ফাতিমা বাড়ি ফেরে নাই – মাহমুদ আল রিমাওই অনুবাদ: নয়ন বসু
|

ফাতিমা বাড়ি ফেরে নাই – মাহমুদ আল রিমাওই অনুবাদ: নয়ন বসু

[লেখক পরিচিতি: মাহমুদ আল রিমাওই, একজন প্রখ্যাত প্যালেস্তানীয় লেখক। বেইত রিমার পশ্চিম উপকূলে ১৯৪৮ সালে তার জন্ম। ষাটের দশকের শেষদিক থেকে বিভিন্ন আরবি সংবাদপত্রে তিনি সাংবাদিকতা করেন। ২০০৭ থেকে জর্ডনীয় সংবাদপত্র আল-রাই-এর তিনি প্রধান সম্পাদক। বিগত কয়েক দশকে তার বহু গল্প সংকলন প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে বেশ কিছু ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় অনূদিত।] প্যারিস আর…

পাইস হোটেল – উপল মুখোপাধ্যায়

পাইস হোটেল – উপল মুখোপাধ্যায়

ঠান্ডা থেকে গরমের দিকে যাওয়ার মতো খিদে পায় যখন, স্মৃতিদের থেকে মুখ ফিরিয়ে যখন বাঁচতে ইচ্ছে করে, যখন এই আজকের মতোই কালও বাঁচব বলে ভাবতে থাকি, তখন আমি পাইস হোটেলের দিকে হাঁটা দিলাম—সঙ্গে বান্টি। বান্টিকে সঙ্গে নেওয়া মানে কি স্মৃতিদের নেওয়া নয়? বহুদিন আগে ওকে বিয়ে করেছিলাম। তারপর কোনো কেলো হয়নি এমনটা নয় তবু বান্টিকে…

কেঁচো — সুধীর নাউরোইবম অনুবাদ: এল. বীরমঙ্গল সিংহ
|

কেঁচো — সুধীর নাউরোইবম অনুবাদ: এল. বীরমঙ্গল সিংহ

১ ফটক থেকে কুমার চিৎকার করে বলল, “অ বউদি কেঁচো নেবে নাকি?”কুমারের ডাক শুনে অহনবী ঘর থেকে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এল, “হ্যাঁ, দিয়ে যাও। তখন থেকে তোমারই অপেক্ষা করছি। এসো এসো।”কুমার এসে তার কেঁচো মাপার ছোট্ট কৌটোটাতে মাপার জন্য কেঁচোগুলো ঢোকাল।—বেশি বড়ো কেঁচো দেবে না, মাছে খেতে চায় না। এই সাইজের দেবে।—নাও তোমার পছন্দমতো বেছে…

অ্যালজাইমার – সুব্রত নাগ

অ্যালজাইমার – সুব্রত নাগ

‘‘এক এ চন্দ্র, দুই এ পক্ষ, তিনে?” ‘‘বে… বেদ…” ‘‘সে তো চারে। তিনে নেত্র মনে থাকে না কেন? পাঁচে পঞ্চবাণ, ছ’য়ে…?” ‘‘ঋ–… ঋতু–” ‘‘বাঃ, সাতে?” ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে অসহায় চোখ দুটো। স্মৃতির অতলে ডুব দিয়ে প্রাণপণে উত্তর ছেঁচে আনতে চেষ্টা করে। পারে না। জিজ্ঞেস করি, ‘‘ক’টা ভাওয়েল আছে?” এক সময়ের ইংরেজির দুঁদে মাস্টার জবাব…

শমন জাত –  ব্রততী চক্রবর্ত্তী

শমন জাত – ব্রততী চক্রবর্ত্তী

—ও বাজান, তুমি যে কইসিলা আমার মল জোড়াডা আনবা আইজ? কই তা? এই জামার পকেডে তো কিসু নাই। আইজও তাইলে আনো নাই, না? —স্যাকরায় না দিলে, আমি কী করুম কও? আমারে তো কইসিলো আইজি দিয়া দিব। এহন কয় যে, আরো দুইডা দিন সময় দাও ইনুজ ভাই, হয়া যাইব। পালিশ করতে দিসে আরেক জাগায়। হ্যার কাসে…

ভাঙা সংসার – শ্রীপান্থ অনুবাদ: ড. পদ্ম কুমারী চাকমা
|

ভাঙা সংসার – শ্রীপান্থ অনুবাদ: ড. পদ্ম কুমারী চাকমা

লাকড়ির বোঝাটা নামাতে না নামাতেই একজন বাঙালি ক্রেতা জিজ্ঞেস করল “কত?” শীলপুদি বলল, “দুই টাকা।” লোকটি কিছুই বলল না। লাকড়িগুলি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে ‘চাক’ করে শব্দ করে চলে গেল। শীলপুদি অবাক— তাহলে লাকড়িগুলি কি খুব খারাপ! ভাবে, এরচেয়ে আর কত ভালো লাকড়ি পাবে। দিন দিন শেষ হয়ে আসছে। লাকড়ি সংগ্রহ করতে এখন অনেক দূরের জঙ্গলে…

যুদ্ধক্ষেত্র – দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক

যুদ্ধক্ষেত্র – দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক

“মানুষের চেতনা তার সামাজিক অস্তিত্ব নির্ধারণ করে না, মানুষের সামাজিক অস্তিত্বই তার চেতনার মর্মপ্রদেশ।” আমি দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক। প্রাক্‌-গাল্পিক মুহূর্তের চিন্তাগুলোকে ঝাঁকান দিতে গেলেই খসে পড়ে যত বিপ্রতীপ ঘটনাবিন্যাস। হাঁফিয়ে ফেলি নিজেরই বৃত্তবলয়ে চতুষ্পার্শ্বকে, আবক্ষ ঢেউ নিয়ে এক-এক মুহূর্ত থেকে চলকে নেমে যাই অচেনা শরীর নুয়ে। মুহূর্ত-প্রান্তে দাঁড়াবার সকল ক্ষণিকই বিষাদখিন্ন—“সরে যাও, সরো!” বলতে বলতে শরবন…

হকারের কেরোসিন তেল – নন্দেশ্বর দৈমারী অনুবাদ: তপন মহন্ত
|

হকারের কেরোসিন তেল – নন্দেশ্বর দৈমারী অনুবাদ: তপন মহন্ত

আগে আমি একটি ডালডার কৌটো ছিলাম। সিমাং মাস্টারদের ঘর থেকে সাওখ্লী আমাকে নিয়ে এসেছিল। সাওখ্লীরা অবশ্য ডালডার স্বাদ পায়নি। মাস্টাররা ডালডাটুকু খেয়ে আমাকে লবণ রাখার পাত্র বানিয়েছিল। পরে মাস্টাদের কোনো এক পরিচারিকা আমাকে আগুনের পাশে রাখায় আমি আর লবণ রাখার পাত্র হয়ে থাকলাম না। আমার ঠাঁই হল গুদামঘরের এক কোণে।পিঠের এক দিকে আগুনের তাপ লেগে…

এক মুখ দাড়ি ও চার পোয়া গোস্ত – সৌরভ হোসেন

এক মুখ দাড়ি ও চার পোয়া গোস্ত – সৌরভ হোসেন

“কী জাব্বারভাই কেমন আছেন?” বেঁটে লোকটার ঠেস মারা কথাটা শুনে মিচকি হাসল লম্বা ঠ্যাঙঠেঙে লোকটি। সূচালো চাপ দাড়িতে একবার হাত বুলিয়ে ঠোঁট চিপে বলল, “খোদা যেমন রেখেছেন।” তারপর দুজনে দাঁত কেলিয়ে খি খি করে হেসে উঠল। বেঁটে লোকটি মুখের জর্দাটা খচমচ করে চিবিয়ে ভ্রূ টান করল, “দাড়িটা যা করেছিস না, মাইরি, ফাট্টাফাট্টি!” “ভালো করে সেঁচ-নিড়ান…

সাঁকোর উপরে কথোপকথন – মৌসুমি কন্দলি অনুবাদ: মিহির মজুমদার
|

সাঁকোর উপরে কথোপকথন – মৌসুমি কন্দলি অনুবাদ: মিহির মজুমদার

Being pregnant is like crossing a narrow bridge. People can accompany you to the bridge. They can greet you on the other side. But you walk that bridge alone. African Proverb সাঁকোতে পা দিয়েই সে ভারী ভারী অতিকায় দুটো ডানা ধপধপিয়ে ঝাপটাল। বহুদিন হল–ডানায় ঘনআঁধারের ঢেউ তুলে হার্পির নেমে আসা। বুকের ভয়াল বিশাল খাঁচায় বাসা…