ওগো দুখজাগানিয়া – আফজল আলি
ওগো দুখজাগানিয়া ( কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুতে কবিগুরুর একটি অসম্পূর্ণ দলিল )
রাত্রির মতো ভেসে যাচ্ছে রাত
কল্পনার মুখে একচামচ সন্ধ্যা তুলে দিলাম
তুমি সেই তাকিয়ে ছিলে – তোমার চোখের থেকে মুক্তা ঝরে অনুরূপ –
ওগো দুখজাগানিয়া- তোমায় গান শোনাব
নীরবতার কাছে ঘনিষ্ঠ হয়ে যা কিছু ছিল সে সব আমার ছড়িয়ে গিয়েছে কোথায়
ছেলেবেলার সেই খেলা , কথার সঙ্গী
অভিলাষ আচরণে দাপিয়ে ওঠে মন
তবু তো ছিলে – বর্ষার ঝরো ঝরো হাওয়ায়
ক্লান্তির অনেকটা দূরে গান হয়ে ছিলে
লুকোচুরির আলো অন্ধকারে , রহস্য মনের কোণে
বউঠান ছিল জুড়ে
কেন ছিলে – আঁধার ভেঙে ভেঙে
দূরের খোপে খোপে
লাবণ্যে তোমায় ভরিয়েছিলাম
বাগানবাড়ির চিলেকোঠায়
অবধারিত মোম হয়ে ঘুমের সান্নিধ্যে
যেমন করে ধ্রুবতারা চেয়ে থাকে
যেমন করে পাপ ও ক্ষতচিহ্নের ঊর্ধ্বে উঠে চিন্তার সারসত্তে ভরসা রাখা যায়
তেমনই তো মেঘ তুমি
আমি ফাল্গুন হয়ে বাতাসে বাতাসে
শিমুলের আগুন পাখায়
চেতনার এক ঘুমজলে ভরিয়ে যাওয়ার ভ্রূণে
কেন চলে গেলে , কেন আভরণ হয়ে রইলে না এ দুয়ারে দুয়ারে
দিন তো বহে যাবে , রাত্রি রাত্রি হবে ভোর
জীবনের আড়িপাতা অরণ্যের আবিষ্ট চূড়ায়
ভ্রমণ শেষে ফিরে আসবে আবার
তবু ভরাট হবে না
মৃত্যুলেখা দিন হৃদয়ে স্তব্ধ জাগায়
সে চলে গেল বলে গেল না
“এল আঁধার ঘিরে , পাখি এল নীড়ে
তরী এল তীরে
শুধু আমার হিয়া বিরাম পায় নাকো
ওগো দুঃখ জাগানিয়া ”
সমুদ্র থেকে ফিরে আসছে ঢেউ । একলা হয়ে যাওয়ার নিঃসঙ্গতা – আরো নরম যে মন তাকেও শাসিয়ে চলেছি – হয়তো তাকেই তুমি হারিযে দিয়ে গেলে
শব্দ শব্দ শব্দ । কবিতার পাতাগুলো গান হয়ে ওঠে । বাম বুকের যন্ত্রণায় নিয়তি আগুন পোয়ায় ।
অসম্পূর্ণ আমার , আরো সরে এসো নির্জনে –
যা কিছু শেষ হবার নয় , তাই তো ডাকি আবার