একটি অ-ধর্মীয় আলোচনা – প্রিয়াংকা মিত্র

একটি অ-ধর্মীয় আলোচনা – প্রিয়াংকা মিত্র

‘এই, সর সর। আ মরণ, ছুঁয়ে দিবি নাকি রে?’ গিন্নিমার চিৎকারে ছোট্ট কালো মেয়েটি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে সরে দাঁড়াল। লজ্জায় মাথা নীচু করে বলল, ‘মু তুকে দেখতে পাই লাইরে’। প্রশ্ন ছুটে আসে, ‘চোখের মাথা খেয়েছিস নাকি? ছুঁয়ে দিলে এক্ষুনি আবার স্নান করতে হত’। মেয়েটি জবাব দেয়, ‘কেনে রে? মুর তো কুনো ছোঁয়াচে রোগ হয় লাই। কাল…

বিস্মৃতির অন্তরালে জলধর সেন  — দীপক সাহা

বিস্মৃতির অন্তরালে জলধর সেন — দীপক সাহা

কালের সীমানা ছাড়িয়ে যাওয়া বঙ্গদেশের অন্যতম কর্ম প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব জলধর সেন। তিনি ছিলেন উনিশ ও বিশ শতকের সমাজ-সাহিত্য-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এক সংযোগ সেতু। তিনি একাধারে কৃতী ভ্রমণ কাহিনী, রম্যরচনা, উপন্যাস লেখক এবং সাংবাদিক। প্রায় আশি বছরের জীবন তিনি উৎসর্গ করেছিলেন সাহিত্যসাধনা ও সাময়িকপত্র-সম্পাদনা কর্মে। জলধরের সাহিত্যকৃতিতে মুগ্ধ রবীন্দ্রনাথ তাঁর সংবর্ধনা উপলক্ষে লিখেছিলেন -‘….বাংলা সাহিত্য সমাজে আপন…

“তুমি কেন থিয়েটার করো?” – অতনু

“তুমি কেন থিয়েটার করো?” – অতনু

একটি তুলাযন্ত্রের দুই আলাদা পাত্রে সবসময় অবস্থান করে রাষ্ট্র এবং থিয়েটার। উভয়ের ভারসাম্যেই একটি সমাজ সুস্থিত থাকতে পারে। কিন্তু ক্ষমতার বাটখারা স্বভাবতই রাষ্ট্রের পাত্রে বেশি আশীষ বর্ষায়। আর তাই থিয়েটার হালে পানি পায় না। মহামারী অধ্যুষিত এই মহানগরীতে মানুষ নবজাগরণের স্বাদ পেয়েছে। মুখোশের আড়ালে মুখ ও বিবেককে আড়াল করতে শিখে গেছে। কানে তুলো চোখে ঠুলি…

বন্দিশালার আলোকরেখা: সাম্রাজ্যবাদের উত্তরকথন – রূপায়ণ ঘোষ

বন্দিশালার আলোকরেখা: সাম্রাজ্যবাদের উত্তরকথন – রূপায়ণ ঘোষ

বিশ্বব্যাপী সাহিত্যের যেমন অজস্র ধারা-উপধারা রয়েছে তেমনই আছে তার নিজ নিজ ঘরানা। বন্দি সাহিত্য (Prison Literature) হল সেরকমই একটি সাহিত্যধারা। সুদূর অতীত থেকে বর্তমানেও এই ধারাটি বিশ্ব সাহিত্যে অতি দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে, জনপ্রিয়ও হয়েছে এমনকী কালোত্তীর্ণও।কথাসাহিত্য, কবিতা, নাটক তথা প্রবন্ধ সাহিত্যের মধ্যেও একটি উদীয়মান উপধারা হিসাবে এটি বিদ্যমান। এই ঘরানার মূল চরিত্র হল মানুষের…

বাংলা থিয়েটার প্রথম দিন থেকেই শাসকের রোষানলের শিকার – সায়ন ভট্টাচার্য

বাংলা থিয়েটার প্রথম দিন থেকেই শাসকের রোষানলের শিকার – সায়ন ভট্টাচার্য

একটি স্বপ্নের স্থান হয়ে উঠছে ‘কলিকাতা’। রুজি রোজগারের এই আবাসস্থলেই ১৭৯৫ সালে ২৭ শে নভেম্বর বেজে উঠেছিল বাঙালি নাট্যপিপাষুদের জন্য প্রথম – থার্ড বেল। শহরের বাঙালি অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের দিয়ে প্রথম নাটক অভিনীত হয় , যে ইতিহাস বা বলা ভালো বাংলা থিয়েটারের ইতিহাসে সেই নাটকের নাম পর্যন্ত উল্লেখ নেই তখন। সেই নাটকের নাট্যকার কে? কী…

শুরুর সে দিন: কলকাতাতে পদার্থবিদ্যাতে স্নাতকোত্তর পাঠের সূচনা ও প্রেসিডেন্সি কলেজ – গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়

শুরুর সে দিন: কলকাতাতে পদার্থবিদ্যাতে স্নাতকোত্তর পাঠের সূচনা ও প্রেসিডেন্সি কলেজ – গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে প্রাচীনতম। তবে এ কথা প্রায় সকলেরই জানা যে শুরুতে এ ছিল মূলত এক ডিগ্রিদানকারী প্রতিষ্ঠান। পড়াশোনা হত কলেজে ও স্কুলে; বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ছিল সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা। ১৮৫৭ সালে প্রতিষ্ঠার ছ-বছর পরে ১৮৬৩ সালে প্রথম মাস্টার্স ডিগ্রি দেওয়া হয়, তবে বিজ্ঞানের কোনো ছাত্র সেই তালিকাতে ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকর্ড অনুযায়ী…

শান্তিনিকেতনে মণিপুরি নৃত্যশিক্ষা – এল. বীরমঙ্গল সিংহ (পর্ব ৩)

শান্তিনিকেতনে মণিপুরি নৃত্যশিক্ষা – এল. বীরমঙ্গল সিংহ (পর্ব ৩)

কলকাতায় ‘নটীর পূজা’ সফল অভিনয়ের পর আসন্ন দোল উৎসবের জন্য নৃত্যগীতের একটি অনুষ্ঠান করাবেন বলে কবি স্থির করলেন। নতুন করে ছয় ঋতুর গানও রচনা করে ছয়টি ঋতুর পর্যায়ে সাজিয়ে নাম দিলেন ‘নটরাজ’। নিঃসন্দেহে নটীর পূজার সাফল্যই কবিকে এ কাজে উৎসাহ জুগিয়েছিল। নটরাজ-এর ঋতু পর্যায়ের গানগুলোর সফল নৃত্যরূপ দিলেন নবকুমার। রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে এসে নটীর পূজা ও…

শান্তিনিকেতনে মণিপুরি নৃত্যশিক্ষা – এল. বীরমঙ্গল সিংহ (পর্ব ২)

শান্তিনিকেতনে মণিপুরি নৃত্যশিক্ষা – এল. বীরমঙ্গল সিংহ (পর্ব ২)

সিলেট ভ্রমণ শেষে ত্রিপুরার রাজা বীরেন্দ্রকিশোরের আমন্ত্রণে কবি আগরতলায় আসেন ২৩ কার্তিক (৯ই নভেম্বর ১৯১৯)। তিনি মহারাজাকে অনুরোধ করেন, ত্রিপুরা থেকে একজন অভিজ্ঞ মণিপুরি নৃত্যগুরুকে শান্তিনিকেতনে পাঠিয়ে দেন। এ বিষয়ে শান্তিদেব ঘোষ লিখেছেন, “মহারাজাকে অনুরোধ করেছিলেন শান্তিনিকেতনে বিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষার জন্য একজন মণিপুরি নর্তককে দেবার জন্য। মহারাজা প্রস্তাবে উৎসাহিত হয়ে তাঁর দরবার থেকে নর্তক বুদ্ধিমন্ত…

উনিশ শতকে বৈষ্ণব সাহিত্যচর্চা : নানা অভিমুখ – মিতালী বিশ্বাস

উনিশ শতকে বৈষ্ণব সাহিত্যচর্চা : নানা অভিমুখ – মিতালী বিশ্বাস

 [প্রাক্তন এম.ফিল.গবেষক, বাংলাবিভাগ ভাষাভবন, বিশ্বভারতী ] আধুনিককালের বাংলা সাহিত্যে প্রাগাধুনিক বা মধ্যযুগীয় সাহিত্যচর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। যদিও এই সাহিত্যচর্চার সূচনা হয়েছিল উনিশ শতক বা তার কিছু আগে থেকেই। বাংলার সমাজ, ইতিহাস ও সাহিত্যের জগতে উনিশ শতক একটা আলোড়নের সময়। পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে বাংলাদেশের কিছু শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এইসময় বালার অতীত ইতিহাস অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা শুরু করেন। এর…

বাঙালির অহংকার মদনমোহন তর্কালঙ্কার বিস্মৃতির অতলে  – দীপক সাহা

বাঙালির অহংকার মদনমোহন তর্কালঙ্কার বিস্মৃতির অতলে  – দীপক সাহা

[৩রা জানুয়ারি নিঃশব্দে পেরিয়ে গেল বাঙালির অহঙ্কার  মদনমোহন তর্কালঙ্কারের জন্মদিবস। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।] স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের লেখাপড়ার সূত্রপাত হয়েছিল যাঁর বই পড়ে সেই ‘প্রভাত বর্ণন’-এর কবিকে বেমালুম ভুলেছে বাঙালি। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা নিয়ে গোটা বাঙালি সমাজে হৈচৈ পড়ে যায়, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। কিন্তু বিদ্যাসাগরের সমসাময়িক এবং তাঁর বন্ধু পণ্ডিতপ্রবর কবি, সমাজসংস্কারক মদনমোহন তর্কালঙ্কার সম্পর্কে…