যুদ্ধাগ্নি – মৌ দাশগুপ্ত

আমি কখনও যুদ্ধের বা যুদ্ধবাজ মানুষদের চোখে চোখ রাখিনি, তবু দু হাতে মুখ ঢাকার ছলে দশ আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে দেখে নিয়েছি ধ্বংসের সাথে সর্বনাশের সহবাস, চোখের জলের সাথে আপাত বৈরিতার অভিনব গমণদৃশ্য, লোভ আর আর হিংসার সর্বগ্রাসী ব্যভিচার, আর আগ্রাসী ক্ষমতার সাথে রাজনৈতিক আগুনের অবাধ কামলীলা। যুদ্ধের আগুন নিভে গেলে স্তিমিত ভস্মের কাছে আঁজলা পেতেছি,…

যুদ্ধবিরোধী কবিতা – ঋতঙ্কর দাস

যুদ্ধ, তুমি ঠিক কেন আসো? বোঝাও একটু আমায় মারামারি-দাঙ্গাদাঙ্গি এসবে কেন তোমার এত সায়? সবাই বলে মাঝেমাঝে যুদ্ধও নাকি দরকার আমি বলি চুপ করো সব যুদ্ধের বাড়বে অহংকার ভাইয়ে ভাইয়ে লড়াই বাঁধাতে জুড়ি নেই কোনো তোমার তুমিই নৃশংসতার মূর্ত প্রতীক তোমার ভয়াবহ সব কারবার তাই, দয়া করে যুদ্ধ এবার অবসর তুমি নাও শান্তির সঙ্গে হাত…

|

জীবাশ্ম – কল্পরুপ পাল

পৃথিবী চাটছে একটা ধূষর রোদ সকালের কৃষ্ণচূড়া ঝলসে মৃতপ্রায় কফিন জিরিয়ে নেয় ঘাসের ছায়ায়; ঘাসেরা বড়ই নির্বোধ! ধারাল মাঞ্জা,উড়ন্ত ঘুড়ি ছাদ নয়,আকাশ হবে ছিনতাই, হিটলারেরা নাড়াচ্ছে লাটাই তাই ধফ্ করে থেমে গেল তোমার তুবড়ি। ঝকঝকে প্রাসাদ,বিজয় উল্লাস ম্যাহেফিলে জীবন ষোলোআনা, শুধু প্রাসাদই জানে তার ইতিহাস পায়রাগুলো যে আর বসে না!

অবাক লিমেরিক – শুভ্র দত্ত

দুই প্রতিবেশী দেশে দ্বেষাদ্বেষি, রেষারেষি চলে খোলাখুলি ভূমিসীমান্তে পাহাড়প্রান্তে অবিরত চলে গোলাগুলি; দুই দেশবাসী, সুদূর বিদেশে অবাক কান্ড, তারা হেসে হেসে ভুলে দ্বেষাদ্বেষি করে মেশামেশি, রেষারেষি ছেড়ে কোলাকুলি।

জঙ্গলের মধ্যে আমার ঘর – রাজীব চক্রবর্ত্তী

জঙ্গলের মধ্যে আমার ঘর। রাতে হানা দেয় শ্বাপদেরা, লুন্ঠিত ক্ষুধান্ন, লন্ডভন্ড গৃহস্থালী। প্রতিদিন, একটু আগুন, মুষ্টিবদ্ধ হাতের আস্ফালন আর প্রত্যয়ের আঁচে মুছে যায় অমানিশার অন্ধকার। প্রতিরোধের লড়াইয়ে ক্লান্ত আমি। তবু সারাদিন কাঠঠোকরার ঠুক ঠুক, ক্লান্ত দুপুরে কোকিলের গান, বসন্তে পলাশ শিমুলে রঙের আগুন নিয়ে আসে নতুন উদ্যম। জঙ্গলের মধ্যে আমার ঘর। পলাশ শিমুল কখন যেন…

ক্ষেত্রভূমি, বধ্যভূমি – নাসির ওয়াদেন

এ কেমন যুদ্ধ ‘পরিতোষ’? অসম আহবে তুমি কি দেশভক্তি, দেশপ্রেম দেখাতে পারনি- পাণ্ডব কারা  ? কারাই বা শত্রু কৌরবে সঙ্গ দিলো , এ কোন যুদ্ধের ছায়া কাহিনী? নক্ষত্রের দেশে , জোৎস্না মিশেল সুগন্ধি চাঁদে উঁকি দিচ্ছে তোমার আমার বপন ক্ষেত্রভূমি নিভন্ত আগুন আবার জ্বললো নিশীথ রাতে ক্ষেত্রভূমি , বধ্যভূমিতে রক্ত মেশালে তুমি  । এ যুদ্ধ…

ছদ্ম বৈপ্লবিক – অহিন্দ্রিলা মুখার্জ্জী

ছদ্ম বৈপ্লবিক – অহিন্দ্রিলা মুখার্জ্জী

চতুর্দিকে চাপ চাপ রক্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে মিত্রপক্ষ নাম দিয়েছে “বিপ্লবের রক্ত”! আর শত্রুপক্ষরা নানা নামে অলংকৃত করে চলেছে। বুদ্ধিজীবীরা স্ক্রিপ্ট হাতে তৈরী ক্যামেরার সামনে বসতে। প্রশ্ন করলাম তাকে “আমাকে একটু বুঝিয়ে দেবেন, একটি দুবছরের কোমল শরীরের রক্ত বিপ্লবকে ঠিক কতখানি সাফল্য মন্ডিত করবে??” অথবা ওই রাস্তার মোড়ের চা এর দোকানের দিদিমার রক্ত কতটা এগিয়ে দেবে…

মৃত্যু-উপত্যকায় বসন্তের কবি – আশিস ভৌমিক
|

মৃত্যু-উপত্যকায় বসন্তের কবি – আশিস ভৌমিক

সিন্ধু নদের উপত্যকায় দাঁড়িয়ে হে বসন্তের কবি, তুমি কি শুনতে পাও ? কোনও মিলনোৎসবের সুর ! মরু-দেশ হতে ভেসে আসা বালুকণার শতাব্দী প্রাচীন পলির স্তরে কি খুঁজে পাবে ? কোনও মিষ্টি প্রেমের গীতি কাব্য! উর্বর মাটির গন্ধ নিয়ে তোমার কলম কি লিখবে ? কোনও চাষির ফসল তোলা নবান্নের গান । এখানে আঁধার কাটিয়ে লাল সূর্য…

কালো দিনের সনেট – অয়ন চৌধুরী

আমাদের ফ্রিজগুলো ভরে আছে বারুদে বাতাস ভরে আছে তীব্র ঝাঁঝালো সীসাগন্ধে আমাদের সমস্ত পকেট বুলেটে, পিস্তলে আর আমাদের মনের বাক্সগুলি দামি অন্ধকারে প্রতিটি রাতের চাদর ফুটো করে কে ওরা বাইকবাহিনী! ভাতের থালায় ছিটকে পড়ে জমাট জমাট রক্তকাহিনি প্রতিটি বাটিতে মাছের ঝোলের নীচে চাপ হয়ে আছে প্রতিশোধ আগুন প্রতিটি ক্ষতের মুখে কে ওরা ঠেসে দিল মুঠো…

একটা সিগনাল – ঝর্ণা মুখোপাধ্যায়

প্রাচীন মানুষটার কাছে জেনেছিলাম যুদ্ধ হাঁটছে অনমনীয় পুঁজি অমঙ্গলের দিকে সিলেবাসে ধোঁয়া-আগুন-পেশাদার রাজনীতি নেশাতুর হাওয়ায় ব্রেকিং নিউজ, খুনীদের বিচরণ অর্জুনের তীর লক্ষ্যভেদে। হাভাতে বিশ্ব, জল জমা উঠোন দুঃখের রাত পোহায় ভাঙা চোরামুখ, আপদ উদ্বাস্তু! ছপছপ পায়ের শব্দ উড়ে আসে টান টান বিবেক-বিশ্বাস-রাজপথ ভাসিয়ে অবিরাম- শব্দ ফেটে ফেটে পৃথিবী জাগায়। একটা সিগনাল – ‘যুদ্ধ নয় শান্তি…