ঋত্বিক ঘটক স্মারক বক্তৃতা এবং গ্রন্থপ্রকাশ অনুষ্ঠান
আপনপাঠ পত্রিকা এবং প্রকাশন উদ্যোগ
১৮ জুলাই ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির জীবনানন্দ সভাঘরে গত ১৮ জুলাই ২০২৪-এ আপনপাঠ পত্রিকা ও প্রকাশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল প্রথম ঋত্বিক ঘটক স্মারক বক্তৃতা। আপনপাঠ পত্রিকা এবং প্রকাশনের কর্ণধার সন্দ্বীপ নট্ট অনুষ্ঠানের সূচনায় জানালেন, বিশ্বচলচ্চিত্রে ঋত্বিক ঘটকের অবিস্মরণীয় অবদানকে মনে রেখে এই স্মারক বক্তৃতা এরপর থেকে প্রতি বছরই নির্দিষ্ট দিনে আয়োজিত হবে। প্রথম ঋত্বিক ঘটক স্মারক বক্তৃতায় বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ শিলাদিত্য সেন। তাঁর আলোচনার বিষয় ছিল: ‘মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রে সত্তর দশক’। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্রবিদ্যার অধ্যাপক মানস ঘোষ। মূল অনুষ্ঠানের শুরুতেই চলচ্চিত্র-স্রষ্টা হিসেবে ঋত্বিক ঘটকের বিশিষ্টতার কথা প্রাঞ্জল ভাষায় আলোচনা করেন তিনি। এরপর ‘ঋত্বিক-কথন’ অংশে নিজের চলচ্চিত্রজীবনে ঋত্বিক ঘটকের অবদান নিয়ে মর্মস্পর্শী আলোচনা করেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার সৌমিত্র দস্তিদার। সৃজনশীল জীবনে একক এবং প্রায়-বন্ধুহীন ঋত্বিকের ঘনিষ্ঠতম বন্ধু মৃণাল সেনের ছবিকে সত্তর দশকের প্রক্ষোভ কীভাবে আলোড়িত করেছিল, সেই নিয়ে মনোজ্ঞ আলোচনা উপহার দিলেন শিলাদিত্য সেন। সত্তর দশকের উত্তাপকে নিজের চলচ্চিত্রে ধারণ করার উদ্দেশ্যে মৃণাল কীভাবে তাঁর চলচ্চিত্রের ‘কনটেন্ট’ (বিষয়) এবং ‘ফর্ম’ (আঙ্গিক)-কে অনবরত ভাঙচুর করে চলেছিলেন, তার যথার্থ বিবরণ উঠে এল শিলাদিত্য সেনের আলোচনায়।
স্মারক বক্তৃতার পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হল সত্যজিৎ রায়ের ইতিহাসবোধ নিয়ে রচিত সৌমিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গবেষণামূলক গ্রন্থ ইতিহাসের মোহনামুহূর্ত ও সত্যজিৎ রায়। উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে বইটির আলাপ করিয়ে দিলেন বিশিষ্ট চিন্তক, প্রাবন্ধিক ও অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়। সত্যজিৎ-এর ইতিহাসবোধের বিভিন্ন প্রান্তকে ছুঁয়ে স্রষ্টার ভারতদর্শনকে কেমন করে লেখক আবিষ্কার করতে চেয়েছেন তাঁর এই গ্রন্থে, সে-কথাই বিস্তারে বললেন অধ্যাপক বিশ্বজিৎ রায়। মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানটি শেষ হল সভাপতির উপযুক্ত সমাপ্তি ভাষণে এবং আপনপাঠ পত্রিকা ও প্রকাশনের কর্ণধার সন্দ্বীপ নট্টের তরফে প্রকাশনের পক্ষ থেকে কিছু জরুরি ঘোষণার মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন: অধ্যাপক সুস্নাত দাশ, অর্ণব সাহা, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজকুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।