অক্ষর শপথ এবং আত্মস্থ জানালা – সুজিত মণ্ডল
|

অক্ষর শপথ এবং আত্মস্থ জানালা – সুজিত মণ্ডল

লিখতে লিখতে ফুরিয়ে যাচ্ছে অবেলা মা-ভাষায় ডাক দিচ্ছে কেউ আমি জবাব কুড়িয়ে তোমাকে নিচ্ছি একুশ… এই ভাষা-সংসার আমার মুক্তির ঋণ ঋণের শপথে লিখে দিই পলাশ পাখির গান ভাষা সোহাগে তোমাকেও বাসি ভালো প্রিয় নদী এখন আত্মস্থ জানালায় শিস দেয় অক্ষর চাবুক সংসার শুধু ঝরিয়ে যায় পাতা একুশের মতো দুঃখ এবং গৌরবে এবার তুমিও দীর্ঘগামী হও…

সুবর্ণ ঘুমাও – বাসুদেব মণ্ডল
|

সুবর্ণ ঘুমাও – বাসুদেব মণ্ডল

ঘুমাও প্রিয় মেঘ অ, আ আমি তোমার ব্যথার পাশে বসে আছি দেখো। মণিপুরী নৃত্যের মতো আমার মন-ময়ূরটা মেঘের কিনারে নেচে যাচ্ছে, সুবর্ণ ভাবনাগুলো তোমাকে ঘিরে নেচে ওঠে ঘুঙুরের মতো সুবর্ণ; তুমি আমার হৃৎপিণ্ডের বারান্দা জুড়ে বসে আছ। কেয়ারি ফুলের ডালা হাতে ঘুমাও সুবর্ণ ক, খ আমি পাশে ব’সে বেহালায় বো বোলাচ্ছি!

একুশে – অনিন্দিতা মিত্র
|

একুশে – অনিন্দিতা মিত্র

মাতৃজঠরের মধ্যে গুনগুনিয়ে ওঠে বাউলের একতারার সুর,হাজার হাজার নক্ষত্রের নীল সোহাগ এসে মিশে যায় স্বপ্নভেজা শহিদ মিনারে । পরিযায়ী পাখিরা মেখে নেয় পৌষের ধুপছায়া বিকেলের রোদের নির্যাস,কোপাই নদীর অসমাপ্ত বাঁকে ঘুরে মরে প্রেম ।শিশির হাওয়ার চুম্বনে লেপ্টে থাকা আলোর নুপূরে শুনি মহাকালের পদধ্বনি । মনের জটাজাল ভেদ করে বয়ে চলে অভিমানের চোরাস্রোত, ভাবনার চিরকুটে লিখতে…

গৌরব চক্রবর্তীর কবিতা
|

গৌরব চক্রবর্তীর কবিতা

গৌরব চক্রবর্তী ১৭-০২-২০১৯ আমার নিজস্ব ভাষা আসলে বেদনা এ ভাষায় আমি বেশ কেঁদে নিতে পারি এই ভাষাতেই রোজ গুলি খাই, মরি মৃত্যুর পবিত্র ভাগ কাউকে দেব না প্রকাশ্য শব্দে তো নয় পরোক্ষ অক্ষরে নিতান্ত অপ্রেমে নয় নিয়তি তাড়িত তবুও কাঙাল– এই ভাষাতেই প্রীত ভাষাকে চুম্বন করি ওষ্ঠে ও অধরে রাজপথ দিয়ে হেঁটে যেই ভাষা যায়…

সুভাষিনী – পিনাকী
|

সুভাষিনী – পিনাকী

সুভাষিনী, তোমাদের দেশে একেবারে মাটির গভীরে প্রবেশ করার মতন কোনো মাতৃভাষা নেই? চারপাশে এত এত শব্দের সমাহার- লক্ষ লক্ষ মানুষ কোটি কোটি শব্দ খরচ করছে, অথচ ভাষাকে যাপন করছে না। সুভাষিনী, তোমাদের দেশে এক্কেবারে নিরক্ষর মায়ের মতন করে বলার কোনো মাতৃভাষা নেই? ভাষা থেকে ভাষান্তরে চলেছে সকলে অক্লেশে, অবলীলায়,অসম্ভব তৎপরতায়, অথচ ভাষার শিকড় জানে না।…

নবীর আগমনবার্তা – কাজী জহিরুল ইসলাম
|

নবীর আগমনবার্তা – কাজী জহিরুল ইসলাম

দূরত্বের চিৎকার শুনেছিলো ক্রাচের কিশোর তখনি অন্ধকারের সাহস দুপায়ে বেঁধে নেয় সূর্য লাল হয় চন্দ্র গোল হয় বালুর নিচ থেকে উঠে আসে উটপাখিদের ডিম, ডানা ঝাপটায় নিস্ফলা পৃথিবীতে আলো-প্রান্তরের রেখার ওপর দাঁড়িয়ে শেখায় মরুদৌড় হতাশ উটপাখিদের। গাধার কাফেলাকে বলে, মশক খুলে চুমুক দাও মনিবের রক্তে, কেননা এই অরণ্য শুধু স্টালিওনের নয়। সন্ধ্যাকে থামিয়ে দেয় সমুদ্রের…

গর্বিত বাঙালি – অলোকা

গর্বিত বাঙালি – অলোকা

বাড়িতে ফিরেই একটা দ্বন্দ্ব যুদ্ধ বেঁধে গেল। পরমা এমনিতে খুব একটা কথা বলে না। শান্তিতে থাকতেই ভালোবাসে। কিন্তু, অহেতুক অশান্তি একদম ভালো লাগে না। রান্নার লোককে ঝাল ছাড়া তরকারীটা করতে বলা হয়েছিল। ছেলেটা খেতেই পারছে না। আর শাশুড়ি মা, যত বয়স হচ্ছে কথাবার্তা খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে যাচ্ছে। সারাজীবন ঝাল ঝোল খেয়ে এখন উনি নিজে…

সার্কাস – সৌগত দত্ত

সার্কাস – সৌগত দত্ত

১ম দৃশ্য- (স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে এল ছেলে, বাবা চেয়ারে বসে পত্রিকায় মনোনিবেশ করে আছেন। ছেলে ব্যাগ কাঁধ থেকে নামিয়ে ছুঁড়ে ফেলে) ছেলে- ড্যাড, ইউ নো কাল কি? বাবা – তোকে বলেছি আমায় ওই বিলাতী কায়দায় ড্যাড বলবি না। ছেলে- হোয়াটএভার, কাল ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাংগুয়েজ ডে, স্কুলে সেলিব্রেশন হবে। বাবা- তা বেশ, কিছু করবি কাল?…

সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

বাইবেলে কথিত আছে একসময় সারা পৃথিবী জুড়েই একটি মাত্র ভাষাই ছিল। মানুষ একে অপরের মনের ভাব বুঝতে পারতো সহজেই। ফলে তারা ঠিক করে বৃহত্তর মানব সমাজ তৈরী করবে। একটি নগরের পরিকল্পনা করে যেখানে একসাথে থাকতে পারবে তারা। এই ইচ্ছেতে ভিৎ গাঁথলো। ছড়িয়েছিটিয়ে না থেকে সমবেত বাসস্হানের জন্য নগর আর দূর্গ বানাতে শুরু করলো। কিন্তু ঈশ্বরের…

সমার্থক শব্দকোষ – অনির্বাণ ভট্টাচার্য

সমার্থক শব্দকোষ – অনির্বাণ ভট্টাচার্য

বাংলাভাষার দেয়াল। কয়েকদিন পরপর খোলনলচে পাল্টে যায়। কী ভাষায় প্রথম কথা বলেছিলাম? কিছু কি বলেছিলাম? কোনও স্মৃতি থাকলে ভাল হত। অন্ধকার ঘরের ভেতর আরেকটা অন্ধকার ঘর। শূন্যতা। গর্ভ। জীবন। জ্যোতি বসুর বাংলায় লোডশেডিং। আমাদের মফস্বলে বুকে হেঁটে শুয়ে থাকা একের পর এক রোয়াকের শ্বাস নেওয়া। শীতঘুম না। বড় বেশিই জ্যান্ত। আমার বাংলা ভাষায় সেই রোয়াকের…