলেন—চলে যাবে যে বলছ সে ক-দিনের জন্য! তোমার মেয়ের কলেজ আছে, ছেলের স্কুল আছে। তোমার নিজের কাজকম্ম আছে!
রহমত এ-কথার উত্তর দিতে পারে না। মনে মনে ভাবে, এই শহর থেকে তাকে হয়তো চিরকালের মতোই চলে যেতে হবে। নইলে ইজ্জত নিয়ে থাকা যাবে না। এতদিন ধরে শহরে কাজ করে করে গ্রামে সে কিছুটা জমি কিনেছে… চাষ করায় লোক দিয়ে… নিজের বাড়ি আছে ওখানে তার… আল্লা যদি দয়া করে বাকি জীবন সে ওখানে ভালোভাবেই কাটিয়ে দিতে পারবে। শুধু বচ্চালোগোকে লিয়ে চিন্তা। উনকা পড়াই কা ক্যায়া হোগা! গাঁও মে তো স্কুল কলেজভি নহি আছে।
নাজনিন কাল সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি। আজও সামান্য আওয়াজে সে যেন কেমন চমকে চমকে উঠছে। ভীষণ ভয় পেয়েছে মেয়েটা। ফাহিদা বিবি খাবার ঘরের এক কোণে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে বসেছিল। মাঝে মাঝে নাজনিনের গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল।
অহিরা খাবার ঘরে বসেই সকালের রান্নার জোগাড় করছিল। আর মাঝে মাঝে ওদের দেখছিল। ফাহিদা একবারও ওর ছেলেমেয়েকে ছেড়ে নড়েনি সকাল থেকে।
হরিদা সকালে একবার বাজারে বেরিয়েছিল। দোকানপাট বেশিরভাগই বন্ধ। কাল রাতে এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে ওরা। মুসলিম পরিবারগুলোর ঝুপড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। লোকজন যে যেদিকে পেরেছে পালিয়ে বেঁচেছে। সকালে পুলিশ পিকেটিং চলছে! হরিদাই অহিরার কাছে এসে গলা নামিয়ে বলে রহমতদের ঘরটায় ওরা ভাঙচুর করেছে। শবনম বলে একটা মেয়ের খোঁজ করছে পুলিশ!
শবনম নামটা কানে আসতেই নাজনিন ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। বরকত চাচার মেয়ে শবনম। তার দোস্ত আছে। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না!
ফাহিদা নাজনিনের মাথাটা কোলের মধ্যে চেপে ধরে। তার চোখে মুখে হঠাৎই আতঙ্ক যেন আরও ছড়িয়ে পড়ে। মেয়েটা দেখতে দেখতে কুড়িতে পড়েছে। ওর নিকাহ করবার ব্যবস্থা করবে ভাবছিল ফাহিদা। কথাও চলছে ওদের পাশের গ্রামের এক পরিবারের সঙ্গে। বহত বড়া পরিবার। ঔর পয়সেবালা ভি আছে। রহমতের অতো ক্ষমতা কোথায় ওই বাড়িতে মেয়ের বিয়ে দেয়। কিন্তু নাজনিনকে দেখলে যে চোখ ফেরানো যায় না। যেমন তার গায়ের রং, তেমনই তার নাজুক চেহারা। ওই দেখেই ছেলে একেবারে পসন্দ করে নিয়েছে। এখন ভালোয় ভালোয় গ্রামে পৌঁছতে পারলে হয়।
এসবই ভাবছিল ফাহিদা। এমন সময় শবনমের কথাটা কানে এলো। ফাহিদা নাজনিনকে শক্ত করে চেপে ধরে রেখেছে। নাজনিনও পারলে মায়ের কোলের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে নিজেকে। শবনমই তাকে দেখিয়েছিল, কিছুদিন আগে কোথায় যেন দুটো মেয়েকে রেপ করে, নঙ্গা করে… নাজনিন আর ভাবতে পারে না। শবনমের সঙ্গেও কি ওরকমই কিছু ঘটবে! নাজনিন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে…
অহিরা বোঝে ওরা এখানেও, এই বাড়িতেও নিজেদের সেফ মনে করতে পারছে না। অহিরা এগিয়ে এসে ফাহেদার হাতের ওপর হাত রাখে। ফাহিদার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। এই মুহূর্তে ওরা নিঃস্ব হয়ে গেছে। ওদের ঘরদোর তছনছ করে গেছে। এই শহরটা ওদের কাছে এইটুকু সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ অজানা অচেনা একটা ভয়ের ঠাঁই হয়ে উঠেছে। অহিরা ফাহিদাকে সান্ত্বনা দেবে ভাবে। পারে না। গলার কাছে তার যেন কী দলা পাকায়।
দু-তিনদিন পর শহরের অবস্থা একটু স্বাভাবিক হলে কৌশিকবাবু নিজে গিয়ে ওদের চারজনকে ট্রেনে তুলে দিয়ে আসে। সমস্ত ট্রেনের রাস্তা জুড়ে কেমন একটা অদ্ভুত ভয় কাজ করলেও ওরা নির্বিঘ্নেই পৌঁছয় ওদের গ্রামে।
বাস রাস্তা পার করে মেঠো পথে যেতে যেতে প্রথমেই দেখা হয় মইনুদ্দির সঙ্গে। আরে! রহমত তু! কেমন আছিস? সব ঠিক হ্যায়?
রহমতের এতদিনের চাপা উদ্বেগ এক লহমায় বেরিয়ে আসে। রহমত মইনিদ্দুনের হাত দুটো ধরে কেঁদে ফেলে। বাল-বাচ্চা নিয়ে ফিরতে পেরেছি। আল্লার মেহেরবানি।
ফাহিদা, নাজনিন, ছোট্ট ভাইটা সবার চোখেই জল। মইনুদ্দিন ওদের শান্ত করে। কিন্তু ভালো করে ওদের মাপতে থাকে… নাজনিনের দিকে আড়চোখে বারবার তাকায়… তারপর ওদের বাড়ির দিকে রওয়ানা করে দেয়।
সেদিন বিকেলেই গ্রামের লোক একে একে জড়ো হয় রহমতের উঠানে। রহমত বুঝতে পারে না কী হয়েছে। স্বয়ং ইমাম সাহেব এসেছেন তার সঙ্গে কিছু কথা বলার জন্য।
রহমত ইমাম সাহবের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়ায়।
কিন্তু ইমাম সাহব বলতে শুরু করার আগেই অছিমুদ্দী জিজ্ঞাসা করে,
—কলকেত্তে পর দঙ্গে হুয়ে এক হপ্তে হোনেকো হ্যায়! তুমলোগ ইতনেদিন কাঁহা থে?
রহমত উত্তর দেওয়ার আগেই আরও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে থাকে নানাজন।
—লড়কি কো লেকে কাহাঁ থে? লড়কি ইতনি ডরি হুয়ি কিঁউ হ্যায়! উসকে সাথ ক্যায়া হুয়া! হামকো বতাও।
রহমত প্রশ্নের পর প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে যায়।
—মেরে লড়কি কে সাথ কুছ ভি তো নহি হুয়া! হামলোগ তো সব সাহাবাবুকে ওঁহা…
জনতার ভিতর থেকে আওয়াজ ওঠে।
—হামে সব পতা হ্যায়। বরকতকে লড়কি কো উঠা কর লে গয়া থা। তুম উস রাত সে হি লা পতা থে…
রহমত বোঝাতে যায়… ঘর থেকে ফাহিদা বেরিয়ে আসে… দুজনে মিলে তারা সমবেত জনতাকে থামাতে পারে না।
—আখির হামারা গাঁওকা কুছ উসুল হ্যায় কি নহি! হামারা ভি কুছু ইজ্জত হ্যায় কি নহি!
—তুম উধর কলকেত্তে মে কমাওগে। ইধর ঘরবার বনাওগে। হাম কুছ বোলে! নহি না!
রহমত বলে ওঠে—হামারা ঘর ওঁহা লুঠ করলিয়া…
—উওসব হাম নহি জানতে। হিন্দু লোগোকা ছুঁয়া হুয়া লড়কি হাম ইহা, ইস গাঁওমে নহি রখ সকতে…
রহমত ওদের কথার মানে কিছুই বুঝতে পারে না। ফাহিদা আর রহমত ইমাম সাহবের কাছে হাত জোড় করে বারবার অনুরোধ করতে থাকে।
ইমাম সাহব এবার হাত উঁচু করে সবাইকে থামতে বলে।
—দেখো রহমত, বরকতকে বেটিকে সাথ ক্যা হুয়া ইয়ে হামে পতা হ্যা। তুমহারা লড়কি ভি কলকেত্তে মে হি থি… ওর সাথে কিছু তো হয়েছে! তুমি লুকোচ্ছো কেন!
—উসকে সাথ কুছ নহি হুয়া ইমাম সাহব। নাজনিনি বিলকুল পহেলে যেয়সা হি হ্যা… কুমারী আছে…
রহমত কেঁদে ফেলে…
—ইসকি কুছ সবুত হ্যা তুমি লোগোকে পাস?
—সবুত! সবুত ক্যাসে দু! সাহাবাবুদের আগর পুছ লেতে তো…
—উওসব তো হিন্দু হ্যা না… উসকা ক্যা ভরোসা!!
ইমাম সাহব আবার হাত উঠিয়ে সবাইকে শান্ত করে।
—তুমহারে লড়ক কো সাফ হোনে কা সবুত দেনা পরেগা।
—ক্যা করনা হোগা ইমাম সাহব!
—উসকো ইনসবকে সামনে নঙ্গা হোনা পরেগা। উসকে শরীর পর কোই দাগ নহি ইয়ে দিখানা পরেগা। হিন্দুওনে উসকো ছুঁয়া নহি ইয়ে হাম দেখলে। ফির পাক পানি ছিড়ক কর উসে শুদ্ধ কর লে গেঁ।
রহমত হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ে ইমাম সাহবের সামনে।
—অ্যাসা মত কিজিয়ে ইমাম সাহব। আল্লাহ কি কসম, উও বিলকুল পাক হ্যা। কুছ ভি তো নহি হুয়া উসকে সাথ। অ্যাসা মত করে ইমাম সাহব। উও অভি স্রিফ বিশ কি হ্যা। উও মর জায়েগি।
—অগর তুমহে ইস গাঁও পর রহেনা হ্যা, অগর ইজ্জত সে জিনা হ্যা, তো ইয়ে করনাহি পরেগা।
ফাহিদা চিৎকার করে কেঁদে ওঠে—ইয়া আল্লা রহম কর।
কিছু বুঝে ওঠার আগেই উত্তেজিত কয়েকজন মর্দ রহমতের ঘরে ঢুকে নাজনিনকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নিয়ে আসতে চায়।
নাজনিন ঘর থেকে এতোক্ষণ এদের সব কথাই শুনেছে। ভয়ে তার আধমরা দশা। ছোট্ট ভাইটা কেঁদে উঠে দিদিকে আঁকড়ে ধরে…
নাজনিন হাত ছাড়িয়ে ফাহিদার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করে। পারে না।
ফাহিদা আর রহমত এই উন্মত্ত জনতাকে আটকাতে পারে না।
কারো কারো হাতে উঠে আসে মোবাইল…
ইমাম সাহবের নরুনের মতো চেরা চোখে ফুটে ওঠে বীভৎস উল্লাস…
রহমত, ফাহিদা মাটিতে পড়ে কাঁদে…
নাজনিন যেন পাথর হয়ে গেছে….
ইমাম সাহব পবিত্র জল ছিটিয়ে নাজনিনকে শুদ্ধ করে।