কুলডিহার দিনরাত্রি – প্রবুদ্ধ বসু

কুলডিহার দিনরাত্রি – প্রবুদ্ধ বসু

শেয়ার করুন

সরোবর জুড়ে ফুটে রয়েছে প্রায় শ-খানেক ‘লাল শালুক’, তাদের পাশেই জায়গা করে নিয়েছে ‘পানচুলি’ বা ‘চাঁদমালা’ ফুল। ছোটো ছোটো সাদা ফুলগুলিকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন সহস্র তারা ভেসে বেড়াচ্ছে। জলাশয়ের মাঝখানে একটা চর, সেখানে জটলা বেঁধেছে এক ঝাঁক ‘সরাল’। শালুক ফুলের পাতায় হেঁটে বেড়াচ্ছে জলপিপি। একদল শামুকখোল উড়ে এসে বসল আমরা যেদিকে দাঁড়িয়েছিলাম ঠিক তার উলটো পাড়ের কাদামাটিতে। আমাদের বাঁদিকের পাড়ে বাবলা গাছের ডাল প্রায় ঝুলে পড়েছে লেকের জলে, সেই ডালে বসে ধ্যানমগ্ন ‘সাদা বুক কিংফিশার’। বড্ড আফসোস হচ্ছিল, কেন আমি ছবি আঁকতে পারি না।

জলাশয়টির নাম ‘রিশিয়া ড্যাম’, উড়িষ্যার কুলডিহা অভয়ারণ্যের মধ্যে লুকিয়ে থাকা এক অপরূপা সুন্দরী।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে পাঁচিল টপকালেই পৌঁছানো যায় পড়শি রাজ্যের এই জঙ্গলমহালে। গত জানুয়ারির এক সকালে সাড়ে আটটার ফলকনামা এক্সপ্রেসে চেপে বসলাম। রেল লাইনের ধারে বাংলার মাঠঘাট, ভাঁটফুল দেখতে দেখতে পৌঁছোলাম দাঁতন। না দাঁতনে ট্রেন দাঁড়ায় না বা সিগনালের প্রবলেমে দাঁড়ায়নি। আসলে দাঁতনের কথা উল্লেখ করলাম কারণ এটি পশ্চিমবঙ্গের শেষ স্টেশন। এরপর থেকেই উড়িষ্যার শুরু। জানলার বাইরের প্রকৃতির রূপের কোনো পরিবর্তন হয়নি, শুধু বাংলার বদলে তা ‘উড়িষ্যার’ মাঠঘাট, ভাটফুলে পরিণত হয়েছে। একসময় বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা একই ভূখণ্ডের অংশ ছিল, কালের নিয়মে এরা আজ তিনটি পৃথক রাজ্যে বিভাজিত। এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই দেখি পৌঁছে গেছি বালাসোর। এই পর্যন্তই আমাদের রেল যাত্রা।

এরপর রত্নাকরদার গাড়িতে কুলডিহার পথে। জাতীয় সড়ক ৫ ধরে পৌঁছোলাম শেড়গর। সেখান থেকে ডানদিকে বেঁকে স্টেট সড়ক ধরে এগিয়ে চলেছি। রাস্তার ধারে সুজলা, সুফলা চাষের জমি, দূরে পাহাড়, মাঝে মাঝে গ্রাম, ছোটো ছোটো কুঁড়ে ঘর। কোথাও গৃহকর্তা দাওয়ায় বসে মুড়ি চিবোচ্ছেন, কয়েকটি বাচ্চা মেতে উঠেছে হুল্লোড়ে, কোথাও মধ্যবয়সি মহিলারা ধান ভানতে ব্যস্ত। আবার কোথাও পঞ্চায়েতের বসানো টাইম-কলে অষ্টাদশীদের ভিড়, ঘড়ায় জল ভরতে এসে দেদার আড্ডায় মত্ত। অধিবাসীদের চেহারার বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে তাদের আদিবাসী পরিচয়। আট দশটা কুঁড়ে ঘরের পরেই পাঁচিল ঘেরা এক বিশাল অট্টালিকা। পথের ধারে যেন ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে।

কিছুক্ষনের মধ্যে পৌঁছোলাম নীলগিরি বাজার। বেশ জমজমাট বাজার এই নীলগিরি। সেখান থেকে জল কিনে এবার রওনা দিলাম ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অফিসের পথে। চারিদিকে শাল, সেগুনের জঙ্গলে ঘেরা অফিসটির বাগানে মরশুমি ফুলে প্রজাপতির মেলা বসেছে। ‘কমন সেলর’, ‘টাইগার ব্রাউন’, ‘গ্রে প্যানসি’ আরও কত প্রজাতি।
এখান থেকে গাড়ির পারমিশন করিয়ে পৌঁছোলাম কুলডিহার ‘বালিয়ানল টকুলডিহা’। এটি জঙ্গলের প্রবেশদ্বার। অনুমতিপত্র দেখিয়ে অরণ্যে প্রবেশ। লাল মাটির রাস্তার দু’ধারেই শাল গাছের জঙ্গল। ঘন অরণ্যের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বেশ রোমাঞ্চকর। কেওঝড়, ময়ূরভঞ্জ ও বালাসোর জেলার সংযোগস্থলে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যটি প্রায় ২৭২.৭৫ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত। ১৯৮৪ সালের ৪ঠা জানুয়ারি ‘কুলডিহা’ জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা পায়। এশিয়ান হাতি, লেপার্ড, গাউর, সম্বর, বুনো শুয়োর ইত্যাদি পশু ছাড়াও এ জঙ্গল অজস্র পাখির নিশ্চিন্ত আবাসস্থল।

আমাদের থাকার ব্যবস্থা ‘রিশিয়া নেচার ক্যাম্প’-এর টেন্টে। মোট নয়টি টেন্ট আছে। বেশ সুন্দর জংলি পরিবেশে ক্যাম্পগুলো। সোলার ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আছে, অ্যাটাচড বাথরুম আছে, ক্যাম্পে তিনবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে, অবিরাম পাখির কলতান ও রংবেরঙের প্রজাপতির আনাগোনা আছে। তবে এত কিছু ‘আছে’-র মধ্যে ‘নেই’-এর লিস্টটাও খুব একটা ছোটো নয়। মোবাইলের টাওয়ার নেই, পরিবেশ দূষণ নেই, টেন্টের দরজায় তালা লাগানোর বন্দোবস্ত নেই, কিন্তু বিশ্বাস করুন, চুরি হবার কোনো সম্ভাবনাও নেই। পুরো চত্বরটাই পরিখা দিয়ে ঘেরা, কাঠের পাটাতন ফেলা আছে গাড়ি চলাচলের জন্য, রাত্রে তুলে নেয়া হয় যাতে জন্তু-জানোয়ার না ঢুকতে পারে। দুপুরের খাওয়া শেষ করতেই প্রায় সাড়ে তিনটে বাজল। এবার হাঁটা দিলাম রিশিয়া ড্যামের পথে। ম্যানেজারবাবু বললেন বিকেলের দিকে হাতি অনেক সময় স্নান করতে আসে ড্যামের জলে। টেন্ট থেকে জঙ্গলাকীর্ণ পথে মাত্র ৫০০ মিটার হাঁটলেই পৌঁছোনো যায় ড্যামে। পথের পাশে আগাছার জঙ্গল। শহরে নিতান্ত অনাদরে পড়ে থাকা এই জংলি গাছগুলি নাগরিক সভ্যতার চোখের আড়ালে জায়গা করে নিয়েছে নিভৃত এই অরণ্যে। উদ্ভিদগুলির মধ্যে পরিচিতগুলি হল ‘বন পালং’, ‘বড়ো শিয়ালমুতী’, ‘লজ্জাবতী’, ‘পুটুস’ প্রভৃতি। প্রত্যেকটি গাছই প্রজাপতিদের অত্যন্ত প্রিয়। এই অঞ্চলটিকে তাই প্রজাপতির স্বর্গরাজ্যও বলা যেতে পারে। প্রায় আমাদের সাথে সাথেই উড়ে চলেছে ‘কমন জেযাবেল’। বন পালংয়ের ফুলে বসে ক্যামেরায় খুব সুন্দর পোজ দিল ‘গ্রাস ইয়োলো’। এছাড়াও ‘প্লেন টাইগার’, ‘স্পটেড টাইগার’, ‘পিকক প্যানসি’-র ব্যস্ত ওড়াউড়ি চলছেই।

জলাশয়ে অসংখ্য লাল শালুক, তবে আপাতত প্রত্যেকটি ফুলই বুজে আছে। লেখার শুরুতেই যে বর্ণনা দিয়েছি তা পরের দিন সকালের চিত্র। সেই সময় শালুক ফোটে, আবার দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথে পাপড়ি বুজে যায়। পুরো জলাশয়টা তখন এক স্বর্গীয় রূপ ধারণ করে। ড্যামের পাড়ে দুটো প্যাডেল নৌকা বাঁধা। ‘বাবুলি’ এই রিসর্টেরই কর্মী, আমাদের সাথেই এসেছে। মাছ ধরতে যাবে, ওর সঙ্গে নৌকায় সওয়ারি হয়ে ভেসে পড়লাম ড্যামের জলে। ‘বাবুলি’ জানাল নদীতে সে জাল ছড়িয়ে চলে আসবে, সারা রাতে মাছ এসে আটকা পড়বে জালে। আগামীকাল সকালে আবার জাল তুলে নেবে। পাহাড় আর তিন দিকের জঙ্গল ঘিরে রেখেছে এই জলাশয়কে। দুই পাহাড়ের ফাঁকে অস্ত যাচ্ছেন ভানুদেব। আমরা নৌকটাকে ঘাটে বেঁধে, ফেরার পথ ধরেছি, এমন সময় হঠাৎই একটা বিরাট শিংওলা পুরুষ হরিণ ঝাঁপ দিয়ে পরিখা পেরিয়ে এসে পড়ল আমাদের থেকে কয়েক হাত দূরে, এক ঝলক দেখল আমাদের দিকে, আবার দৌড়, মিলিয়ে গেল গভীর অরণ্যে। ঘটনাটা এত দ্রুত ঘটল যে আমরা হকচকিয়ে গেলাম। সম্বিত ফিরতে বুঝতে পারলাম কারুর তাড়া খেয়ে পালাচ্ছে হরিণটা। এর পর ‘বাবুলি’ ওড়িয়া মিশ্রিত বাংলায় যা বলল তার মর্মার্থ হল এই যে ’স্যার, তাড়াতাড়ি চলুন, মনে হচ্ছে বাঘ বেরিয়েছে’।

বাঘ, তাও আবার কুলডিহায়? সন্ধ্যাবেলা চা খাওয়ার সময় বাবুলি ব্যাপারটা খুলে বলল। আসলে দিন পনেরো আগে জোড়াচুয়া বিটের সল্টলিকে একটা রয়্যাল বেঙ্গলকে গাউর শিকার করতে দেখা গেছে CCTV ক্যামেরায়। মনে করা হচ্ছে কুলডিহা সংলগ্ন সিমলিপাল জঙ্গল থেকে সে জোড়াচুয়ায় প্রবেশ করেছে। তাকে ধরার জন্য পুরো জোড়াচুয়া বিটে ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যদিও তারপর থেকে বাঘের টিকিটিও দেখা যাচ্ছে না। সকলে যখন ধরে নিয়েছে বাঘ আর নেই তখনই আবার বনকর্মীরা একটা হরিণের আধ খাওয়া মৃতদেহ খুঁজে পায়। বাঘটিকে এখনও ধরে উঠতে পারা যায়নি। দুঃখের বিষয় হল এই বাঘ বাবাজীর জন্য জোড়াচুয়া বিটে পর্যটক ঢোকা নিষিদ্ধ হয়েছে। খবরটা শুনে খুব দুঃখিত হলাম, কারণ কুলডিহায় পাখি দেখার শ্রেষ্ঠ জায়গা হল জোড়াচুয়া।

পরদিন ভোরে বেরিয়ে পড়লাম কুলডিহা বিটের উদ্দেশ্যে। এদিকে জঙ্গল বেশ গভীর। রাস্তার দুধারে শাল, সেগুন, বেল, কুল, শিমুল, তেঁতুল, কুসুম, আম, জাম, কাঁঠাল, বহেরা অর্জুন, খয়ের ইত্যাদি গাছের জঙ্গল। দেখলাম এক জোড়া হরিণ, আমাদের দেখা পেয়েই মিলিয়ে গেল জঙ্গলে। পাখিদের মধ্যে দেখতে পেলাম ‘রেড জঙ্গল ফাউল’, ‘এরারেল্ড ডাভ’, ‘মোহনচূড়া’, ‘ব্লু-রক থ্রাস’।

কুলডিহা বিটে আছে কুলডুহা ফরেস্ট রেস্ট হাউস(FRH)। গহীন অরণ্যে এই বনবাংলোর অবস্থান এক কথায় মনোমুগ্ধকর। এক সময় এখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছিল। এখন অনুমতি মেলে না। রেস্ট হাউসের সাথেই একটা কংক্রিটের নজর মিনার, অদূরে সল্ট লিক, সেখানে এসেছে একদল হরিণ। দুটো ‘ব্ল্যাক হেডেড মোনার্ক’, ‘হোশাইট রাম্পট শ্যামা’, একজোড়া ‘স্কারলেট মিনিভেট’ দেখার সৌভাগ্য হল এই অঞ্চলে। ওয়াচ টাওয়ার সংলগ্ন একটা বেল গাছে হুটোপাটির শব্দ পেয়ে তাকাতেই দর্শন পেলাম কুলডিহার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ‘জায়েন্ট স্কুইরেল’। বেশ বড়ো আকারের, বাদামি রঙের এক কাঠবেড়ালি, মুখে ও লেজে সাদা রং। এই জঙ্গলে জায়েন্ট স্কুইরেলের সংখ্যা প্রচুর। এখানকার আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ হল ‘গ্রিন বিলড মালকোহা’। তবে এদের জোড়াচুয়াতেই বেশি দেখা যায় বলে শুনেছি।
জোড়াচুয়া বন্ধ থাকায় বিকেলে আবার ফিরে এলাম কুলডিহা FRH। পড়ন্ত সূর্যের আলোয় অরণ্যের রূপ সকালের থেকে অনেকটাই আলাদা। ওয়াচ টাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে বেশ কয়েকটা শ্যামার খেলা দেখছিলাম, আমাদের উপস্থিতিকে সেভাবে গ্রাহ্য করছে না তারা, অপূর্ব সুরে শিষ দিয়ে চলেছে, জঙ্গলের থেকে ভেসে এলো ‘ট্রোগানের’ কল। এগিয়ে চললাম কল লক্ষ্য করে। যত এগোচ্ছি তীব্রতা ততই বাড়ছে। হঠাৎই অপ্রত্যাশিতভাবে চোখের সামনে দিয়ে কালো মাথা, লাল পেট ওলা পুরুষ ‘মালাবার ট্রোগান’ তার স্ত্রী সঙ্গীর ডাকে সারা দিয়ে প্রবেশ করল অরণ্যের অন্দরমহলে। তার পিছু নিয়ে বেশ কিছুটা এগোলামও, কিন্তু প্রথমত অতটা জঙ্গলের গভীরে ঢোকা সমীচীন হবে না এবং ‘কত্তা-গিন্নিকে’ বিরক্ত না করাই ভালো, এই ভেবে ফিরে এলাম। চোখের দেখা পেলেও এ যাত্রায় তাদের ছবি তোলা হল না। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।

ঘন অন্ধকারের মধ্যে একটা নির্জন জায়গায় এসে রত্নাকরদা গাড়ি দাঁড় করিয়ে হেড লাইট বন্ধ করে দিলেন। বললেন ‘জঙ্গলের শব্দ শুনুন’। অন্ধকারটাকে দূর্ভেদ্য মনে হচ্ছিল, কত রকমের শব্দ আসছে কানে। কিছুক্ষণ এভাবে কাটার পর লক্ষ করলাম হাত দশেক দূরে একটা বড়ো গাছের নীচে দুটো জ্বলন্ত চোখ, এগিয়ে আসছে আমাদেরই গাড়ির দিকে। শিরদাঁড়া দিয়ে ভয়ের শিহরণ প্রবাহিত হল, রত্নাকরদা বললেন ‘ভয় পাবেন না, ওটা বন বিড়াল’।

এখানকার রাতের বর্ণনা না দিলেই নয়। বিন্দু মাত্র সভ্যতার আওয়াজ নেই, আছে শুধু নাইটজার ও ঝিঁঝিঁ পোকার অবিরাম ডেকে চলা। তাঁবুতে শুয়ে আশ্চর্য এই জংলি ক্যাকাফোনি শুনতে শুনতে কখন চোখ বুজে যেত টেরও পতাম না। তৃতীয় দিন ভোরে ফেরার পালা, অন্ধকার থাকতে উঠে রেডি হচ্ছি। আলো একটু ফুটতেই আবারও ট্রোগানের ডাক কানে এল। এবার টেন্টের কাছের জঙ্গল থেকেই ডাকছে। হয়তো সেই কত্তা-গিন্নিই এসেছে দেখা করতে। এবারও তাদের দেখা পাচ্ছি না, এদিকে ফেরার তাড়া। টেন্টের পেছনে গিয়ে, জঙ্গলের দিকে মুখ করে চেঁচিয়ে বললাম ‘আগামীবার তোমার সঙ্গে নিশ্চয়ই দেখা হবে, এবারের মতো চলি’।

ছবিঃ প্রবুদ্ধ বসু।

শেয়ার করুন

ক্যাটেগরি বা ট্যাগে ক্লিক করে অন্যান্য লেখা পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরনো লেখা

ফলো করুন

Recent Posts

Recent Comments

আপনপাঠ গল্পসংখ্যা ২০২২