যুদ্ধাগ্নি – মৌ দাশগুপ্ত

শেয়ার করুন

আমি কখনও যুদ্ধের বা
যুদ্ধবাজ মানুষদের চোখে চোখ
রাখিনি,
তবু দু হাতে মুখ ঢাকার ছলে দশ
আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে
দেখে নিয়েছি ধ্বংসের সাথে
সর্বনাশের সহবাস,
চোখের জলের সাথে আপাত
বৈরিতার অভিনব গমণদৃশ্য,
লোভ আর আর হিংসার
সর্বগ্রাসী ব্যভিচার, আর
আগ্রাসী ক্ষমতার সাথে
রাজনৈতিক আগুনের অবাধ
কামলীলা।
যুদ্ধের আগুন নিভে গেলে
স্তিমিত ভস্মের কাছে আঁজলা
পেতেছি,
নতজানু হয়ে ছুঁয়েছি
মহাশ্মশানের নীরব অভিমান,
ছুঁয়েছি চরম অসংযমে, গোপন
পাপের মত।
রণোমত্ত মুহূর্তের
স্মৃতিগুলো রমণীসুলভ
ব্রীড়তায় উড়ে গেছে,সরে গেছে,
ছড়িয়ে পড়েছে নরকাগ্নির
সাক্ষর বুকে বয়ে।
তবু যুদ্ধের কারণগুলোকে
চেনার চেষ্টাও করিনি।
যুদ্ধকে না আপন ভেবেছি, না
পর,
অন্যদের ঘরোয়া সমস্যা ভেবে
নির্লিপ্ত চোখে দেখে গেছি-
দহনের ছায়াবৃত্তে তিল-তিল
করে আগুনপাখীর ভ্রুণের বেড়ে
ওঠা,
আজ দুখবিলাসী সময়ের যুদ্ধে
আমিও অনিচ্ছুক পদাতিক,
দধিচীহাতে বজ্রাস্ত্র নিয়ে
শান্তির খোঁজে এক সংশপ্তক
সেনা,
আমার একান্ত নিজের
পৃথিবীটাই যে আজ এক আগুনের
গোলা ।

শেয়ার করুন

Similar Posts

  • অকাল বোধন – কোয়েল ভড়

    ১.যে আলোদেশে আলাপ আমাদেরতার ঠিকানা পায়নি কোনো ষড়যন্ত্রী কীট, মুদ্রিত কোনো অক্ষরেধরা পড়েনি তার অবয়ব। ২.বয়ে যাওয়া নদী বা সময়ের আখ্যানেপ্রাপ্তি লেগে থাকে ভগ্নাংশের- তবু হাওয়ায় মিশে যাওয়া সুগন্ধেরব্যবচ্ছেদ করতে পারে না কাঁটাতার। ৩.ঊ-কারের তীর ধরে আসতে থাকা প্রেমবার্ধক্যের ভরসা রেখে দেয় রঙিন রুমালে, প্রিয় রঙ্গন, এবার বসন্ত নামাওকোনো শারদীয় বিকেলে…

  • ভারতীয় মে দিবস – অমিতাভ গুপ্ত

    হে মার্কেটে  মিলিত প্রাণ    জ্বালিয়ে ধরেছে      দীপ্ত গান। জাগো শ্রমিক  জাগো কিষাণ    এই ভারতের      সব শ্মশান। পূর্ণ হোক  ফসলে আর    ধন্য হোক      শেষ অশোক। আজ কৃষকের  প্রতিবাদ আর    প্রতিজ্ঞা নিয়ে      মে দিবসের রুদ্র দীপকে জাগো ঝংকার, জাগো ঝংকার।

  • ক্ষেত্রভূমি, বধ্যভূমি – নাসির ওয়াদেন

    এ কেমন যুদ্ধ ‘পরিতোষ’? অসম আহবে তুমি কি দেশভক্তি, দেশপ্রেম দেখাতে পারনি- পাণ্ডব কারা  ? কারাই বা শত্রু কৌরবে সঙ্গ দিলো , এ কোন যুদ্ধের ছায়া কাহিনী? নক্ষত্রের দেশে , জোৎস্না মিশেল সুগন্ধি চাঁদে উঁকি দিচ্ছে তোমার আমার বপন ক্ষেত্রভূমি নিভন্ত আগুন আবার জ্বললো নিশীথ রাতে ক্ষেত্রভূমি , বধ্যভূমিতে রক্ত মেশালে তুমি  । এ যুদ্ধ…

  • মা – দেবলীনা দলুই

    মা তোমাকে  আঁকার জন্য ভাষা পাইনা আমি হাতড়ে বেড়াই, শব্দ খুঁজি কিন্তু পাইনা তোমার  হৃদয়ের অনন্ত ঝারলন্ঠনকে নাম দেওয়ার শব্দ পুড়তে দাওনি কখনও দাওনি আমায়  গলতে তোমার  ওই দুহাত দিয়ে আমার  ক্ষত যত ছিল সব নিয়েছো টেনে  নিজের বুকে ঘুম পাড়িয়ে আমায় নিজে  থেকেছো নিদ্রাহীন দিনের পর দিন তোমার চোখ, নাক, চুল বেয়ে নেমে আসা…

  • নাস্তিক ভারত – সৌম্য মালিক

    হারিয়েছি কেবল আমি বাহিরের দৃষ্টি, চোখের দৃষ্টিতে কেবল দেখেছি কিছুদূর অন্তরের দৃষ্টিতে সমাজটা হয়েছে চুর চুর। ধরেছে মিথ্যা সত্যের টুঁটি চেপে অদৃশ্য ধ্বংসলীলায় সমাজ উঠেছে কেঁপ। দাঙ্গা,হিংসা,রক্ত নিত্য পরিচয় ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী মিথ্যে গদ্যময়। কুকুরের মতো সুখ আমাদের উচ্ছিষ্ট হাড়ে যুবসমাজ ব্যস্ত আজি বিকৃত জীবন সমাচারে। ভাবাদর্শ হয়েছে নিস্তেজ,ঝরেছে শুধুই রক্ত মৌলবাদের ধর্ম প্রচার আছে…

  • চিঠি – অমিতাভ গুপ্ত

    এই নাচিকেত অগ্নিকে চেনো, কমরেড আত্মদহনে নিজেকেই করো দীর্ণ আগুনের আজ দিয়ে জেনে নাও চেতনায় কি রয়েছে আজও মলিন ও জরাজীর্ণ সকলে জানে না, অথবা ঈষৎ জানলেও মেনে নিতে গেলে হয় দ্বিধা-সংশয় নব্য ঔপনিবেশিকতার দাপটে এখন এদেশে বিত্তবাদের দাসানুদাসেরা সশস্ত্র, দুর্জয় দুঃখ দিয়েই রাঙা করে তোলো ভোর ভাঙা সেতারেই ঝংকৃত ভৈরবী প্রতিটি প্রশ্নে স্পন্দিত উত্তর…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *