মহানিষ্ক্রমণের পথে  – ওমাইমা আবদুল্লা ভাষান্তর : মৃণাল শতপথী
|

মহানিষ্ক্রমণের পথে – ওমাইমা আবদুল্লা ভাষান্তর : মৃণাল শতপথী

[লেখক পরিচিতি: ওমাইমা আবদুল্লা একজন সুদানি লেখক । সিভিল ইঞ্জিনারিং নিয়ে পড়াশোনা করলেও তিনি বিভিন্ন সুদানি খবর কাগজ এবং পত্রিকায় কাজ করেছেন । এখনও অব্দি তাঁর তিনটি গল্প সংকলন এবং তিনটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে ।] যতদূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ বালুরাশি। প্রখর সূর্যালোকে বুঝিবা সেই ভূমি অলস লোকের মতো ভাসমান। আঁধার নামলে নিশ্চুপ প্রতীক্ষা তার পরের…

ভদ্ৰলোক – সুকান্ত ভট্টাচার্য
|

ভদ্ৰলোক – সুকান্ত ভট্টাচার্য

“শিয়ালদা–জোড়া-মন্দির–শিয়ালদা” তীব্র কণ্ঠে বার কয়েক চিৎকার করেই সুরেন ঘন্টি দিল ‘ঠন্‌ ঠন্‌’ করে। বাইরে এবং ভেতরে, ঝুলন্ত এবং অনন্ত যাত্রী নিয়ে বাসখানা সুরেনের ‘যা-ওঃ, ঠিক হ্যায়’ চিৎকার শুনেই অনিচ্ছুক ও অসুস্থা নারীর মতো গোঙাতে গোঙাতে অগ্রসর হল। একটানা অস্বস্তিকর আওয়াজ ছড়াতে লাগল উঁ-উঁ-উঁ-উঁ-উঁ-উঁ-উঁ। “টিকিট, বাবু, টিকিট আপনাদের”—অপরূপ কৌশলের সঙ্গে সেই নিশ্ছিদ্র ভিড়ের মধ্যে দিয়ে সুরেন…

রতন পাত্র, বলরাম বাস্কে ও পেরেস্ত্রোইকা – কুশান গুপ্ত

রতন পাত্র, বলরাম বাস্কে ও পেরেস্ত্রোইকা – কুশান গুপ্ত

১ হাসনাবাদে বিকেলের মিটিং সেরে মুড়ি চানাচুর খাওয়ার অবসরে ঠোঙায় লেখা বড় বড় ছাপা অক্ষরে পেরেস্ত্রোইকা শব্দটি পুনরায় প্রত্যক্ষ করল রতন। নিকট-অতীতে কতবার এই আশ্চর্য শব্দটি তার চোখে পড়েছে তা বলা মুশকিল, তবে আজ সকালেই পার্টি মুখপত্রে পার্টি-কমরেডের অকালে জীবনাবসানের পাশের হেডলাইনে পেরেস্ত্রোইকা শব্দটি রতন দেখেছিল। অবশ্য সেই সকালে, ‘অকালে জীবনাবসান’ থেকে তার স্মরণে অনিবার্য…

ভোঃ – দীপাঞ্জনা মণ্ডল

ভোঃ – দীপাঞ্জনা মণ্ডল

হে পাঠক, স্বাগত আপনাকে। অদ্য এই গদ্যকার আপনাকে আপনার পারিপার্শ্বিক সম্বন্ধে কিছু আলোকপ্রদান করিবে। শিরোনাম দেখিয়া হে সুশীল, এই অধম স্থির জানে, আপনার অভিজ্ঞান শকুন্তলমের কথা স্মৃতিপথে অবধারিত আসিয়া পড়িয়াছে। আপনি যেন পুনরায় শুনিতে পাইতেছেন সেই দূরাগত সাবধান বাণী, যা আশ্রমবাসীদের প্রতি উচ্চারিত হইয়াছিল, অর্থ ও অস্ত্রে ক্ষমতাবান মৃগয়াগত দুষ্মন্তের আগমন সম্পর্কে বিধিবদ্ধ সতর্কবচন হিসেবে।…

রাত যখন নেমে আসে – নাতাশা গয়ারি  অনুবাদ: তপন মহন্ত
|

রাত যখন নেমে আসে – নাতাশা গয়ারি অনুবাদ: তপন মহন্ত

[লেখক পরিচিতি: নাতাশা গয়ারির জন্ম গুয়াহাটিতে। তাঁর বাবার বদলিযোগ্য সরকারি চাকরির জন্য তাঁকে অসমের বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করতে হয়। দিল্লিতে উচ্চতর পড়াশোনা শেষ করে তিনি বেঙ্গালুরুতে চলে আসেন। একটি আইটি কোম্পানিতে পূর্ণকালীন কাজ করার পাশাপাশি, তিনি তাঁর বন্ধুদের সাথে একটি যোগশিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা করেন। বেঙ্গালুরু রাইটার্স ওয়ার্কশপের সদস্য।] বাড়িটা নির্জন লাগছিল। রাজেশ উঠোন…

বিভুঁই – মৃণাল শতপথী

বিভুঁই – মৃণাল শতপথী

হল্ট স্টেশন। বাস রাস্তা থেকে নেমে অনেকটা হেঁটে, লাল ধুলো ওড়া কাঁকুরে রাস্তা। সারাদিন ধুলো ওড়ে দু’ধারে বাঁশের বনে। গাঢ় সবুজ বাঁশপাতায় জমে লাল মিহি ধুলোর স্তর। সারারাত হিমে ধুয়ে সকালের আলোয় সদ্যস্নাত, স্নিগ্ধ হয় পাতারা। ডগা গড়িয়ে তখনও ফোঁটা ফোঁটা হিম। আবার বিকেলে ফেরার সময় পাতার গায়ে বসে থাকা মিহি ধুলো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে…

ফিটিংস – সৌগত ভট্টাচার্য

ফিটিংস – সৌগত ভট্টাচার্য

ছোট্ট পিতলের ধুনুচিটাকে ঘুরিয়ে তাকের ওপরে রাখা। গণেশ আর বিশ্বকর্মার ছবিতে সন্ধ্যাবাতি দিয়ে একটা মশা মারার কয়েল জ্বালিয়ে নিজের টুলের ওপর বসে অজয়। কাটা কাপড়ের টুকরো দিয়ে টুলের একটা গদি বানিয়ে নিয়েছে সে। টুলে বসে সেলাই মেশিনের প্যাডেলে পা রেখে একটা প্যান্ট রিফু করছিল অজয়। আজ এখনও রিন্টুর পাত্তা নেই। সূর্য ডোবার পর থেকে রিন্টুর…

গোলাপপাস আতরদান মারফতি – পাপড়ি রহমান

গোলাপপাস আতরদান মারফতি – পাপড়ি রহমান

নিউ মার্কেটের ২নং গেট দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে ছোটো সওদাগর খাকি প্যান্টের পাছায় বার কয়েক হাত ঘষে। তার এই হাত ঘষাঘষি পকেটমারদের রুজি-রোজগারে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। বরং বলা চলে পাছায় হাত ঘষে সে নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হতে চায়। টাকা যদি জীবনের সবকিছু হয় তাহলে মানিব্যাগটা ছোটো সওদাগরের অস্তিত্ব। কিছুণ পর পর এই অস্তিত্বে হাত…

যত্ন – শুভ্র মৈত্র

যত্ন – শুভ্র মৈত্র

একটা শান্ত নিরিবিলিমুখ। আর সেটা নিয়েই কথা বলে মানুষটি। মুখের চামড়ায় যতগুলি ভাঁজ আছে, তার সংখ্যাও বাড়ে না। যেন বারের পুজোর পাঁচালি পড়ছে। ওই মুখেই বলে যায়, রাধানগরের যদুমাধবের ঘরে আর কিছু না থাকলেও যত্ন আছে। এই যেমন পুকুরে ডুব দিতে যাওয়ার আগে তেলচিটে গামছাটা হাতের কাছেই পায়, সদাই হাটে বোষ্টুমীর কাছ থেকে নিয়ে আসা…

দুষ্ট ডাইনির ছেলে – ইস্থার দৈমারী  অনুবাদ : তপন মহন্ত
|

দুষ্ট ডাইনির ছেলে – ইস্থার দৈমারী অনুবাদ : তপন মহন্ত

সেদিন সকালে রুদ্র লাগামহীন খুশিতে দুলছিল। শনিবার সবসময় ওর কাছে একটি ভালো দিন। সেদিন স্কুল দেরিতে শুরু হয় আর খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। স্কুল ছুটির পরের সময়টুকুর জন্য ওর অনেক পরিকল্পনা থাকে। প্রথমে সে আয়েশ করে লাঞ্চ সারবে। তারপর বন্ধুদের সাথে নদীতে সাঁতার কাটবে। পরে বাবলুর বাড়িতে যাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত টিভিতে কার্টুন শো দেখতে।…