অয়ন মুখোপাধ্যায়ের পাঁচটি কবিতা
আত্ম উপলব্ধি
প্রস্থছেদের কোনো জানালা- আরো কিছু নির্বাসনের নদী।
শব ছুঁয়ে আছে ঢেউ।
চিতার আগুন থেকে স্ফুলিঙ্গ; অস্থি কলস ভেসে যায় ।
রাতের অন্ধকার -নিস্তব্ধ নক্ষত্র -কেউ নেই……..
নির্বাসন।
আর কেউ জেগে উঠবে না।
অপলকের কাছাকাছি ….
মনুষ্যত্বের নাম প্রেম।
স্মৃতি তর্পনে রাত্রি নামে
অন্ধ হওয়ার পর। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমার চারপাশের বেঁটে মানুষের ছায়া গুলো
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।
শুনতে পাচ্ছি
বাগান জুড়ে চলছে আমার জন্য গর্ত খোঁড়ার কাজ ।
হাত মেলাবার সময় বুঝতে পারছি হাত নড়ছে
কিন্তু রক্ত স্থির।
তাই প্রচন্ড শীতের রাতে ঘুম আসে না
আমি বুঝতে পেরেছি আমি আর গরম লেপের ভেতর নিরাপদ নই।
ঠিক সেদিন থেকেই।
কন্ডম আর বেলুনের মধ্যবর্তী দূরত্ব
আমাকে চিনিয়ে দিচ্ছে নতুন মানুষগুলোকে।
মন খারাপের গল্প
আকাশের গ্রীবায় জমে আছে মেঘ
মেঘেদের মাঝখানে বয়ঃসন্ধি নদী।
তুমি আজ চেয়ে থাকো কার দিকে?
তোমার দুচোখে শুকনো মেঘ।
আজ শুধু খোঁজে কাকে?
যাকে তুমি খোঁজো । সে তোমার ভুল।
তাই বৃষ্টির জল আর শুধু জল নয়।
জলের ভেতর কোন এক জারুল।
শুধু জারুল বলি কেনো ? জারুলের ভেতরে মাতাল ঝাউ। তাই কি খুলেছে চুল -এই অবেলার বারান্দা ।আমাকে গ্রহণ করোনি কেনো ?
আমি শুধু হেঁটে যাই ;
আমি বড় একা।
বিকল্প চর্চা
আমাদের জীবন অধিকৃত হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।
সাহিত্য সংস্কৃতিতে -কেউ কাউকে -এক ইঞ্চি জমি ও ছেড়ে দিচ্ছে না।
সেই কারণে আমি
কোথাও কোনো উৎসবে যাই না
না বলতে পারাই কি তাহলে একমাত্র বিকল্প?
সৃষ্টিশীলতার পথ কখনো যৌথ কখনো একক
তাই পথের ধুলোয়, রেখে যাচ্ছি দিক চিহ্ন।
কথা-আরম্ভ
সবাইকে নমস্কার জানিয়ে, আবার নতুন করে শুরু করছি আমার জীবন।
আমি যে আপনাদের কাছে ফিরে আসতে পারব তা বোধহয় আপনারা কেউ ভাবতে পারেন নি।
আজকে আমার অনেক পুরনো ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে ।যেমন -মাথার ভেতর সাইকেল ঘুরে বেড়াতো।। ঘুম থেকে উঠে মশারির বাইরে আসতে চাইতাম না।
সারাক্ষণ বোকামি গুলোকে আদর্শ ভাবতাম।
কিন্তু দেখুন -আমি নিজেকে কেমন পাল্টে ফেলেছি একুরিয়ামের ভেতরে থাকতে থাকতে।
এখন সমস্ত রকমের সুস্থতা আমার মাথার উপর ভর করেছে ।
আর আমি আবার বেরিয়ে পড়েছি জ্যোৎস্না ধোয়া গ্রামের ভেতর -একাদশতম গ্রহের সন্ধানে।
আর খুঁজে বেড়াচ্ছি কৃষিকাজ- শিকার — টেরাকোটা যা দিয়ে আমি অসংখ্য জামা তৈরি করব তারপর ঢুকে পড়বো স্কুলের ভেতরে আদর্শলিপি হাতে প্রাচীন মুদ্রা ..তালপাতার পুঁথি….।