টিনবাজার –  অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

টিনবাজার – অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী

লোকটা একটা ভেড়ার মালিক। ভেড়ার গায়ে পাকানো সাদা লোম। চোখের পাতাও সাদা। ভেড়ার দড়ি ধরে লোকটা টিনবাজারের খোলা নর্দমার ধারে উবু হয়ে বসে পেচ্ছাপ করে। সে উঁচু করে চেক লুঙ্গি পড়ে। গায়ে মলিন ফতুয়া। গালের সাদা দাড়ি ধীরে ধীরে পাকিয়ে উঠছে। টিনবাজার দিয়ে যাতায়াত করলেই এমন একটি লোককে সকলেরই চোখে পড়বে। কত বয়স হবে লোকটার?…

অবসাদ – তাপসকিরণ রায়

অবসাদ – তাপসকিরণ রায়

হারাতে হারাতে আর অবসাদ নেই–চেনা জানারা ক্ৰমশ হারিয়ে যাচ্ছে অন্যপ্রান্তে…  এক মুখ দাড়িতে তোমায় অচিন লাগতেই পারে !কোথায় সরে যেতে চাও তুমি ?স্টেশনের সিগনালে তাকিয়ে আছে গাড়ি।একটা সকাল যেন কতকাল দেখিনি !হারিয়ে হারিয়ে ক্ৰমশ নিজের দিকে এগিয়ে আসছি।আগামী খরার ফাটলে বৃষ্টির অবসাদ দেখি।দুরন্ত ছেলেটা কেমন দম হারিয়ে থমকে যায় !কখনও চেনা পৃথিবী হারিয়ে যায়–কুয়াশা ও…

থিমপুজো – হেমন্ত জানা

থিমপুজো – হেমন্ত জানা

এই শহরের ‘হংসমিথুন’ সর্বজনীনের এবারের থিম আদিবাসী গ্রাম। উল্টোরথে খুঁটি পুজোর দিন থেকে থিমের কাঠামো গড়া শুরু। শিল্পীর হাতের মায়ায় ধীরে ধীরে রূপ পায় পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির এক আদিবাসী গ্রাম। নকল শালতরু, খড়োচালের মেঠোঘর, তার চারধারের নানা নকশা, আদিবাসী রমণীদের নৃত্যরত মডেল, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আদিবাসী ঢঙের প্রতিমা। খুঁটি পুজোর দিন থেকেই এলাকায় পুজো-পুজো ভাব।…

কৃষ্ণচন্দ্র দে, সঙ্গীত মহীরুহ – সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় (২য় অংশ)

কৃষ্ণচন্দ্র দে, সঙ্গীত মহীরুহ – সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় (২য় অংশ)

প্রথম অংশ একইভাবে তিরিশের দশকে কীর্তন গানে তিনি ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হন ও আপামর বাংলাকে ভাসিয়ে নিয়ে যান সে প্লাবনে। বিখ্যাত কীর্তনিয়া রাধারমণ বাবুর কাছে তিনি কীর্তন গানের তালিম নেন এবং খোলে সঙ্গত করতেন নবদ্বীপ ব্রজবাসী। তাঁর এই গানের ধারা এত জনপ্রিয় হয়েছিল, যে পরের দিকে আকাশবাণীতে মাসে একদিন করে একটানা ১১ মাস ধরে তিনি…

ঠিক মনে পড়বে – নবকুমার পোদ্দার

ঠিক মনে পড়বে – নবকুমার পোদ্দার

ভুলে যেতে যেতে ঠিক মনে পড়বে আমাকে ছোট্ট পাখির মতো স্নান সেরে নতুন হয়ে উঠতে চাইবে খুঁজবে আলোপাহাড়ি রাস্তার তীব্র ঝড়ঝাপটা সামলেবাঁক নিতে নিতে মনে হবে ফিরে আসাটাই  ভালো অচেনা পথের নতুন ট্যুরিস্ট হয়ে সারা শহরের পোশাক কিনেপ্রেমিকা হয়ে উঠবে তুমি।

শঙ্খবেলা – মঈনুল হাসান

শঙ্খবেলা – মঈনুল হাসান

শস্যশূন্য খাঁ খাঁ মাঠের ভেতর থেকে ছন্দের মতো একটা আওয়াজ ওঠে ঝিকঝিক… ঝিকঝিক… পোঁওওও…। আদিম গিরগিটির মতো বুকে হেঁটে কাছের ইস্টিশনের দিকে গড়গড়িয়ে যায় বিকেল পাঁচটার শুকসারি এক্সপ্রেস। ঝিকঝিক সে আওয়াজের সাথে মিশে গিয়ে কালের দীঘলজুড়ে লেগে থাকা বিকেলের পড়ন্ত শেষ আলো ততক্ষণে নিঃশব্দে গড়িয়ে পড়ে দিগন্তে; যেখানে ফিরোজা আকাশের সাথে আধোলাল আভা মেলে ধরেছে…

বিশ্বাস আমাকে দিয়ে লেখায় – রিজিয়া রহমানের সাক্ষাৎকার

বিশ্বাস আমাকে দিয়ে লেখায় – রিজিয়া রহমানের সাক্ষাৎকার

[বাংলাদেশের কথাশিল্পের অগ্রগামী ও প্রতিনিধিত্বশীল কথাশিল্পীদের অন্যতম একজন রিজিয়া রহমান। জন্ম ১৯৩৯ সালে, কলকাতায়। প্রতিভাময়ী ও পরিশ্রমী এই কথাশিল্পীর উপন্যাস ও গল্প বিষয়-বৈচিত্র্যে অনন্য। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস থেকে আধুনিক বাংলাদেশের জন্ম-ইতিহাস, স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের বাস্তবতা, পতিতাপল্লীর নিষিদ্ধ-জীবন, চা-শ্রমিক-সাঁওতাল-হাঙর শিকারির জীবন-লড়াই, সুখ-সমৃদ্ধির তাড়নায় দেশছাড়া প্রবাসীদের অস্তিত্বের সংকট বা মনস্তাত্ত্বিক দ্বিধা এবং প্রেম বা মানবজীবনের চিরায়ত অনুভবকে তিনি…

শিল্পের খনন : লেখকের দায় –   সেলিনা হোসেন

শিল্পের খনন : লেখকের দায় – সেলিনা হোসেন

লেখকের মৌল দায়িত্ব ভালো লেখা। নিজের প্রতি সৎ থেকে নিজের অনুভবকে শক্ত মেরুদণ্ড দেওয়া লেখকের কর্তব্য।

আয়না – হারুকি মুরাকামি  – অনুবাদ অভিজিৎ মুখার্জি
|

আয়না – হারুকি মুরাকামি – অনুবাদ অভিজিৎ মুখার্জি

আয়না হারুকি মুরাকামি অনুবাদ: অভিজিৎ মুখার্জি সবার গল্পগুলোই শুনলাম একদম শুরু থেকেই, শুনেটুনে মনে হচ্ছে যে এধরনের ব্যাপারে দু’চারটে মূল ধরন আছে। একটা ধরন যেমন, একদিকে আছে জীবিতদের জগৎ, অন্যদিকে মৃতদের জগৎ, আর গল্পটা হচ্ছে একটা থেকে আরেকটায় যাতায়াতের। এগুলো ভূত বা ঐ ধরনের কিছুর ক্ষেত্রে হয়। আরেকটা টাইপ হচ্ছে এমন কিছু ঘটতে থাকা, বা…

কাঞ্চনজঙ্ঘার আলো – এণাক্ষী রায়

কাঞ্চনজঙ্ঘার আলো – এণাক্ষী রায়

অসমের ট্রেনগুলো শহরকে বাইপাস করে এদিক দিয়ে চলে যায় ঘটাং ঘটাং করে। আগে অবশ্য কুউউ করে করে যেত আকাশ পর্যন্ত লম্বা ধোঁয়া উঠিয়ে। এখন ডিজেল ইঞ্জিন। বিশুর মা এখনও সেই ট্রেনের ধোঁয়া ওঠার কিসসা বলে যায় নাতি-নাতনিদের। কুউউ টার বদলে ভোঁওও শব্দ ওঠে এখন। তবু নাতি-নাতনিদের বলেন -ওই কু ঝিক ঝিক যাবার নাগিসে দেখি যা।…